আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২ অক্টোবর, ২০২২ ১১:২৭ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ২৪৫ বার
ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল দখল করার পর রুশ বাহিনী একটি অঞ্চল ছেড়ে দিয়েছে।
শনিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, দোনেৎস্কের লাইমান শহর থেকে রুশ সেনাদের চলে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার শহরটিতে ইউক্রেনের পতাকা উড়ানো হয়েছে। এদিকে, ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছেন চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ। খবর এএফপি ও আলজাজিরার।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, লাইমানে অবস্থিত রুশ সেনাদের যেন ইউক্রেনের সেনারা ‘ঘিরে ফেলতে না’ পারে সেজন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে মিত্র সেনাদেরও লাইমান থেকে সরিয়ে আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে লাইমান শহরটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল ইউক্রেনের সেনারা। তখন থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল রুশ সেনাদের হাতছাড়া হয়ে যাবে শহরটি। শনিবার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, শহরের প্রবেশপথে ইউক্রেনের সেনারা দেশটির নীল-হলুদ রাষ্ট্রীয় পতাকা উত্তোলন করছেন।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী এখনও লাইমানের পুনর্দখল নিশ্চিত করেনি। এর আগে রাশিয়া অধিকৃত লাইমান শহর ইউক্রেন সেনারা ঘিরে ফেলেছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বাহিনীর মুখপাত্র শেরহি চেরেভাতি। একইসঙ্গে বিভিন্ন স্থাপনা পুনর্দখল করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ইউক্রেনের টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সর্বশেষ তথ্যমতে, লাইমানে পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার রুশ সেনা ছিল। কিন্তু সর্বশেষ সম্মিলিত আক্রমণে অনেক রাশিয়ান সৈন্য মারা যাওয়া বা আহত হওয়ায় এ সংখ্যা অনেক কমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, রুশ সেনাদের পালানোর সব ধরনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। তিনি দাবি করেন, লাইমান শহরটি দখলে নিতে পারলে ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়া অধিকৃত ক্রেমিনা ও সেভেরোদেনেৎস্ক শহরের দিকে অগ্রসর হতে পারবে।
মনস্তাত্ত্বিকভাবে এ শহরটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন শেরহি চেরেভাতি। ইউক্রেনের সেনারা ঠিক পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। যদিও এখনও সামরিক অভিযান শেষ হয়নি। ওই কর্মকর্তা দাবি করেন, রাশিয়ার সেনারা তাদের ঊর্ধ্বতনদের কাছে শহরটি ত্যাগের অনুমতি চেয়েছে।
কিন্তু তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। লুহানস্কের আঞ্চলিক প্রধান শেরহি হাইদাই বলেছেন, রুশ সেনাদের সামনে এখন দুটি পথ খোলা আছে। হয় পালানোর চেষ্টা করা অথবা আত্মসমর্পণ করা। শেরহি হাইদাই দাবি করেন, গোলাবারুদ সরবরাহসহ লাইমানে যাওয়ার সব রুট এখন বন্ধ। যদিও নিরপেক্ষভাবে এ দাবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে শুক্রবার রাশিয়া অধিকৃত দোনেৎস্কের নেতা ডেনিস পুশিলিন বলেন, লাইমান শহরকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়েছে। গত মে মাসের শেষদিকে দোনেৎস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহর লাইমান দখলের পর রুশ সেনারা শহরটিকে তাদের লজিস্টিক সাপোর্ট ও অস্ত্র সরবরাহের প্রধান কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলে। শুধু তাই নয়, লাইমান শহরটি দোনেৎস্ক, লুহানস্ক ও খারকিভ অঞ্চলের রেল যোগাযোগের জন্যও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুরোধ কাদিরভের : এদিকে, ইউক্রেনে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছেন চেচেন নেতা রমজান কাদিরভ।
তিনি বলেন, ইউক্রেনের ওপর ‘লো ইয়েল্ড’ পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি রাশিয়ার বিবেচনা করা উচিত। যুদ্ধক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে রুশ সেনারা পরাস্ত হওয়ার পর এমন আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়া রুশ কমান্ডারদের তিনি কড়া সমালোচনা করেন। শনিবার টেলিগ্রামে চেচেন নেতা কাদিরভ লিখেছেন, আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো, যেন আরও কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
সীমান্ত এলাকায় মার্শাল ল জারি করা এবং লো ইয়েল্ড পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।