ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

মাথাপিছু ঋণ ৯৫ হাজার টাকা

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১৩ জুলাই, ২০২৩ ২১:১১ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ২২১ বার


মাথাপিছু ঋণ ৯৫ হাজার টাকা

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, অভ্যন্তরীণ ও বিদেশি ঋণ মিলিয়ে চলতি বছরে সরকারের মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ১৩ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। দেশের জনসংখ্যার বিবেচনায় নিলে মানুষের মাথাপিছু ঋণ দাঁড়ায় ৯৫ হাজার কোটি টাকা। অবশ্য মাথাপিছু ঋণের তুলনায় আয় এখনো বেশি। দেশের মানুষের বর্তমান বাৎসরিক মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৯৩ ডলার। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ লাখ ৩ হাজার ৪০ টাকা।

 

 

অবশ্য আয় বেশি থাকলেও ঋণের ঝুঁকিই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কম রাজস্ব আয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও দেশের বাণিজ্য ঘাটতি সরকারের ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা কমিয়েছে। যদিও বাংলাদেশ কখনই খেলাপি হয়নি। তবে বাজেট ঘাটতি মেটাতে ঋণগ্রহণের পরিমাণ যে হারে বাড়ছে, তাতে সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারপরও বর্তমানের সংকট কাটাতে সরকার আরও বেশি বিদেশি ঋণের দিকে ঝোঁক বাড়িয়েছে। এতে দেশের মানুষের মাথাপিছু ঋণ বাড়ছে গাণিতিক হারে।

 

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, মাত্র চার বছরের ব্যবধানে সরকারের দেশি-বিদেশি ঋণ বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। আর ২০১৬ সালের তুলনায় বর্তমানের এ ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১৭৯ শতাংশ।

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব বলছে, বর্তমানে সরকারের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ৭ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৭ লাখ ৯৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। পাঁচ বছরের ব্যবধানে বিদেশি ঋণ বেড়েছে প্রায় ৮০ শতাংশ। এর বাইরে বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরের সরকারের ঋণের পরিমাণ ৮ লাখ ১৫ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে বর্তমানে সরকারের ঋণ ১৬ লাখ ১৩ হাজার ৭১১ কোটি টাকা।

 

 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, দেশের বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। এ হিসাবে দেশের মাথাপিছু ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ১৯ টাকা। ২০১৯ সালে মানুষের মাথাপিছু ঋণ ছিল ৫৭ হাজার ৬১১ টাকা। অর্থাৎ চার বছরে ব্যবধানে মাথাপিছু ঋণ বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। আর ২০১৬ সালে ছিল ৩৪ হাজার ৫৩ টাকা। সে হিসাবে সাত বছরের ব্যবধানে মাথাপিছু ঋণ বেড়েছে ১৭৯ শতাংশ।

 

 

তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের জুন শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণের স্থিতি ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকারের ঋণের স্থিতি ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া সরকার সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য খাত থেকে ঋণ নিয়েছে ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা।

 

 

পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত পাঁচ বছরে দেশের অভ্যন্তরে ও বিদেশে সরকারের ঋণ কয়েকগুণ বেড়েছে। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে ১ হাজার ২৪২ শতাংশ আর বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে বেড়েছে ২৪২ শতাংশ। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য খাত থেকে ৭৫ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে ৮৯ শতাংশ।

 

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণের পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা। পাঁচ বছর পর ২০২৩ সালের জুনে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮১৯ কোটি টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ২০১৭ সালে ঋণের পরিমাণ ছিল ৭০ হাজার ৭ কোটি টাকা। গত জুনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্রসহ দেশের অভ্যন্তরীণ অন্যান্য খাত ২০১৭ সালে সরকারের ঋণ ছিল ২ লাখ ৩৮ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের এপ্রিলে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা।

 

 

সরকারের বিদেশি ঋণও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সরকারের বিদেশি ঋণ ছিল ৩ হাজার ৮৮৬ কোটি ডলার। পাঁচ বছর পর ২০২৩ সালের মার্চে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলারে।


   আরও সংবাদ