ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ মার্চ, ২০২৪ ১২:১৮ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৪৩ বার
ঢাকা: রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়িতে অবস্থিত কৃষি মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস)। গণমাধ্যমের সাহায্যে কৃষি তথ্যপ্রযুক্তি তৃণমূল পর্যায়ের কৃষকের কাছে পৌঁছানোই এ সংস্থার মূল লক্ষ্য।
কিন্তু সেখানে কাজ হয় ভিন্ন। বিভিন্ন প্রকল্প, প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও অপকর্মের মাধ্যমে এ সংস্থার অর্থ লোপাটের অভিযোগ মিলেছে বড় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। শক্তিশালী সিন্ডিকেট ও এআইএসের গুটিকয়েক চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী সংস্থার টাকা আত্মসাৎ করেন। ডকুমেন্টারি-শিল্পী সম্মানীর নামেও অর্থ আড়ালে নিতেন তারা।
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের পর এআইএসে দুর্নীতির তথ্য দাতাদের খুঁজতে কমিটি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সংবাদ প্রকাশের পর সংস্থাটিতে বদলিঅযোগ্য পদে বদলি হচ্ছে। এ সংক্রান্ত অনেক নথির কপি বাংলানিউজের হাতে রয়েছে।
জানা গেছে, দুর্নীতি অনিয়মের তথ্য-প্রমাণসহ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর সংশ্লিষ্টরা ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই কারা গণমাধ্যমকে এসব তথ্য দিয়েছেন তাদের খুঁজে বের করতেই তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন এআইএসের পরিচালক ড. সুরজিত সাহা রায়। সংস্থার প্রধান তথ্য কর্মকর্তা বি এম রাশেদুল আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন তিনি। এতে আরও রয়েছেন এআইএসের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা শাশ্বতি এদবর ও তথ্য কর্মকর্তা (কৃষি) মো. আমিনুর ইসলাম।
কমিটি সম্পর্কে জানতে বিএম রাশিদুল আলমকে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে কমিটির সচিব কৃষি তথ্য সার্ভিস উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা শাশ্বতি এদবর বাংলানিউজকে বলেন, তদন্তাধীন বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না। তদন্ত শেষ হলে বলতে পারব। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
কৃষি ডায়েরি নিয়ে যেসব দুর্নীতি হয়েছে সে ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে অবশ্য তিনি বলেন, উপসহকারী কৃষি ডায়েরির কাজ চলমান। ইজিপির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। ডায়েরিতে কি সাইজের কাগজ ব্যবহার হচ্ছে আমি বলতে পারি না।
সংস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, বাংলানিউজের তথ্যনির্ভর সংবাদ প্রকাশের পর দুর্নীতির ব্যাপারে কৃষি মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি করে ১০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলে। অতিরিক্ত সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ) ড. শাহ মো. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- একই মন্ত্রণালয়ের সম্প্রসারণ-৩- এর উপসচিব দেবী চন্দ।
মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালকসহ যাদের নামে অর্থ লোপাট ও দুর্নীতি অভিযোগ উঠেছে তাদেরকে গত ৭ মার্চ মন্ত্রণালয় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্ত কমিটিকে কেন্দ্র করে সুরজিত সিন্ডিকেটে সদস্যরা তাদের দুর্নীতি ও অপকর্ম থেকে বাঁচার জন্য নানা ধরনের কৌশল করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিজেদের বলয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তদন্ত কমিটির সামনে যেন প্রেস সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা নিম্ন মানের কাগজ ও কালি, উপসহকারী ডায়েরি ও কৃষি ডায়েরির কাগজের সাইজ ২২x৩২ বলে সেজন্য নানা ধরনের প্রলোভন, ভয়ভীতি এবং হুমকি দিচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে, এ অপরাধ সরাসরি করছেন কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক সুরজিত সাহা রায়, প্রেস ম্যানেজার খন্দকার জান্নাতুল ফেরদৌসসহ সিন্ডিকেটের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ কর্মচারী টেকনিক্যাল পার্টিসিপেন্ট বাদল চন্দ্র সরকার, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সঞ্জিত কুমার ভৌমিক ও ক্যাশিয়ার মো. জুয়েল হোসেন।
বাংলানিউজে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত ‘কৃষি তথ্য সার্ভিসে বেপরোয়া সিন্ডিকেট, লুটে নিচ্ছে কোটি টাকা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ডায়েরিতে কাগজের ব্যাপক অনিয়ম ধরা পড়ে। এ ডায়রি ছাপাতে সরবরাহকারীর প্রতিষ্ঠানের ওয়ার্ক অর্ডারে যে কাগজ দেখানো হয়েছে সেটি ২২ ইঞ্চি বাই ৩২ ইঞ্চি, ওজন ৬১ গ্রাম, দাম ৩০৬২ টাকা। কাগজের প্রকৃত মূল্য আরও কম।
সূত্র জানায়, ডায়েরিতে ব্যবহৃত কাগজের ওজন ৬১ গ্রাম, আকৃতি ২০ ইঞ্চি বাই ৩০ ইঞ্চি; বাজার দর ১৫০০ থেকে ১৫৫০ টাকা। কিন্তু সুরজিত সাহা রায় তার পরিচিত সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রেইনবো ট্রেডার্সের নামে (৮৫, নয়াপল্টন) ১ কোটি ৫২ লাখ ৯৬ হাজার ৮৯৫ টাকার কাগজ ও কালি সরবরাহের কাজ দেওয়া হয়।
অভিযোগ উঠেছে, প্রেস ম্যানেজার খন্দকার জান্নাতুল ফেরদৌসের যোগসাজশে কাগজ ও কালি যে আকৃতি, ওজন, পরিমাণ ও দামে দেখিয়ে সরবরাহের চুক্তি দেওয়া হয়েছিল সেটি না করে গোপন চুক্তি মোতাবেক পরিচালক ও তিনি দ্বিগুণ দাম দেখিয়ে নগদ ৭০ লাখ টাকা ভাগবাটোয়ারার মাধ্যমে লোপাট করেছেন। এর নথির কপি বাংলানিউজের হাতে রয়েছে।
সূত্র জানায়, অত্যন্ত সুকৌশলে পরিচালক সুরজিত ও প্রেস ম্যানেজার খন্দকার জান্নাতুল ফেরদৌস আগের সব ডায়েরির (দেখানো হয়েছে ২২ ইঞ্চি বাই ৩২ ইঞ্চি ৬১ গ্রাম কিন্তু প্রকৃত পক্ষে ডায়েরিতে কাগজ ব্যবহার করা হয়েছে ২০ ইঞ্চি বাই ৩০ ইঞ্চি ৬১ গ্রাম) অনিয়ম ঢাকার জন্য প্রেস স্টোরে মজুদকৃত ২০ ইঞ্চি বাই ৩০ ইঞ্চি ৬১ গ্রাম কাগজ সরিয়ে ফেলতে তড়িঘড়ি করেন। বর্তমান ২০২৪-২৫ উপসহকারী ডায়রি ছাপানো জন্য টেন্ডারের আগেই আগের মতো বড় ধরনের অনিয়ম করেছেন। যেখানে ২২ ইঞ্চি বাই ৩২ ইঞ্চি ৬১ গ্রাম কাগজ ব্যবহার করার কথা, তারা ২০ ইঞ্চি বাই ৩০ ইঞ্চি ৬১ গ্রাম কাগজ ব্যবহার করেছেন ডায়েরিতে। এসব ঘটনার ভিডিও ও স্থিরচিত্র বাংলানিউজের হাতে এসেছে।
এ বিষয়ে জানতে কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) প্রেস স্টোর কিপার ইসরাত জাহান খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে এআইএসের কাটিং মেশিন অপারেটর মো. শফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন এ প্রতিবেদক।
শফিকুলকে ‘আপনার রুমে বোঝাইকৃত ২০ বাই ৩০ সাইজের ৬১ গ্রাম কাগজগুলো কি কাজে ব্যবহার হবে’ প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমার এখানে বিএস ডায়েরির কাগজ (২০ ইঞ্চি বাই ৩০ ইঞ্চি) এসেছে। কাগজগুলো এসেছে গত ৪ মার্চ। কি কাজে কাগজগুলো ব্যবহার হবে সে ব্যাপারে কিছু বলেননি।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের প্রেস ম্যানেজার খন্দকার জান্নাতুল ফেরদৌসের কাছে ‘২০২৪-২৫ উপসহকারী ডায়েরি ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে কি না’ জানতে চাওয়া হয়। তিনি বাংলানিউজের এ প্রতিবেদককে উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, হঠাৎ করে ডায়েরির বিষয়ে কেন প্রশ্ন করছেন? আমি এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেব না।
