ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৩ মার্চ, ২০২৪ ১১:১৩ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৩৭ বার
চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে স্বেচ্ছায় একীভূত হওয়ার সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ সময়ের মধ্যে এ সব ব্যাংক একীভূত না হলে ব্যাংকের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আগামী বছরের মার্চ থেকে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এক্ষেত্রে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে আন্তর্জাতিক পথ-পদ্ধতি মেনে একীভূত করা হবে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আগামী বছরের মার্চে নীতিমালা অনুযায়ী যারা দুর্বল তালিকায় পড়বে, তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক চর্চা অনুসরণ করে কোন পদ্ধতিতে ও কী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যাংক একীভূত হবে, তা নিয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
মুখপাত্র বলেন, যেসব ব্যাংক একীভূত হবে, ওই ব্যাংকগুলোর স্বাস্থ্য ভালো অডিট প্রতিষ্ঠান দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। এরপরই একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ব্যাংক একীভূত হলে তা হবে যথাযথ ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়। এই প্রক্রিয়ায় ভালো ব্যাংক যাতে দুর্বল না হয় ও দুর্বল ব্যাংক যাতে ভালো হয়— উভয় দিকেই লক্ষ্য রাখা হবে।
সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত ব্যাংকগুলোকে লাল, হলুদ ও সবুজ তালিকাভুক্তি প্রসঙ্গে মেজবাউল হক বলেন, এটা ব্যাংকের স্বাস্থ্য দেখার কোনো সঠিক পদ্ধতি নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন বিভাগ নানা সময়ে ব্যাংকের তালিকা করে থাকে। এই তালিকাটা ধারণাভিত্তিক। যেখানে কোন পরিস্থিতি হলে কী হবে, তা বিবেচনায় নেওয়া হয়। ব্যাংকের স্বাস্থ্য দেখার একমাত্র উপাদান নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, যা ক্যামেলস পদ্ধতির মাধ্যমে দেখা হয়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভালো অবস্থায় রয়েছে প্রাইম ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, সীমান্ত ব্যাংক, যমুনা ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ব্যাংক আলফালাহ, উরি ব্যাংক, এইচএসবিসি, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, সিটি ব্যাংক এনএ, হাবিব ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
ইয়েলো জোনে থাকা ২৯টির মধ্যে ২৬টি ব্যাংক হলো, আইএফআইসি ব্যাংক, মেঘনা ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, আল আরাফাহ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা, গ্লোবাল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, সাউথ বাংলা, মধুমতি, ঢাকা ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক ও পূবালী ব্যাংক।
রেড জোনে থাকা ব্যাংকগুলো হলো- বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ন্যাশনাল ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক ও এবি ব্যাংক।
৩টি ব্যাংক ইয়েলো জোনে থাকলেও রেড জোনের কাছাকাছি অবস্থান করছে এগুলো হলো, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), সোনালী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক।
চলতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক বৈঠক অংশ নেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এসময় তিনি খেলাপি ঋণ কমাতে ও ব্যাংকখাতে সুশাসন নিশ্চিত করার রোডম্যাপের অংশ হিসেবে– আগামী বছরের জানুয়ারি নাগাদ অন্তত ১০টি ব্যাংককে চাপ দিয়ে একীভূত করার পরিকল্পনার কথা জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানালেন, ব্যাংকগুলো নিজেরা একীভূত হওয়ার সিদ্ধান্ত না নিলে প্রয়োজনীয় নীতি, এ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক পথ ও পদ্ধতি অনুসরণ করে একীভূত করার কাজ শুরু করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।