ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১১:১৭ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭৮ বার
বান্দরবান: দুইদিনের মধ্যে বান্দরবানের তিন উপজেলায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে পুরো এলাকা।
পার্বত্য এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের এমন দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ডে জনমনে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে।
জেলার রুমা ও থানচি উপজেলার পর আলীকদমের ডিম পাহাড়ের ২৬ মাইল এলাকায় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি যৌথ তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে রাত সাড়ে ৮টায় থানচি বাজার ও থানাকে লক্ষ্য করে গুলি করে সশস্ত্র গোষ্ঠী। বান্দরবানের দুই উপজেলায় ১৭ ঘণ্টার মধ্যে দুটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা, অস্ত্র লুট ও অপহরণের ঘটনার পর এসব ঘটনা ঘটল।
স্থানীয় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সন্ত্রাসীদের একটি দল থানচি থানা লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ শুরু করে, পরে তারা বাজারের আশেপাশে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা একসঙ্গে তাদের প্রতিহত করলে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পিছু হটে যায়।
ঘটনার ভয়াবহতা বর্ণনা করে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন জানান, রাত সাড়ে আটটার দিকে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী থানচি বাজারে গুলি শুরু করে। পরে তারা থানায় গুলি চালায়। পুলিশ ও বিজিবি প্রতিরোধে পাল্টা গুলি ছোড়ে। শেষে রাত ১২টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ঘটনার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়।
রাত ১২টায় পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে পরে রাত পৌনে একটার দিকে বান্দরবানের আলীকদম থানার ডিম পাহাড় নামক স্থানের ২৬ মাইল এলাকার সড়কে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ তল্লাশি একটি চৌকিতে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।
আলীকদম থানার ওসি তৌবিদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রাতের আধারে সন্ত্রাসীরা গাড়িতে করে এসে তল্লাশি চৌকি ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে, বাধা দিলে তারা গুলি চালায়। এ সময় তল্লাশি চৌকিতে থাকা পুলিশ সদস্যরা ও পাল্টা গুলিবর্ষণ করেন, পরে হামলাকারীরা সেখান থেকে পিছু হটে। এ ঘটনায় পুলিশের কেউ হতাহত হননি। ঘটনার পরপরই নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।
থানচি এলাকার বাসিন্দা সুজন চক্রবর্তী জানান, রাত ৮টা নাগাদ বেশ কিছু সন্ত্রাসী অস্ত্র নিয়ে বাজারের পাশে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। আর সাধারণ জনগণ দোকান পাট বন্ধ করে পালিয়ে যায়। ঘটনার সময় বিদ্যুৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আতঙ্ক বাড়ে কয়েকগুণ।
এর আগে মঙ্গলবার রাতে বান্দরবানের রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ এবং পুলিশ ও আনসারের ১৪টি অস্ত্র লুটের ঘটনায় পার্বত্য এলাকার সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ জড়িত বলে স্থানীয় জনগণ ও বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করে।
বান্দরবানে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, হঠাৎ করে বান্দরবানে সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলার যাতে কোনো অবনতি না ঘটে, সেজন্য প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রুমা থেকে অপহৃত সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দীনকে বান্দরবান সদরের র্যাব ১৫ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে শুক্রবার বেলা ১১টায় সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে র্যাব।