ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১ মে, ২০২৪ ১২:৪২ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৩৫ বার
বায়ার্ন-আর্সেনাল ও সিটি-রিয়ালের মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগ শেষেই নির্ঘাত ফুটবল ভক্তদের আর তোর সই ছিল না। কারণ এবার ইউরোপের ফুটবল ক্লাবগুলোর শ্রেষ্ঠত্বের আসর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালেই যে পাওয়া যাবে ফাইনালের স্বাদ। ২০১৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের পর আবারো মুখোমুখি ইউরোপের দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদ। হাই ভোল্টেজ এই ম্যাচটিতে ভক্তদের হতাশ করেনি কোন দলই। দুর্দান্ত খেলা উপহার দিয়ে ড্রতেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে দুই দলকে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাতে জার্মানির মিউনিখের আলিয়াঞ্জ আরেনাতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে মুখোমুখি হয়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদ। সেমিফাইনালের টানটান উত্তেজনাপূর্ণ খেলায় জয়ী হয়নি কোন দলই। ২-২ গোলে শেষ হয়েছে প্রথম লেগ। বায়ার্নের হয়ে লিরয় সানে ও হ্যারি কেইন গোল করেন আর রিয়ালের হয়ে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র একাই দুই গোল করেন।
আলিয়াঞ্জ আরেনার এই লড়াই যে জমজমাট হবে তা ম্যাচ শুরুর আগেই স্পষ্ট ছিল। এবার বুন্দেসলিগায় লেভারকুসেনের কাছে শিরোপা খোয়ালেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কেইন-মুলাররা যে ছেড়ে কথা বলবে না তা সহজেই বোঝা যাচ্ছিল। ম্যাচের শুরুটাও সেই কথাটিকেই আবার নতুনভাবে প্রকাশ করল।
এমনিতেই বেশ ভঙ্গুর দশায় জার্মানির সবচেয়ে বিখ্যাত ক্লাব টি। ২০১১-১২ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো ট্রফিহীন থাকতে হতে পারে ব্যাভারিয়ান জায়েন্টদের। অনাকাঙ্ক্ষিত এই রেকর্ডের হাত থেকে মুক্তি পেতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শেষ ভরসা টমাস টুখেলের শিষ্যদের।
এই কথা মাথায় রেখেই নিজেদের ঘরের মাঠে প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণ শুরু করে বায়ার্ন। জার্মান ফরোয়ার্ড লিরয় সানে যদি সুযোগটি কাজে লাগাতে পারতো তবে প্রথম মিনিটেই এগিয়ে যেত স্বাগতিকরা।
সানের ওই সুযোগ বাদেও প্রথম ২০ মিনিটে একের পর এক আক্রমণ করে যায় কেইন-মুসিয়ালারা। তাদের আক্রমণের চোটে দিশেহারা থাকতে হয় রিয়ালের রক্ষণভাগকে। অবশ্য দক্ষতার সাথেই আক্রমণ গুলো ঠেকিয়ে দেয় রিয়ালের রক্ষণ ভাগ ও গোলকিপার আন্দ্রি লুনিন। উল্টো বায়ার্নের আক্রমণ ঠেকিয়ে ২৪ মিনিটের সময় রিয়াল গোল দিয়ে বসে।
প্রায় মাঝ মাঠের কাছাকাছি জায়গা থেকে বায়ার্নের চার ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে দুর্দান্ত এক থ্রো বল বাড়ান টনি ক্রুস। আর সেই বলকে দখলে নিয়ে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে জালের ঠিকানা দেখান ভিনিসিয়ুস। এই গোলে ইতিহাসের চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে গোল করার কীর্তি গড়েছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।
রিয়ালের গোলের আগ পর্যন্ত পুরো সময় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়েও গোল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বেশ হতাশ মনে হচ্ছিল বায়ার্নের খেলোয়াড়দের । গোলের পর রিয়ালও ধীরে ধীরে ম্যাচে নিজেদের ছাপ রাখা শুরু করে। ফলে জমে উঠে ম্যাচটি। দুই দলের গোল আদায়ের চেষ্টায় অবশ্য প্রথমার্ধে সফল হয়নি আর কোন দল। ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবচেয়ে বেশি ট্রফি জয়ী দল।
বিরতির পর রিয়ালের চেষ্টা ছিল ম্যাচের নিয়ন্ত্রণটি পুরোপুরি নিজেদের হাতে নেওয়ার। এরমধ্যে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হওয়ার তিন মিনিটের মাথায় টনি ক্রুসের দুর্দান্ত এক শট থেকে ঠেকিয়ে দেন বায়ার্ন গোলকিপার ম্যানুয়েল ন্যয়ার। এর কিছুক্ষণ পরেই সমতাসূচক গোল পেয়ে যায় স্বাগতিকরা।
ম্যাচের ৫৩ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে বায়ার্নকে সমতায় ফেরান লিরয় সানে। ডান প্রান্তে পাওয়া বলে রিয়ালের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে জোরালো এক শটে লুনিনকে কাছের পোস্টে পরাস্ত করেন তিনি।
এই গোলের ৪ মিনিট পরেই এগিয়ে যায় কেইন-সানেরা। বক্সের ভেতর জামাল মুসিয়ালাকে লুকাস ভাসকেজ ফাউল করে পেনাল্টি উপহার দেয় বায়ার্নকে। স্পট কিক থেকে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজের অষ্টম গোল করেন হ্যারি কেইন।
এগিয়ে যাওয়ার পর দারুণ কিছু আক্রমণে তৃতীয় গোলের সন্ধান করতে থাকে বায়ার্ন। রিয়ালের ওপর বেশ চাপ তৈরি করে টুখেলের দল। অন্যদিকে বায়ার্নের দাপটে সুযোগ পাচ্ছিল না ভিনিসিয়ুস-রদ্রিগোরা। তবে ম্যাচের ৮৩ মিনিটে বক্সে বায়ার্ন ডিফেন্ডার কিম মিন জায়ে রদ্রিগোকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় রিয়াল। স্পট কিক থেকে নিজের দ্বিতীয় গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান ভিনি।
সমতায় ম্যাচ শেষ হওয়ায় সব চোখ এখন থাকবে ৮ মে রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে।