স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৯:২২ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৩৪ বার
ক্যারিয়ারে একটাই আক্ষেপ লিওনেল মেসির। বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফিটা ছুঁয়ে দেখা হয়নি। তাই এবার কাতার বিশ্বকাপ শুরুর আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন এটাই তার ক্যারিয়ারের শেষ বিশ্বকাপ। মরুর বুকে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হারে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কায় ছিল আলবিসেলেস্তেরা। কিন্তু দলকে একা হাতে টেনে নিয়ে গেলেন বিশ্বকাপের ফাইনালের মঞ্চে।
যেখানে প্রথম সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ৩-০ গোলের ব্যবধানে বিদায় করে স্বপ্নের ফাইনালে উঠে গেল আর্জেন্টিনা। যেখানে ৩৬ বছর পর আবারও বিশ্বকাপ জয়ের দ্বাড়প্রান্তে নিয়ে গেলেন মেসি নিজেই। তার এক গোল ও এক অ্যাসিস্টের সঙ্গে জুলিয়ান আলভারেজের জোড়া গোলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের টিকিট পেল লিওনেল স্কালোনির দল।
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে অ্যানহেল ডি মারিয়াকে ছাড়াই মাঠে নামে আর্জেন্টিনা। এছাড়াও শুরুর একাদশের দুই খেলোয়াড় কার্ডজনিত কারণে এই ম্যাচে খেলতে পারেননি। তাই ফর্মেশনে পরিবর্তন আনায় খুব একটা পরীক্ষার মধ্যে পড়তে হয়নি আর্জেন্টিনাকে।
ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিট দুই দলই দেখেশুনে শুরু করে মাঝমাঠে সমানতালে লড়াই করে। তবে কেউই কোনো গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। তবে ৩৩তম মিনিটে মাঝমাঠ থেকে মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজের দারুণ এক পাসে ক্রোয়েট ডি-বক্সের ভেতর বল পান আলভারেজ। কিন্তু সেই বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে তাকে ফাউল করে বসেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। ফলে তাকে রেফারি হলুদ কার্ডের সঙ্গে আর্জেন্টিনার পক্ষে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন।
৩৩ মিনিটে পেনাল্টিতে স্পট কিকের শট নেন লিওনেল মেসি। তার বুলেট গতির শটে বল সহজেই জালে জড়িয়ে গেলে ১-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। চলতি বিশ্বকাপে এটি ৫ম ও সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে ১১তম গোল করলেন মেসি। ফলে আর্জেন্টিনার জার্সিতে বিশ্বকাপে গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার ১০ গোলের রেকর্ড ভেঙে দেন তিনি। তবে এই গোলের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও গোলের দেখা পেয়ে যায় আলবিসেলেস্তেরা।
এবার গোল করেন স্ট্রাইকার আলভারেজ। ৩৯ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে মেসির পাস পেয়ে দুর্দান্ত গতিতে ক্রোয়েশিয়ার ডি-বক্সের ভেতর ঢুকে যান তিনি। এরপর ক্রোয়েশিয়ার দুই ডিফেন্ডারকে টপকে বল নিয়ে গোলবারে লিভাকোভিচকে সহজেই পরাস্ত করে ব্যবধান ২-০ করেন ম্যানচেস্টার সিটির এই স্ট্রাইকার। ফলে প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
বিরতি থেকে ফিরে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে ক্রোয়েশিয়া। তবে এদিন আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগ ও মাঝমাঠের খেলোয়াড়রা প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগ দেননি। ফলে ব্যবধান কমানোর চেয়ে উল্টো আরেক গোল হজম করে বসে ক্রোয়েশিয়া।
ম্যাচের ৬৯ মিনিটে দারুণভাবে মাঝমাঠ থেকে একা বল নিয়ে ডি-বক্সের ভেতরে আলভারেজকে পাস দেন মেসি। এই স্ট্রাইকার দারুণ ফিনিশিংয়ে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। কাতার বিশ্বকাপে এটি আলভারেজের ৪র্থ গোল। আর মেসির ৮ম এসিস্ট।
৩ গোলে পিছিয়ে থেকে গোল শোধের চেষ্টা করে ক্রোয়েশিয়া। ৭৬ মিনিটে পেরেসিচের দূরপাল্লার দারুণ শট সেভ করেন এমি মার্টিনেজ। ৭৮ নিনিটে আবারো ওরসিচের শট চলে যায় গোলবারের উপর দিয়ে।
৮৪ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পেলে দ্রুত কিক নিয়ে বল ডি বক্সের ভেতরে পান ম্যাকএলিস্টার। তার ডান পায়ের শট বাম গোল বারের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। শেষ দিকে ক্রোয়েটরা চেষ্টা করলেও সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। ফলে ৩-০ গোলের জয়ে আবারো বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনা।