ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ১৮:০৩ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৩৭১ বার
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার প্লাবন-ভূমির স্বপ্নদ্রষ্টা মতিন সৈকত। শৈশব, কৈশোর, যৌবন ছাড়িয়ে তিনি এখন প্রায় বৃদ্ধ। কিন্তু বিন্দুমাত্র চির ধরেনি
প্রকৃতি প্রেমে। শৈশব থেকে শুরু করে বৃদ্ধ জীবনেও কাজ করছেন প্রকৃতির জন্য।
কুমিল্লার এ মানুষটি এখন পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি পাখিকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করেছেন। দিয়েছেন মুক্ত আকাশ।
বিষযুক্ত শস্য, দেশি মাছ উৎপাদন, গাছ রোপনসহ নানাভাবে প্রকৃতির পক্ষে কাজ করছেন তিনি। এ সব কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার।
জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত এভাবেই কাজ করে যেতে চান প্রকৃতি প্রেমি এ মানুষটি।
পশু-পাখি বা বন্য প্রাণী আক্রান্তের খবর পেলেই ছুটে যান তিনি। উদ্ধার করে নিয়ে আসেন নিজ বাড়িতে। মেহমানের মতো আদর এবং চিকিৎসা দিয়ে উন্মুক্ত
করে দেন এ সব পশু-পাখিকে।
এ ছাড়া কৃষি ও পরিবেশ উন্নয়ন, বিষযুক্ত ফসল, নিরাপদ খাদ্য আন্দোলন, খাল-নদী পূনঃখনন, জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণের পাশাপাশি বহুমুখী সামাজিক
আন্দোলনও করছেন তিনি।
মহাসড়কের দুই পাশে ময়লা আবর্জনা, শহর-নগরের বর্জ্যকে রূপান্তরিত করে সিটিজেন ফার্টিলাইজার বা নাগরিক সার তৈরির জন্য সরকারের নিকট জোর
দাবি জানিয়ে আসছেন মতিন সৈকত। এ ছাড়া দাউদকান্দি এলাকার কালাডুমুর নদী পূনঃখননে রয়েছে তার বিশেষ অবদান।
মতিন সৈকত বলেন, ৩০ বছরে ধরে পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করছি। আমাদের এলাকায় অনেক বেশি পাখি বসবাস করে। কুমিল্লা মাছের অঞ্চল। পাখিরা মাছ
খেতে এখানে ছুটে আসে। পাখিরা এখানে এসে অনেক জায়গায় আটকা পড়ে। ২০০০ সাল থেকে পাখি নিয়ে আমি কাজ করছি। আমার উদ্ধারকৃত পাখির
সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। পাখি রক্ষার পাশাপাশি বন্য প্রাণি ও খাল নিয়েও কাজ করছি।
এসব কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন সময়ে মতিন পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত পরিবেশের জন্য এভাবে কাজ করে যেতে চান প্রকৃতি
প্রেমী মতিন সৈকত।
মতিন সৈকত বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০১০ ও ২০১৭ সালে কৃষিতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার দিয়ে আমাকে সম্মানিত করেছেন। ২০২১ সালে
জাতীয় পরিবেশ পুরস্কার দিয়ে মূল্যায়ন করেছেন। এই যে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার রাষ্ট্রপতির অভিনন্দন ও মানুষের ভালোবাসা। এ সবই আমার কাজগুলোকে
অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। আমি আমার কাজে জনগণকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে চাই। কাজগুলো এগিয়ে নিতে চাই।
মতিন সৈকতের এ সব উদ্যোগের প্রশংসা মানুষের মুখে মুখে। পুরো জেলার মানুষের কাছেই তিনি এখন মডেল।
এলাকার সচেতন মহল বলছেন, পাখি প্রেমে তিনি অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। পাখির সঙ্গেই তার সারাদিন কাটে। তিনি একজন প্রকৃতি প্রেমি মানুষ।
তিনি যে কাজগুলো করেন সেগুলো সত্যিই বিরল ও অতুলনীয়।