ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

সন্ধ্যায় চাঁদে অবতরণ করবে ভারতের চন্দ্রযান-৩

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২৩ অগাস্ট, ২০২৩ ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ২২৭ বার


সন্ধ্যায় চাঁদে অবতরণ করবে ভারতের চন্দ্রযান-৩

আজ সন্ধ্যায় চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করতে প্রস্তুত চন্দ্রযান-৩। চাঁদের মিশন হিসাবে ভারত তার আঙুলগুলো অতিক্রম করছে। ভারতে উৎসব ও প্রার্থনার সাথে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দিনটি। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন টাচডাউনের আগে এই ২০ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ২০ মিনিটকে ক্রিকেট টি-২০ ম্যাচের সঙ্গে তুলনা করছেন বিজ্ঞানীরা।

 

 

অবতরণ - সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিটে - সারা দেশে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে চন্দ্রযান-৩ এর অবতরণ। এই অনুষ্ঠানের জন্য ভারতের স্কুলগুলআ খোলা থাকবে এবং ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের প্রত্যাশায় নানা উৎসবের আয়োজন করছে দেশটির সর্বস্তরের জনগণ। দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দেওয়াতে সেখানে বসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্ত হবেন অনলাইনে।

 

 

এর আগে, ২০১৯ সালে চন্দ্রযান-২ মহাকাশযানটিকে নামানোর সময় শেষের ১৫ মিনিটই নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করেছিল। শেষ পর্যন্ত পালকের মতো চাঁদের মাটি ছুঁতে পারেনি চন্দ্রযান-২। বরং সজোরে চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়ে সেটি। সেই সময় প্রকাশ্যেই ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছিল ভারতীয় মহাকাশ গভেষণা সংস্থা (আইএসআরও)-র তৎকালীন চেয়ারম্যান কে শিবনকে। পরে কালে ওই ১৫ মিনিটকে ‘সন্ত্রাসের মুহূর্ত’ বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। এবার যথেষ্ট সন্তর্পণে এগোনো হলেও, শেষের ওই ২০ মিনিটে যাতে সবকিছু ওলটপালট না হয়ে যায়, সেই চিন্তাই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বিজ্ঞানীদের।

 

nagad

 

চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব যখন ২৫ কিলোমিটার হবে, সেই সময়ই চন্দ্রযানকে নামানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। এই মুহূর্তে শূন্যে অনুভূমিকভাবে অবস্থান করছে চন্দ্রযান-৩। অবতরণের সময় অবস্থান হবে উল্লম্ব। উল্লম্বভাবে অবতরণ করালেই পালকের মতো চাঁদের মাটি ছোঁয়ানো সম্ভব চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানকে।

 

সন্ধ্যায় চাঁদে অবতরণ করবে ভারতের চন্দ্রযান-৩ 

চাঁদের কক্ষপথে ভারতের চন্দ্রযান-৩

 

আইএসআরও সূত্রে জানা যায়, চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের সময় মহাকাশযানের গতি শ্লথ রাখা হবে। প্রতি সেকেন্ডে ১.৬৮ কিলোমিটার গতিতে নামানো হবে নিচের দিকে, ঘণ্টার হিসেবে যা ৬০৪৮ কিলোমিটার। মহাজগতের নিরিখে এই গতি শ্লথ হলেও, পৃথিবীতে বিমানের গতির তুলনায় অবতরণের সময় চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের গতি প্রায় ১০ গুণ বেশি থাকবে।

 

 

চন্দ্রপৃষ্ঠের সঙ্গে দূরত্ব যত কমবে, ততই গতি কমিয়ে আনা হবে ল্যান্ডার ‘বিক্রমে’র। বিজ্ঞানের ভাষা এই পর্যায়কে বলা হয় ‘রাফ ব্রেকিং’। অবতরণের সময় চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের এই ‘রাফ ব্রেকিং’-এর জন্য ১১ মিনিট সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। এর পর শুরু হবে ‘ফাইন ব্রেকিং’ পর্যায়, ঠিক যে পর্যায়ে চন্দ্রযান-২ মহাকাশযানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন বিজ্ঞানীরা।

 

 

চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব যখন ৮০০ মিটার হবে, গতি নামিয়ে আনা হবে শূন্যে। নামার আগে জমি জরিপ করে নেবে ল্য়ান্ডার ‘বিক্রম’। এর পর দূরত্ব কমে যখন ১৫০ মিটারে পৌঁছবে, চন্দ্রপৃষ্ঠের ছবি তুলবে, যা দেখে অবতরণের উপযুক্ত জায়গা বেছে নেওয়া হবে। তাতে বসানো সেন্সর চন্দ্রভূমির স্পর্শ পেলে, ল্যান্ডারের চারটি পা যখন মাটি ছোঁবে, ইঞ্জিন বন্ধ করে দেবেন বিজ্ঞানীরা। চাদের মাটিকে বলা হয় রেগোলিথ। অবতরণের পর ওই মাটি থিতিয়ে আসার জন্য অপেক্ষা করা হবে। এর পর ল্যান্ডার থেকে আলাদা হয়ে চাঁদের মাটিতে নামবে রোভার ‘প্রজ্ঞান’। চাঁদের মাটিতে ঘুরে ঘুরে নমুনা সংগ্রহ করবে রোভার ‘প্রজ্ঞান’। তবে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পর নিজ নিজ জায়গায় থিতু হয়ে, সবার আগে পরস্পরের সেলফি তুলবে ‘বিক্রম’ এবং ‘প্রজ্ঞান’। মুহূর্তের মধ্যেই তা হাতে এসে পৌঁছবে আইএসআরও-র বিজ্ঞানীদের।

 

 

ল্য়ান্ডার ‘বিক্রম’ এবং রোভার ‘প্রজ্ঞান’ চাঁদের বুকে এক চন্দ্রদিবস অতিবাহিত করবে, পৃথিবীর হিসেবে যা ১৪ দিন। সব ঠিক থাকলে, চন্দ্রপৃষ্ঠে পালকের মতো অবতরণকারী চতুর্থ দেশ হিসেবে ইতিহাসের পাতায় নাম উঠবে ভারতের।


   আরও সংবাদ