ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ জানুয়ারী, ২০২৪ ২২:১০ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ২৪৯ বার
সারাদেশে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের ছাটাই-বরখাস্ত, গ্রেড কারচুপি, টার্গেটের নামে ফাও খাটানোসহ সব ধরনের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।
একই সঙ্গে মজুরি আন্দোলনের সময় কারাবন্দি শ্রমিক ও নেতাদের মুক্তি এবং নিহত ৪ শ্রমিকের আজীবন আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল সংগঠনটির সভাপতি শ্রমিকনেতা মন্টু ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা সাদেকুর রহমান শামীম এক বিবৃতিতে এসব দাবি জানান। তারা বলেন, শ্রমিকদের দাবি ও বর্তমান বাজার পরিস্থিতি অনুসারে মজুরি বাড়ানো হয়নি। উপরন্তু যে সামান্য মজুরি বাড়ানো হয়েছে তা থেকেও নানান অপকৌশলে শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। শ্রমিক নেতারা আরও বলেন, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কারখানার শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন যে, তাদের আগের গ্রেড থেকে পদাবনতি হয়েছে। একাধিক কারখানায় শ্রম আইন লঙ্ঘন করে অংশগ্রহণকারী কমিটির নির্বাচিত সদস্যদের বরখাস্ত করা হয়েছে। নতুন মজুরি কাঠামো থেকে বঞ্চিত করতে ছাটাই-বরখাস্তের শিকার শ্রমিকদের নামে মিথ্যা তারিখ দিয়ে নোটিশ জারি করা হয়েছে। গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতারা আরও বলেন, এসব অনিয়ম ও আইন লঙ্ঘনের ঘটনায় কোনো দায়িত্ব পালন করছে না কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ও শ্রম অধিদপ্তর। তারা বলেন, এক দিকে মজুরি বোর্ড খুবই অপর্যাপ্ত মজুরি নির্ধারণ করেছে, অন্যদিকে মালিকপক্ষ নানানভাবে শ্রমিকদের হয়রানি ও নির্যাতন করছে। অবিলম্বে এ অবস্থার প্রতিকার না করলে শ্রমিকরা কঠোর অবস্থান গ্রহণে বাধ্য হবে। বিবৃতিতে নেতারা বলেন, টঙ্গী বিসিক শিল্প নগরীতে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেড কারখানার অংশগ্রহণকারী কমিটির দুজন নির্বাচিত সদস্যকে বেআইনিভাবে বরখাস্ত করা হয়। যা বাংলাদেশ শ্রম আইনের ধারা ২০৫(১০) ও ধারা ১৯৫ লঙ্ঘনের কারণে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অথচ দীর্ঘদিন আগে অভিযোগ গ্রহণ করেও অদ্যাবধি শ্রম মন্ত্রণালয়ের দুই অধিদপ্তর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, টঙ্গী বিসিক শিল্প নগরীতে সুমি অ্যাপারেল লিমিটেড, দিশারী ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও গোল্ড স্টার ফ্যাশন লিমিটেড নামের তিনটি কারখানায় ব্যাপকভাবে গ্রেড অবনমন করায় নতুন বেতন কাঠামোতে মজুরি নিতে গিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে বিক্ষোভ সৃষ্টি হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে ৩৫ শ্রমিককে বরখাস্ত করা হয়েছে। একইভাবে গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভার, চট্টগ্রামে বিভিন্ন কারখানায় তীব্র শ্রমিক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ৫ বছর একজন শ্রমিক যে পদে কাজ করেছেন এবং যে গ্রেডে মজুরি পেয়েছেন, তা নিয়ে কোনো আলোচনা না থাকলেও, নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা হওয়ার পর মালিকপক্ষের ইন্ডস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগ দ্বারা নতুন করে কর্মদক্ষতা মূল্যায়ন ও গ্রেড পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ চক্রান্তমূলক। মালিকদের এহেন পদক্ষেপ শ্রমিকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রে বিবৃতিতে বলা হয়, গার্মেন্ট শিল্প শ্রমিকদের বিরুদ্ধে চলমান নির্যাতন বন্ধ ও শ্রম পরিবেশের ক্রমাবনতি রোধ, শ্রম অসন্তোষ প্রতিকারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে পরবর্তী উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় মালিকদের নিতে হবে।