দুর্নীতির তথ্য দাতাদের খুঁজতে কমিটি
এআইএসের দুর্নীতি নিয়ে বাংলানিউজের পাঁচ পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের দুই পর্ব প্রকাশিত হলে টনক নড়ে সুরজিত সিন্ডিকেটের। সাধারণ কর্মচারীদের মধ্যেও শুরু নানা ধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সূত্র জানায়, এআইএস পরিচালক কর্তৃক যে কমিটি করা হয়েছে সেটি মূলত ‘গণমাধ্যমে এসব বিষয়ে কারা তথ্য দিলো তাদের খুঁজতে। ’
সুরজিত নিয়ন্ত্রিত তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হওয়া কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গেও কথা বলে বাংলানিউজ। তারা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, মূলত সংস্থার ভেতরকার দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করতেই এ কমিটি করা হয়েছে। উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাশ্বতি এদবরই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। শাশ্বতি বলেছেন, ‘পরিচালক চাকরি দিতেও পারেন আবার চাকরি খেতেও পারেন। ’ তিনি পরিচালক ও ম্যানেজার, সঞ্জিত ও ক্যাশিয়ার জুয়েলের পক্ষ নিয়েই কথা বলেছেন। বদলি করারও হুমকি দেন শাশ্বতি।
নাম না প্রকাশের শর্তে আরেক কর্মকর্তা বলেন, আমরা ডায়েরিতে কি সাইজের কাগজ ব্যবহার হয়েছে প্রেস কর্মচারীদের কাছে জানতে চাই। প্রেস সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা বলেন, সব ডায়েরিতে ২০ ইঞ্চি বাই ৩০ ইঞ্চি ৬১ গ্রাম কাগজ ব্যবহার হয়। প্রেস লাইনের যে কাউকে এ ডায়েরি দেখালে তারা একই কথা বলবে। স্যার কি করেছেন তারা জানেন না। তারা শুনেছেন, দুর্নীতি হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের তদন্তের আগেই বদলি
সূত্র আরও জানায়, এআইএসের কর্মকর্তাদের বিষয়ে মন্ত্রণালয় তদন্ত করবে বলে শোনা যাচ্ছে। কিন্তু টেকনিক্যাল পার্টিসিপেন্ট বাদল চন্দ্র সরকার, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সঞ্জিত কুমার ভৌমিক ও ক্যাশিয়ার মো. জুয়েল হোসেন লাখ লাখ ভুয়া বিল ভাউচারের দুর্নীতির কোনো কিছুর তদন্ত হচ্ছে না। বরং সংস্থার সব কর্মকর্তারা মিলে সিন্ডিকেট সদস্যদের রক্ষার চেষ্টা করছেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে সন্দেহের বশে কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক সুরজিত সাহা রায় গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ক্যাশ সহকারী মোখলেছুর রহমানকে বদলিযোগ্য পদ না হওয়া সত্ত্বেও কৌশলে রাঙামাটিতে সংস্থার আঞ্চলিক কার্যালয়ে বদলি করেন। যার স্মারক নম্বর ১২.০৫.০০০০.০১১.১৮.০০২.১৬.১৭৭৩। এই বদলিতে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত বাদল চন্দ্র সরকার, সঞ্জিত কুমার ভৌমিক ও ক্যাশিয়ার মো. জুয়েল হোসেন।
বদলির বিষয়ে ক্ষুব্ধ হন কৃষি তথ্য সার্ভিসের সব কর্মচারী। তারা পরিচালকের কাছে তার বদলির কারণ জানতে চান। পরিচালক জানান অফিসের স্বার্থে এটি করা হয়েছে। তার কিছু করার নেই। কর্মচারীদের অভিযোগ, শুধুমাত্র সন্দেহের বশে সম্পূর্ণ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে এ কাজ করেছেন পরিচালক।
এ ঘটনার পর ক্যাশ সহকারী মোখলেছুর রহমান ঢাকার প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১ আবেদনের মাধ্যমে একটি স্টে আদেশ (স্মারক নং এ টি-১/৮৬/২০২৪) নেন।
বাংলানিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আধুনিক প্রেস ভবনের জন্য গত ১ জানুয়ারি সংস্থার প্রেসের জন্য আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ২১ জন্য সেবাকর্মী ক্রয় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাস করিয়ে আনে কৃষি তথ্য সার্ভিস। যার স্মারক নম্বর ০৭.০০.০০০০.১৫৪.১৫.০০৬.০৯.৪৯৬। যেখানে কৃষি তথ্য সার্ভিসে আরও অনেক জনবল প্রয়োজন সেটি না করে পরিচালক সুরজিত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধাচরণ করলেই অবৈধ বদলি করছেন।
এর আগে সুরজিত সিন্ডিকেটের রোষানলের শিকার হন মো. আব্দুল্লাহ আল মুহিত নামে এক সাউন্ড রেকর্ডার। এ পদ বদলিযোগ্য না হলেও বরগুনার আমতলীতে কৃষি রেডিওর ব্রডকাস্টার হিসেবে সংযুক্তি দেখিয়ে তাকে বদলি করা হয়।
এর আগে তিনি ঢাকা এআইএসের সদর দপ্তরে সংযুক্তি দেখিয়ে টেকনিক্যাল পার্টিসিপেন্ট ও আইসিটি ইনচার্জ বাদল চন্দ্র সরকারকে রংপুর থেকে নিয়ে আসেন। কৃষি তথ্য কেন্দ্র সংগঠক শাহিনুর আক্তার কেয়াকে ময়মনসিংহ, ক্যাশিয়ার কাম অ্যাকাউনটেন্ট সুমাইয়া ইয়াসমিনকে সিলেট থেকে বদলি করিয়ে আনেন।
সিন্ডিকেটের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ কর্মচারী টেকনিক্যাল পার্টিসিপেন্ট বাদল চন্দ্র সরকার, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর সঞ্জিত কুমার ভৌমিক ও ক্যাশিয়ার মো. জুয়েল হোসেনের পদ বদলিযোগ্য হলেও আখের গোছাতে পরিচালক সুরজিত তাদের নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন।
স্টক দেওয়ার জন্য পরিচালকের তদবির
বাংলানিউজে ‘ফল সম্ভার বই না ছাপিয়ে বিল উত্তোলন’ প্রতিবেদন প্রকাশের পর সিন্ডিকেট সদস্যরা তড়িঘড়ি করে (১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪) বই ছাপিয়ে নিয়ে এসে প্রশিক্ষণ ও প্রয়োগ শাখার করিডোরে রাখেন। সূত্র জানায়, বইগুলো পেছনের তারিখে স্টক দেওয়ার জন্য সিন্ডিকেট তদবির চালিয়ে যাচ্ছে।
কৃষি তথ্য সার্ভিস প্রশিক্ষণ ও প্রয়োগ শাখার কর্মকর্তা মো. পারভেজের কাছে ‘২০২৩ সালের ফল সম্ভার বইটি আপনার শাখায় কবে আনা হয়েছে’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মনে নেই। অফিসে আসেন, তখন দেখে বলতে পারব।
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কৃষি তথ্য সার্ভিস পরিচালক ড. সুরজিত সাহা রায়ের সঙ্গে কথা বলতে কয়েকবার কল করে বাংলানিউজ। তিনি প্রথমে কয়েকবার কথা বলতে তালবাহানা করেন। পরে ‘বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে তাকে মেসেজ পাঠানো হলে তিনি কথা বলেন।
বাংলানিউজ ডায়েরি ছাপানোর বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা ডায়েরির কাজ শুরু করেছি। ২০ বাই ৩০ ইঞ্চি সাইজের কাগজের টেন্ডার দিয়েছি।
মোখলেছুর রহমানের বদলির বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সাংবাদিককে বলতে হবে কেন বদলি করেছি? রাঙ্গামাটিতে আমাদের লোক নাই। অফিস চলে না, তাই বদলি করা হয়েছে। নতুন লোক নিয়োগ হলে তাকে নিয়ে আসা হবে। এ সময় তিনি প্রতিবেদককে উল্টো প্রশ্নে করেন, বদলির বিষয়ে আপনি কীভাবে জানেন?
তদন্ত কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে সুরজিত সাহা বলেন, অনেক রকমের কমিটি হতে পারে। আমার অফিস থেকে তথ্য পাচার হয়। এ বিষয়ে আমি ব্যবস্থা নেব না কেন? আমার অফিস থেকে তথ্য পাচারে কিছু যায় আসে না। কিন্তু উদ্দেশ্য তো খারাপ। কৃষি তথ্য সার্ভিস নিয়ম মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সংশ্লিষ্ট বিষয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ে গিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশিরভাগ সময়ই আমাকে মন্ত্রণায় যেতে হয়। মন্ত্রণালয়ে গিয়েছি। এ সময় কৃষি তথ্য সার্ভিসের অনিয়মে বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো অসৎ উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।