আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ অগাস্ট, ২০২২ ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ২৪৯ বার
রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে সরকার। এক দিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, অপর দিকে চলমান পরিস্থিতিতে সাশ্রয়ীমূল্যে জ্বালানি তেল প্রাপ্তি দু’টিকেই সরকার সমান গুরুত্বের সাথে দেখছে। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সরাসরি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করলে সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা ক্ষুব্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনি পরিস্থিতিতে রাশিয়া থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল আমদানি না করে ভারতের মাধ্যমে আমদানির সম্ভাব্যতা নিয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেনের কারণে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়া ও ডলার সঙ্কটের কারণে জ্বালানি তেল আমদানি কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এর ফলে ডিজেলচালিত সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছিল, এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে। কিন্তু সারা দেশে এলাকাভেদে ৪ থেকে ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী একাধিক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আগামী অক্টোবরের আগে উন্নতি হবে না। এজন্য সবাইকে ধৈর্য ধরতে তিনি অনুরোধ করেছেন।
এ দিকে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভর্তুকি কমাতে ইতোমধ্যে জ্বালানি তেল প্রকারভেদে ৪৮ শতাংশ থেকে ৫১ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছে। এখন বলা হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলে দেশের বাজারে কমানো হবে। যদিও ইতোমধ্যে জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমতে শুরু করেছে।
দেশের জ্বালানি খাতের এমন এক পরিস্থিতিতে অনেকটা সাশ্রয়ীমূল্যে জ্বালানি তেল বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে মস্কোভিত্তিক কোম্পানি রুসনেফট। সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কাছে প্রতি ব্যারেল পেট্রোলিয়াম জ্বালানি ৫৯ ডলারে বিক্রি করতে প্রস্তাব করেছে। যেখানে বর্তমান বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলারের বেশি।
দেশের জন্য এই মুহূর্তে সাশ্রয়ীমূল্যের জ্বালানি অতি প্রয়োজন। কিন্তু পেছনে বাধা হিসেবে দেখা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাখোশ হওয়ার সম্ভাবনা। জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধের জড়ানোর পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা রাশিয়ার ওপর একের পর এক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ অবস্থায় কোনো দেশ সরাসরি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করলে তার ওপরও একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হতে পারে। এ কারণেই তেল আমদানির বিষয়ে যেকোনো পদক্ষেপ কেবল একটি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে না। এটা নির্ভর করছে পুরো কেবিনেটের সিদ্ধান্তের ওপর। এ কারণেই নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে বিকল্প কোনো পথে রুশ তেল আমদানির সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।