আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর, ২০২২ ১২:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩৭১ বার
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা সংকট এবং এর টেকসই সমাধানের ওপর গুরুত্ব দিয়ে ‘মিয়ানমারের পরিস্থিতি’ নিয়ে প্রথমবারের মতো প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (২১ ডিসেম্বর) মিয়ানমারের বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জরুরি অবস্থা, বন্দি মুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। রেজুল্যুশনটির ওপর ভোট আহ্বান করা হলে তা ১২-০ ভোটে অনুমোদিত হয়।
মিয়ানমারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, দেশটির গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ক্রমাগত অবনতি এবং রাজনৈতিক নেতাদের নির্বিচারে আটকের বিষয়টি উল্লেখ করে রেজুল্যুশনে সহিংসতা বন্ধ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক সংলাপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমার পরিস্থিতির যুক্তরাজ্য প্রস্তাব পেশ করলে ১২-০ ভোটে গৃহীত হয়।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের তথ্যমতে, নিরাপত্তা পরিষদের কোনো সদস্যই এ রেজুল্যুশনের বিরুদ্ধে ভোট বা ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার না করলেও চীন, রাশিয়া ও ভারত ভোটদানে বিরত থাকে।
রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্বসহ বহুমুখী বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে এই রেজুল্যুশন মিয়ানমারে চলমান সংকট সমাধানে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পরিষদের দৃঢ় সংকল্পের একটি দৃশ্যমান পদক্ষেপ।
এই রেজুল্যুশন নতুন করে রোহিঙ্গা সংকটের দিকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণ করবে।
২০১৭ সালে বাংলাদেশে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশের অস্থায়ী আশ্রয় শিবির থেকে তাদের স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।
বর্তমানে মানবিক বিবেচনায় ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে বাংলাদেশ।
রেজুল্যুশনে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করা হয়েছে। এতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবর্তন এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তায় মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাবকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
রেজুল্যুশনে রাখাইন রাজ্যে সংকটের মূল কারণগুলোকে মোকাবিলা করার এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেয় জাতিসংঘ।
রেজুল্যুশনটি মিয়ানমারের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে নিয়মিত আলোচনার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে। এটি রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য বাংলাদেশের চলমান প্রচেষ্টাকেও শক্তিশালী করবে।
রেজুল্যুশন নিয়ে আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন।
নিরাপত্তা পরিষদের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলো রেজুল্যুশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত।
এই রেজুল্যুশন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বহুপাক্ষিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের সাফল্যের মাইলফলক বলে মনে করা হচ্ছে।