ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ১০৪৬ বার
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে “গিকী সলিউশন লার্নাথন” আয়োজিত শিল্প সফটওয়্যার তৈরির প্রতিযোগিতায় সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তিন তরুণ প্রযুক্তিবিদ চ্যাস্পিয়ন হয়েছে। বিজয়ী এবং অংশগ্রহনকারী প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, এই প্রতিযোগিতা এবং প্রশিক্ষণ তরুণ প্রযুক্তিবিদদের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক ট্যাক্স নিয়ে কাজ করা সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অরবিট্যাক্সের সৌজন্যে দেশের খ্যাতনামা নয়টি সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সংগঠন ” গিকী সলিউশন লার্নাথন” এই প্রশিক্ষণ এবং প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মহাখালীতে রাওয়া কমপ্লেক্সে অবস্থিত ‘‘অরবিট্যাক্স ” এর কার্যালয়ে আয়োজিত বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহম্মেদ। এসময় বি.ডি.জবসের সিইও ফাহিম মাশরুরসহ দেশের বিশিষ্ট্য প্রযুক্তিবিদগন উপস্থিত ছিলেন।
বিজয়ী সাঈদ শিবলী মাহমুদ এবং মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটার সাইন্সের শেষ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী জানান, গিকী সলিউশন তাদের চার মাসের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন এবং এরপর একটি শিল্প সফটওয়্যার নির্মাণ করতে দিয়েছেন। তারা টুইটারের মত একটি নতুন সফটওয়্যার নির্মাণ করেছেন। যেটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারপোযোগী। এটি করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন।
শিবলী বলেন, ‘কম্পিউটার সাইন্সে স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর তাদের দক্ষতা এবং প্রায়োগিক শিক্ষার সুযোগ তেমন নেই। সেখানে এই উদ্যেগটি নতুন এবং তরুণদের জন্য একটি বিশাল সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।’
এই প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ১৬৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক’শ তরুণ প্রযুক্তিবিদদের মধ্য থেকে ২৫টি দলকে নির্বাচিত করা হয়েছে। সবশেষে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ হয়েছেন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা এবং দ্বিতীয় রানার আপ হয় সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
আয়োজকরা জানান, দেশে প্রতি বছর ২০ হাজার প্রযুক্তিবিদ বের হচ্ছেন। এই হিসেবে গত পাাঁচ বছরে লক্ষাধিক প্রযুক্তিবিদ তৈরি হয়েছে। কিন্তু এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অদক্ষ। দেশে এবং দেশের বাইরে বর্তমানে কয়েক মিলিয়ন দক্ষ প্রযুক্তিবিদ প্রয়োজন।
এজন্য এই উদ্যেগটির লক্ষ্য হচ্ছে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং দক্ষ প্রযুক্তিবিদ তৈরি করা। এই লক্ষ্যে অরবিট্যাক্সে ব্যাবস্থাপনা পরিচালক হাসান শাহারিয়ার মাসুদ, ক্রাফসমেনের মাহমুদুল হক আজাদ, ইনোসিসের মো. আশরাফ উদ্দিন, কনার মনোয়ার হোসেন তানজিল, ইনুমেন্টের মনজুরুল আলম মামুন,ব্রেইন স্টেশনের রাইসুল কবির ভিবা সফটের শফিউল হাসান তারেক এবং কনার পরিচালক তপু নেওয়াজসহ দেশের নয়টি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান মিলে ‘‘গিকী” গড়ে তুলেছেন। অরবিট্যাক্সের হাসান শাহারিয়ার মাসুদ জানান, এবার সারা দেশের একশত উনসত্তরটি বিশ্ববদ্যালয়ের মধ্য থেকে প্রাথমিক বাছাই শেষে ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স
এবং তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ২৫টি দলকে চ’ড়ান্ত পর্বে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত করা হয়। এই ২৫টি দলকে শিল্প সফটওয়্যার বানানোর জন্য এবং দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চার মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেক দলকে টুইটারের মত একটি সফটওয়্যার এপ্লিকেশন বানাতে দেওয়া হয়। প্রতিটি দল দুই মাসের প্রচেষ্টায় এই সফটওয়্যার এপ্লিকেশন তৈরি করে জমা দেয় এবং এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
বিশিষ্ট প্রযুক্তিবিদগনদের একটি প্যানেল এই এপ্লিকেশন মূল্যায়ন করেন এবং তাদের মূল্যায়নে সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রথম বারেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়।
চ্যাম্পিয়ন দল সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বিজয়ীদের হাতে এক লক্ষ টাকার চেক দেওয়া হয় এবং বিজয়ীদের অরবিট্যাক্সের চাকরি দেওয়া হয়েছে। অরবিট্যাক্সের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক জানান,এই নতুন বছরের শুরুতেই তারা তাদের প্রতিষ্ঠানে যোগদান করবেন।
তিনি বলেন,আগামীতে আরও অধিক সংখ্যাক তরুণ প্রযুক্তিবিদকে এই প্রক্রিয়ায় সুযোগ দেওয়া হবে।