আমির হোসেন মামুন
প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১৬:০৩ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১১৪ বার
চিকেন পক্স ছোঁয়াচে রোগ, যা ভ্যারিসেলা জোস্টার ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হয়। যেকোনো বয়সী মানুষ এতে আক্রান্ত হতে পারেন। তবে ১০ বছরের কম বয়সীদের আক্রান্তের হার বেশি।
আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি-সর্দি, জামাকাপড়, ফোসকার পানি এবং সরাসরি সংস্পর্শে এটি ছড়ায়। ভাইরাস শ্বাসনালি সংক্রমিত করে রক্তে প্রবেশ করে এবং ত্বকে গিয়ে ফুসকুড়ি তৈরি করে। সাধারণত আক্রান্তের ১৪-২১ দিনে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় এবং ৭-১০ দিনে রোগী সুস্থ হয়।
ভ্যারিসেলা ভাইরাস বাতাসে কিছুক্ষণ ভাসতে পারে, বস্তুর সঙ্গে লেগে থেকেও বাঁচতে পারে। ফোসকা শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত ভাইরাসটি ছড়াতে পারে।
চিকিৎসা
১) সহজপাচ্য পুষ্টিকর-নরম খাবার অল্প অল্প করে বারবার প্রয়োজন। বেশি বেশি তরল, ফলের রস, ডাবের পানি, ভিটামিনসমৃদ্ধ ও বেশি ক্যালরিজাতীয় খাবারে দ্রুত উপশম সম্ভব। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, দই, স্যুপ এবং শরীর ঠান্ডা রাখা খাবার বেশি করে দিতে হবে। শিশুদের বেশি বেশি বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
২) চর্বিযুক্ত, বেশি ঝাল-মসলা ও লবণযুক্ত খাবার, চকলেট, বাদাম, বাটার, কিশমিশ এবং যেসব খাবারে অ্যালার্জি হতে পারে, সেসব খাবার আক্রান্ত ব্যক্তিকে দেওয়া যাবে না।
৩) রোগীকে প্রতিদিন পরিষ্কার সাধারণ তাপমাত্রার বা কম ঠান্ডা পানিতে গোসল করান। তবে খেয়াল রাখা দরকার, যাতে ফোসকা না ফাটে। পরিষ্কার নরম সুতি কাপড় দিয়ে আস্তে আস্তে শরীর মুছতে হবে।
৪) বেশি চুলকানি হলে ক্যালামিন লোশন ব্যবহার করা যায় এবং অ্যান্টিহিস্টামিন–জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল, ব্যথার ওষুধ খেলেও রোগী আরাম পাবেন। তবে অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রফেন- জাতীয় ওষুধ নয়। চিকিৎসকের পরামর্শে কখনো অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিবায়োটিকসের প্রয়োজন হতে পারে।
প্রতিরোধ
আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকা। রোগীকে আলো-বাতাসপূর্ণ পরিচ্ছন্ন ঘরে রাখা। তাঁকে নরম সুতির ঢিলেঢালা পোশাক পরানো। টিকা হলো এ রোগের উত্তম প্রতিষেধক। শিশুর ১২ থেকে ১৮ মাস বয়সে এক ডোজ চিকেন পক্স ভ্যাকসিন এবং পরবর্তী সময়ে ৪ থেকে ৬ বছর বয়সে ভ্যাকসিনের আরেক ডোজ বুস্টার হিসেবে নিতে হবে।
ডা. কাকলী হালদার, সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