ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

দেশে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল-ক্লিনিক ১০২৭

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:৩০ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৩০ বার


দেশে লাইসেন্সবিহীন হাসপাতাল-ক্লিনিক ১০২৭

ঢাকা: সারা দেশে লাইসেন্সধারী বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ও ব্ল্যাড ব্যাংকের সংখ্যা ১৫ হাজার ২৩৩টি। আর লাইসেন্সবিহীন রয়েছে এক হাজার ২৭টি।

রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলে ইউনাইটেড হাসপাতালে খতনা করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থা মারা যাওয়ার শিশু আয়ানের ঘটনায় করা রিটে হাইকোর্টে পাঠানো এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।  

 

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর বেঞ্চ পরবর্তী শুনানির জন্য ১৮ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী শাহজাহান আকন্দ মাসুম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
 
এর আগে এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে ১৫ জানুয়ারি নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুলে আয়ানের পরিবারকে কেন পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। এছাড়া সারা দেশে লাইসেন্স ও অনুমোদনহীন কতগুলো হাসপাতাল রয়েছে, তার তালিকা এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (স্বাস্থ্যসেবা) নির্দেশ দেওয়া হয়।  

এ আদেশ অনুসারে ২৯ জানুয়ারি অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক ডা. পরিমল কুমার পালের সই করা ১৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়।

শিশু আয়ানের মৃত্যুর পর পত্রিকায় আসা খবরের ভিত্তিতে অভিযোগ তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর একটি কমিটি গঠন করে। তদন্তে যেসব বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেগুলো- আয়ানের বাবা শামীম আহমেদের লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য, বাড্ডায় আয়ানের খতনা করার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য, গুলশানে আয়ানের চিকিৎসার সাথে সংশ্লিষ্ট সবার লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য নেওয়া হয়।

ঘটনার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩১ ডিসেম্বর সাতারকুল বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খতনা করাতে আয়ানের বাবা নিয়ে আসেন এবং সুন্নতে খতনা করান। সুন্নতে খতনা করানোর পর আয়ানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরে শিশুটিকে ওইদিনই ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেডের গুলশান-২ নম্বর শাখায় পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ৭ জানুয়ারি গুলশান-২ ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ৮ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্মারকমূলে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেন।

প্রতিবেদনের মতামত অংশে চিকিৎসা ও ওষুধ সংক্রান্ত কিছু বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। আর শেষাংশে বলা হয়, ‘সুন্নতে খতনা অপারেশনে স্বাভাবিক রক্তপাত হয়েছে বলিয়া ধারণা হয়। ’ 

আর সুপারিশ অংশে বলা হয়, হাসপাতালে একাধিক অ্যানেসথেসিওলজিস্ট নিয়োগ দেওয়া, রোগী ও তার আত্মীয়-স্বজনকে অ্যানেসথেসিয়া ও অপারেশনের ঝুঁকিগুলো ভালোভাবে অবহিত করা, হাসপাতালে আইসিইউ ব্যবস্থা রাখা, সরকারের অনুমোদনের পরে হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু করা।  

এ প্রতিবেদনকে আইওয়াশ বলে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।

সেই অনুযায়ী রোববার বিষয়টি শুনানির জন্য ওঠলে রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, সারা দেশে লাইসেন্স ও অনুমোদনহীন কতগুলো হাসপাতাল রয়েছে, তার তালিকা এসেছে। রিট আবেদনকারী আইনজীবী হলফনামা আকারে বক্তব্য দাখিলে মুলতবি চান। এরপর আদালত ১৮ ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন রাখেন।

এর আগে ৯ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।

১৫ জানুয়ারি আইনজীবী শাহজাহান আকন্দ মাসুম জানিয়েছিলেন, সারা দেশে লাইসেন্স ও অনুমোদনহীন কতগুলো হাসপাতাল আছে। তার তালিকা এক মাসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে (স্বাস্থ্যসেবা) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এছাড়া ১৫ বছরে চিকিৎসায় অবহেলার কারণে কতজনের মৃত্যু হয়েছে, সেই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে।
৩১ ডিসেম্বর সুন্নতে খতনা করানোর জন্য আয়ানকে সাতারকুল বাড্ডার ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান অভিভাবকরা। খতনা শেষ হওয়ার পর আয়ানের জ্ঞান না ফেরায় তাকে সেখান থেকে পাঠানো হয় গুলশান-২ এর ইউনাইটেড হাসপাতালে। সেখানে নবজাতক নিবিড় যত্ন ইউনিটে (এনআইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। এর সাত দিন পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


   আরও সংবাদ