স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ৯ জানুয়ারী, ২০২৩ ১৮:০১ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩৯৪ বার
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) নবম আসরে হ্যাট্টিক জয়ের স্বাদ পেয়েছে মাশরাফি-মুশফিকের সিলেট স্ট্রাইকার্স। তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটিং নৈপুন্যে আজ নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে সিলেট ৫ উইকেটে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। এর মাধ্যমে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে পরাজিত হলো কুমিল্লা।
জাকের আলির অনবদ্য হাফ-সেঞ্চুরিতে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৯ রান করে কুমিল্লা। জাকের ৫৭ রান করেন। জবাবে ১৪ বল বাকী রেখে জয় নিশ্চিত করে সিলেট। হৃদয় ৩৭ বলে ৫৬ রান করেন।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
ব্যাট হাতে শুরুটা বেশ ভালই করেন কুমিল্লার ওপেনার লিটন দাস। তবে সেটা বেশীক্ষণ স্থায়ী হয়নি। সিলেটের পেসার শ্রীলংকার থিসারা পেরেরার করা প্রথম ওভারের প্রথম ও তৃতীয় বলে বাউন্ডারি মারেন লিটন। চতুর্থ বলে পাকিস্তানের মোহাম্মদ হারিসকে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ৮ রান করা লিটন। পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেন তিন নম্বরে নামা সৈকত আলি। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মাশরাফির শেষ তিন বলে তিনটি বাউন্ডারি মারেন সৈকত।
পাকিস্তানের স্পিনার ইমাদ ওয়াসিমের করা পরের ওভারে দারুন এক ডেলিভারিতে বোল্ড আউট হন ৪টি চারে ১২ বলে ২০ রান করা সৈকত।
এরপর উইকেটে এসে দ্রুতই ফিরেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ আমিরের বলে কভার দিয়ে মারতে গিয়ে আকবর আলিকে ক্যাচ দেন ২ রান করা ইমরুল। ২ পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৭ রান পায় কুমিল্লা।
চতুর্থ উইকেটে জাকের আলিকে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন ওপেনার ইংল্যান্ডের ডেভিড মালান। দ্রুত রান তোলায় মনোযোগি ছিলেন জাকের। দেখেশুনে খেলছিলেন মালান। দু’জনের গড়া হাফ-সেঞ্চুরি জুটিতে শতরানের দিকেই যাচ্ছিলো কুমিল্লার দলীয় স্কোর।
কিন্তু দলীয় ৯৯ রানে মালান-জাকেরের জুটি ভাঙ্গেন পেরেরা। ৩৯ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ৩৭ রান করা মালানকে শিকার করেন পেরেরা। জাকের-মালান ৪৯ বলে ৫৩ রান যোগ করেন মালান।
ছয় নম্বরে নামা মোসাদ্দেক হোসেন ৫ রান করে আমিরের দ্বিতীয় শিকার হন।
১৮তম ওভারের প্রথম বলে টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন জাকের। এজন্য ৩৫ বল খেলেছেন তিনি। শেষ ওভারের প্রথম বলে আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবিকে বোল্ড করে ম্যাচে প্রথম উইকেটের দেখা পান মাশরাফি। ৮ রান করেন নবি।
একই ওভারের পঞ্চম বলে ছক্কা মারেন ক্রিজে নতুন ব্যাটার আবু হায়দার। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৯ রানের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৩ বলে ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন জাকের। ৪ বলে অপরাজিত ৭ রান করেন হায়দার।
সিলেটের পেরেরা-আমির ২টি করে এবং মাশরাফি-ওয়াসিম ১টি করে উইকেট নেন।
১৫০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট হারায় সিলেট। কুমিল্লার পেসার হায়দারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারার পরের ডেলিভারিতে আউট হন ৩ বলে ৬ রান করা হারিস।
দ্বিতীয় উইকেটে আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর সাথে পাওয়ার প্লেতে মারমুখী মেজাজে রান তোলেন তিন নম্বরে নামা তৌহিদ হৃদয়। ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৫২ রান পায় সিলেট।
সপ্তম ওভারে শান্ত-হৃদয়ের জুটি ভাঙ্গেন পাকিস্তানের স্পিনার খুশদিল শাহ। ইমরুলকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১ বলে ১৯ রান করা শান্ত। দ্বিতীয় উইকেটে ৩১ বলে ৪৩ রান যোগ করেন শান্ত-হৃদয় জুটি।
শান্তর বিদায়ের পর হৃদয়কে নিয়ে দলের রানের চাকা ঘুড়িয়েছেন জাকির হাসান। এ ম্যাচেও মারমুখী মেজাজে শুরু করেন জাকির। শুরুতে ২টি ছক্কা ও ১টি চার মারেন তিনি। তবে নবির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ১০ বলে ২০ রান করেই থামেন জাকির।
এরপর চতুর্থ উইকেটে মুুশফিকুর রহিমের সাথে ২৯ বলে ৪২ রান তুলেন হৃদয়। এই জুটি গড়ার পথে টানা দ্বিতীয হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন হৃদয়। ৩৫ বলে টি-টোয়েন্টিতে পঞ্চম অর্ধশতক করেন হৃদয়।
দলের জয়ের পথ সহজ করে ১৫তম ওভারে খুশদিলের তৃতীয় বলে আউট হওয়ার আগে ৫৬ রান করেন হৃদয়। ৩৭ বলের ইনিংসে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন তিনি।
ম্যাচ জিততে ৩৩ বলে ২৩ রান দূরে থাকতে আউট হন হৃদয়। এরপর ১টি ছক্কায় ৬ বলে ৮ রান করে আউট হন পেরেরা। তবে ষষ্ঠ উইকেটে আকবর আলিকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ১২ রান তুলে সিলেটের জয় নিশ্চিত করেন মুশফিক। ২টি চারের সহায়তায় ২৫ বলে অপরাজিত ২৮ রান করেন মুশফিক। ৬ রানে অপরাজিত থাকেন আকবর। কুমিল্লার নবি-খুশদিল ২টি করে উইকেট নেন।