ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

যুক্তরাজ্যের সঙ্গে চুক্তি করতে সব সহায়তা দিতে প্রস্তুত : অ্যাটর্নি জেনারেল

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৬:৪০ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৬৫ বার


যুক্তরাজ্যের সঙ্গে চুক্তি করতে সব সহায়তা দিতে প্রস্তুত : অ্যাটর্নি জেনারেল

বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নেয়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে লন্ডনের সঙ্গে জরালো প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ঢাকা। চুক্তির আইনি দিক বিবেচনা করতে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পরামর্শও চেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন মামলায় বিচার থেকে বাঁচতেই যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন তারেক রহমান।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) নিজ কার্যালয়ে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে হওয়া বিভিন্ন মামলার বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলেন।

এক সাক্ষাতকারে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে চুক্তি করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দিতে প্রস্তুত তার কার্যালয়। বিচারের মুখোমুখি হওয়া থেকে বাঁচতেই তারেক রহমান দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
 
রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন একটা চুক্তি (বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি) করার ব্যাপারে। তারা অনেকটা কথা বলেছেন; আশা করা যাচ্ছে। তবে সেই ক্ষেত্রে যদি চুক্তি হয়, চুক্তির বিষয়ে যদি কোনো আইনি পরামর্শ থাকে এবং আমার কাছে পাঠানো হয় তাহলে অবশ্যই আমরা এটা করবো। কারণ আমরাই চাই, যারা অপরাধ করে তিনি তারেক রহমান হোক বা যে কেউ হোক; যারাই অপরাধ করে দেশেই বাইরে থাকবেন তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারিক আদালতের মুখোমখি করা হবে।
 
শুধু তারেক রহমান নয়, বিদেশে পলাতক বিভিন্ন মামলায় দণ্ডিত আসামিদের দেশে ফেরাতে সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
 
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন ধরনের মামলায় তার (তারেক) শাস্তি হয়েছে, কিন্তু কখনও তিনি বিচারের মুখোমুখি হননি। এই যে তারেক রহমান বলছেন; তিনি নির্দোষ, কিন্তু কখনও বাংলাদেশে এসে বিচারিক আদালতে অথবা আপিল আদালতে কখনও উপস্থিত হননি এবং তিনি দাবি করেননি তিনি নির্দোষ কিন্তু বিচারিক লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেননি। তিনি আইনিভাবে লড়াইয়ের চেষ্টাও করেননি। তবে, সবশেষ গতকাল মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করতে আগ্রহী যুক্তরাজ্য। দুই দেশের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছে।
 
তবে সবশেষ গতকাল মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে পঞ্চম কৌশলগত সংলাপ শেষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন বলে বাংলাদেশকে জানিয়েছে দেশটি। এছাড়া দেশটির সঙ্গে বন্দি বিনিময়ের বিষয়ে আলাপ হয়েছে।’ 
 
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করতে আগ্রহী যুক্তরাজ্য। দুই দেশের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছে। 
 
 
উল্লেখ, ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হন তারেক রহমান। ২০০৮ সালে প্যারোলে মুক্তির পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার উদ্দেশে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এর পর থেকে গত ১৫ বছর যুক্তরাজ্যেই অবস্থান করছেন তিনি।
 
প্রসঙ্গত: বিএনপি ক্ষমতা থাকাকালীন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে দেশের ইতিহাসে ভয়াবহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা হওয়ায় মামলা ও দশ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ মদদ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারিক আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। বিচার প্রক্রিয়ার পুরো সময়টাতেই আইনি প্রক্রিয়ায় অংশ না নিয়ে যুক্তরাজ্যেই অবস্থান করেন তারেক রহমান। ২০১৯ সাল থেকে বেশ কয়েকদফায় বিদেশে পলাতক তারেক রহমানকে দেশে ফেরাতে যুক্তরাজ্য সরকারের শরণাপন্ন হলেো বাধা হয়ে দাঁড়ায় দুই দেশের মধ্যকার বন্দি প্রত্যার্পণ চুক্তির অনুপস্থিতি।


   আরও সংবাদ