ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ জুলাই, ২০২৩ ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ২২৬ বার
বিশ্বের বিলিয়নিয়ারদের তালিকার শীর্ষে এবার উঠল নতুন নাম। ফ্রান্সের নাগরিক বার্নার্ড আর্নল্ট বিলাসদ্রব্যের ব্যবসায়ী। ৭৪ বছর বয়সী এই প্রকৌশলী ২০২৩ সালে ২২৩ বিলিয়ন ডলারে ভর করে উঠে এসেছেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনীদের তালিকার শীর্ষে।
আর্নল্টের মোট আয় বাংলাদেশের মোট জিডিপির প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি। ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জিডিপির পরিমাণ ৪৬০.২ বিলিয়ন ডলার।
বার্নাড আর্নল্টের প্রতিষ্ঠান এলভিএমএইচ মুনাফা এবং শেয়ারের দিক থেকে সব রেকর্ড ভেঙে গত ১২ মাসে ৫৩ বিলিয়ন ডলার যোগ করেছে। এটি বিলিয়নিয়ারদের আয়ের ভেতর সর্বাধিক। এর আগে এই তালিকার শীর্ষে ছিলেন ইলন মাস্ক। বর্তমানে তিনি ৩১ বিলিয়ন ডলার পিছিয়ে রয়েছেন।
সাধারণ মানুষের কাছে এলভিএমএইচের ব্রান্ডগুলো যতটা পরিচিত আর্নল্টের নাম ততটা পরিচিত নয়। এলভিএমএইচের আওতায় থাকা ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে রয়েছে- লুই ভুতোঁ, ক্রিশ্চিয়ান ডিওর, ফেন্দি, গিভেঞ্চি, টিফানি অ্যান্ড কো., হেনেসি, মোয়েট, স্টেলা ম্যাককার্টনি, সেফোরাস প্রভৃতি। প্রায় ৭০টিরও বেশি ব্র্যান্ডের মাধ্যমে মাত্র তিন দশক সময়ের ভেতর এলভিএমএইচকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিলাস দ্রব্য কোম্পানিতে পরিণত করেছেন। ১৯৮৯ সালে মাত্র ৪ বিলিয়ন ডলার থেকে এখন কোম্পানিটির মাসিক আয় ৮৬ বিলিয়ন ডলার। এলভিএমএইচ’র স্টকের মূল্য ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
১৯৯৭ সালে ফোর্বসের তালিকায় প্রথমবারের মতো নাম ওঠে আর্নল্টের। তখন তার মোট আয় ছিল ৩.১ বিলিয়ন ডলার। পরবর্তীতে ২০০৫ সালে ১৭ বিলিয়ন ডলার নিয়ে তিনি শীর্ষ ২০ ধনীর তালিকায় আসেন। ২০১১ সালে তিনি ৪র্থ শীর্ষ ধনী ব্যক্তি হিসেবে এই তালিকায় নাম ওঠান। ২০১৮ সাল নাগাদ তার ভাগ্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। সে বছর তিনি ৭১ বিলিয়ন ডলার নিয়ে শীর্ষ ধনীদের ভেতর ৪র্থ অবস্থানে আসেন।
কীভাবে ক্লাসিক বিলাসদ্রব্য তৈরি করে তাদের আবেদন ধরে রাখতে হয় তা ভালো করেই জানেন আর্নল্ট। ফোর্বসকে ২০১৯ সালে তিনি বলেন, কেন লুই ভুতোঁ এবং ডিওর’র মতো ব্র্যান্ডগুলো এত সফল? কারণ তারা সময়হীন এবং আধুনিকতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে এদের অবস্থান। শুধু লুই ভুতোঁ ২ হাজার ডলারের বেশি দামি হাতব্যাগ, ঘড়ি ও অলঙ্কার বিক্রি করে। গত বছর এই একটি ব্র্যান্ডই ২১.৭ বিলিয়ন মুনাফা করেন।
আর্নল্টের নতুন ডিজাইনার ও ব্র্যান্ডকে সাধুবাদ জানিয়ে নিজেদের কোম্পানির অংশ করে নেওয়ার অভ্যাস এলভিএমএইচকে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে। ২০১৭ সালে পপস্টার রিহানার সাথে পার্টনারশিপে ফেনটি বিউটি নামের কোম্পানি খোলা হয়। এটি ২০১৯ সাল নাগাদ ৫৫০ মিলিয়ন মুনাফা করে।
অসমর্থিত সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, গত বছর কোম্পানিটি মুনাফা দ্বিগুণ করেছে। শুধু সফলতা নয় ২০১৯ সালে ফেন্টি নামে রিহানার সঙ্গে খোলা আরেকটি কোম্পানি কখনোই আলোর মুখ দেখেনি।
অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে ধনী হয়েও আর্নল্ট তার সাফল্যকে আরও বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। জুলাইতে তার হোল্ডিং কোম্পানি ’আগাছেকে’ নতুন করে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা হাতে নেন তিনি। পাঁচ সন্তানকে সমানভাবে তাদের অংশ ভাগ করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি এমনটা করেন। জানুয়ারিতে তিনি ডেলফিন নামে ৪৭ বছর বয়সী কন্যাকে ডিওরের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। এটি কোম্পানির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্রান্ড হিসেবে পরিচিত।