ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৬:২১ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১২৭ বার
গ্রীষ্মকালের গরমে অনেকেরই পিঠ, বুক, ঘাড়ের মতো অংশে ব্রণ বের হয়। এই সময় ঘামের রোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে যায়।
এই কারণে অনেকের মুখে ও পিঠে ব্রণ হয়। এছাড়াও গরমে ত্বক থেকে অতিরিক্ত সিবাম নিঃসৃত হয়। ঘাম, অতিরিক্ত তেল, জীবাণু সবই ব্রণ হওয়ার জন্য দায়ী। কিন্তু প্রশ্ন হলো, গায়ে হওয়া ব্রণর হাত থেকে নিস্তার মিলবে কোন উপায়ে? সেই সমাধানও রয়েছে।
অনেকেই রয়েছেন, যারা সারা বছর গরম পানিতে গোসল করেন। কিন্তু গরমকালে এই ভুল করলে আপনারই বিপদ। গরম পানিতে গোসল করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হয়ে যায়। এতে ত্বকের জ্বালাভাব বাড়ে। পাশাপাশি দেহের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। গরমকালে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করাই ভালো। এতে ত্বকের সমস্যাও এড়ানো যায়। প্রয়োজনে ঈষদুষ্ণ পানিতে গোসল করতে পারেন।
ব্রণ হোক বা ঘামাচি, বাটা নিমপাতা গায়ে মেখে গোসল করলে গরমে ত্বকের যাবতীয় সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। নিমের মধ্যে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। এটি ত্বককে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। ব্রণর ওপর নিমপাতা বেটেও লাগাতে পারেন। এতে ব্রণর প্রদাহ কমবে।
ওজন কমাতে অনেকেই অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার পান করেন। এই ভিনিগার একইভাবে ব্রণর সমস্যা দূর করতেও সহায়ক। অ্যাপেল সাইডার ভিনিগারের মধ্যে অ্যাসিডিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে ত্বককে প্রদাহের হাত থেকে রক্ষা করে। পানির সঙ্গে অ্যাপেল সাইডার ভিনিগার মিশিয়ে নিন। এবার এতে তুলোর বল ডুবিয়ে ত্বকের ওপর বুলিয়ে নিন। ২০ সেকেন্ড রাখার পর সাধারণ পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
অ্যাসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করতে অনেকেই ভয় পান। কিন্তু টি ট্রি অয়েল ব্রণ ও ত্বকের প্রদাহ কমাতে দারুণ উপকারী। এই অ্যাসেনশিয়াল অয়েলের মধ্যে অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান রয়েছে যা পিম্পেল, ফুসকুড়ি, ব্রণ ও অন্যান্য ত্বকের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। সংবেদনশীলে সরাসরি টি ট্রি অয়েল লাগানো যায় না। এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল কিংবা বাদাম তেলের সঙ্গে টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে আপনি ত্বকের ওপর লাগাতে পারেন।
অ্যালোভেরা জেল হলো এমন একটি ঘরোয়া প্রতিকার যা বিকল্প খুঁজে পাওয়া কঠিন। অ্যালোভেরা জেলের মধ্যে শক্তিশালী অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ব্রণর সমস্যা কমায়। নিখুঁত ত্বক পেতে গেলে আপনাকে প্রতিদিন অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে হবে। তবে আপনাকে ভেষজ অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে হবে। দিনে দুই বার মুখে অ্যালোভেরা জেল মাখলেই উপকার পাবেন।
রসুনের ওষুধিগুণ সম্পর্কে কমবেশি সবার পরিচিত। রসুনের মধ্যে প্রদাহ কমানোর বৈশিষ্ট্য রয়েছে। সুতরাং, রোজের ডায়েটে রসুন রাখলে আপনি শরীরের পাশাপাশি ত্বকের যাবতীয় সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন। আর যদি চটজলদি ব্রণর সমস্যা থেকে ছুটি পেতে চান, তাহলে এক কোয়া রসুন থেঁতো করে ব্রণর ওপর লাগান।
গরমকালে বডি লোশন ব্যবহার করেন না? এটাই কিন্তু ভুল করেন। যতই ঘাম হোক কিংবা ত্বক তৈলাক্ত হোক, গোসলের পর ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনা জরুরি। তাই গোসল শেষে হালকা ময়েশ্চারাইজার মাখুন। প্রয়োজনে অ্যালোভেরা জেলও মাখতে পারেন। এতে ত্বক হাইড্রেট থাকবে।
সপ্তাহে অন্তত একদিন ত্বক এক্সফোলিয়েট করুন। এতে ত্বকের উপরিতলে জমে থাকা মৃত কোষ পরিষ্কার হয়ে যাবে। স্ক্রাব ব্যবহার করলে এটি ত্বকের গভীরে জমে থাকা ময়লা, জীবাণুও পরিষ্কার করে দেয়। এতে ব্রণর সমস্যাও কমে।
অনেক সময় আঁটোসাঁটো পোশাক পরলে ত্বকের ওপর ঘাম জমতে থাকে। সেখানে জমা হতে থাকে ময়লা ও জীবাণু। এখান থেকে বাড়ে ব্রণর সমস্যাও। তাই এই গরমে সুতির ঢিলেঢালা পোশাক করুন। আরামদায়ক, হালকা জামাকাপড় পরলে সহজেই এড়াতে পারবেন ব্রণর সমস্যা।