ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর, ২০২৩ ১৮:৫৪ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৯৪ বার
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) দেশের রপ্তানিকৃত সব পণ্যের আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৩৯৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। তবে এ সময়ে আয় হয়েছে ১ হাজার ৩৬৮ কোটি ৫৪ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এ হিসাবে আলোচ্য প্রান্তিকে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কমেছে ২ দশমিক ১৬ শতাংশ। এ প্রান্তিকে সব পণ্যের রপ্তানিকৃত আয় আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত অর্থবছরের (২০২২-২৩) জুলাই-সেপ্টেম্বরে মোট রপ্তানি আয় হয়েছিল ১ হাজার ২৪৯ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সেখানে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দেশের প্রায় সব পণ্যের রপ্তানির সূচক নিম্নমুখী রয়েছে। সেখানে এমন পরিস্থিতির মধ্যেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২২ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশের কৃষিজাত পণ্যে মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ২৫ কোটি ৭৪ লাখ ৯০ হাজার ডলার। যেখানে এ সময়ের জন্য এই জাতীয় পণ্যের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২১ কোটি ৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানি আয় বেড়েছে ২২ দশমিক ১৩ শতাংশ। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময়ে এ পণ্যের রপ্তানি আয় হয়েছিল ২৭ কোটি ১৬ লাখ ২০ হাজার ডলার। এ হিসাবে অবশ্য আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কৃষিজাত পণ্যের রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ২০ শতাংশ।
বাংলাদেশ যেসব কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানি করে তার মধ্যে প্রধানত শুকনা খাদ্য, তামাক ও তামাকজাত পণ্য, শাক-সবজি, মশলা, প্রাণিজ বা উদ্ভিজ্জ চর্বি ও তেল, সুগার-কনফেকশনারি, ফল ও জুস, পান পাতা, পানীয়, চা, সেমাই, জুস, ওয়েল কেক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় এসেছে শাকসবজি থেকে। এ সময়ে পণ্যটি থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬০ হাজার ডলার। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়ছিল ১ কোটি ৪৫ লাখ ৫৭ হাজার ডলার। এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পণ্যটি থেকে রপ্তানি আয় বেড়েছে ২২৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ২৬৯ দশমিক ৪১ শতাংশ। ওই সময়ে পণ্যটি থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ১ কোটি ৩০ লাখ ১০ হাজার ডলার। এ বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি আয় এসেছে শুকনা খাদ্যজাত পণ্য থেকে। এ সময়ে পণ্যটি থেকে মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। যেখানে এ সময়ের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ কোটি ২৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার। অবশ্য লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পণ্যটি থেকে রপ্তানি আয় কমেছে ৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ৮ দশমিক ৩১ শতাংশ। ওই সময়ে পণ্যটি থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৫ কোটি ২১ লাখ ৩০ হাজার ডলার। তৃতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি আয় এসেছে তামাক ও তামাকজাত পণ্য থেকে। আলোচ্য সময়ে পণ্যটি থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ কোটি ২২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এ সময়ের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল ৪ কোটি ১৭ লাখ ৪০ হাজার ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পণ্যটি থেকে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১ দশমিক ২৭ শতাংশ, তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় পণ্যটি থেকে রপ্তানি আয় কমেছে ৩৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ওই সময়ে এ পণ্যের রপ্তানি আয় হয়েছিল ৬ কোটি ৯৭ লাখ ১০ হাজার ডলার। পরের অবস্থানে থাকা প্রাণিজ বা উদ্ভিজ্জ চর্বি ও তেল পণ্য রপ্তানি বাবদ আয় হয়েছে ২ কোটি ৮০ লাখ ৮০ হাজার ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এ হিসেবে পণ্যটি থেকে আলোচ্য সময়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ কম হয়েছে রপ্তানি আয়। আর গত অর্থবছরের একই সময়ে এ পণ্যটি থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৫ কোটি ১২ লাখ ৪০ হাজার ডলার। যার থেকে আলোচ্য সময়ে রপ্তানি কমেছে ৪৫ দশমিক ২৪ শতাংশ।
পঞ্চম অবস্থানে থাকা তেল বীজ রপ্তানি বাবদ আলোচ্য সময়ে আয় হয়েছে ১ কোটি ২৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এজন্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এ সময়ে পণ্যটি থেকে রপ্তানি আয় বেড়েছে ২৮৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি আয় বেড়েছে ৬৫ দশমিক ২৩ শতাংশ। ওই সময়ে পণ্যটি থেকে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৭৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এ ছাড়া আলোচ্য সময়ে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয়ে ফল ও জুস থেকে ১ হাজার ৬০ শতাংশ, পান পাতা থেকে ১৮৮ দশমিক ৯২ শতাংশ, চা থেকে ২৩ দশমিক ২১ শতাংশ, সুগার ও সুগারজাত কনফেকশনারি থেকে ১২ দশমিক ৯৭ শতাংশ, মশলা থেকে ৬ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং অন্যান্য পণ্যে ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।