ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৭ জুন, ২০২৪ ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৯৯ বার
সুনামগঞ্জ: ভারত থেকে অব্যাহতভাবে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি হু হু করে বাড়ছে সুনামগঞ্জের সব নদীর পানি। এতে করে ডুবে গেছে জেলার কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের সড়ক ও বসতবাড়ি।
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে ছয় লাখের অধিক মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার ২৬টি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। জেলার দোয়ারা বাজার, ছাতক উপজেলায় ঢলের পানিতে বেড়িবাঁধ ভেঙে সুরমা, লক্ষ্মীপুর,বাংলা বাজার ইউনিয়নের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জগন্নাথপুর, ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দোয়ারা বাজার উপজেলার বোগলা বাজার ইউনিয়নের ক্যাম্পের গাঁট নামক স্থানে চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সুরমা ইউনিয়নের টিলাগাও-টেংরাটিলা যাতায়াত রাস্তা বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। মহব্বতপুর বাজার-লিয়াকতগঞ্জ বাজার সড়কের নোয়াপাড়া বেড়িবাঁধ ভেঙে উপজেলা সদরের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ২৮টি ও সুরমা ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম, বাংলা বাজার ইউনিয়নের পেকপাড়া, চৌধুরীপাড়া, মৌলারপাড়, চিলাইপাড়, পুরান বাশঁতল গ্রামের অনেক ঘর-বাড়িতে পানি ঢুকে ক্ষয়ক্ষতিসহ দুই লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছে। এসব গ্রামের কৃষকের পুকুর ও বীজ তলা নষ্ট হয়েছে।
চিলাইপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শামিম আহমেদ বলেন, পানিতে চরম দুর্ভোগ আছি। সোমবার (১৬ জুন) কোরবানির ঈদ আর এখন পাহাড়ি ঢলের পানির জন্য আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের খরচার হাওর পাড়ের অধিকাংশ বসতভিটার সামনে পানি চলে আসায় বন্যার আতঙ্কে আছে বলে জানিয়েছেন কৃষক জমির আলী।
জেলার তাহিরপুর বিশ্বম্ভরপুর সুনামগঞ্জ সড়কের দুর্গাপুর ও শক্তিয়ারখলা সড়কে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকা ধর্মপাশা, মধ্যনগর উপজেলাসহ পাঁচটি উপজেলার মানুষজন পড়েছে চরম দুর্ভোগ। জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার ভাটি এলাকায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার কয়েকটি গ্রামের গ্রামীণ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা খরচার হাওরের কৃষক সাদেক আহমেদ জানান, এবার ঈদের আনন্দ নেই পাহাড়ি ঢলের পানির জন্য সব শেষ। কখন জানি পানি বেড়ে গিয়ে বাড়িঘরে ঢুকে পড়ে এই আতঙ্কে আছি। গত ২০২২ সালে এক ঘণ্টার ব্যবধানে বসতবাড়ি পানিতে ডুবে যায়। ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয়েছিল।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টির কারণে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানিয়েছেন, পানি বৃদ্ধি পাওয়ার সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। যে কয়েকটি উপজেলার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে প্রয়োজন সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।