ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২০ জুন, ২০২৪ ০৯:১১ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ১০৬ বার
সিলেট: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির মাঝেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চোরাই পথে ভারত থেকে চিনি পাচার অব্যাহত রেখেছে চোরাকারবারি চক্র।
ট্রাকে করে পাথরের নিচে লুকিয়ে আনা ২৭৫ বস্তা চিনি ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে। এ ঘটনায় ট্রাকচালক আটক হলেও অধরা থেকে গেছেন চিনি চোরাচালানের হোতারা।
বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় নগরের উপকণ্ঠ শাহপরান (র.) থানাধীন সুরমা বাইপাস সংলগ্ন বিকেএসপির সামনের সড়ক থেকে ট্রাক ভর্তি চিনির চালানটি জব্দ করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, সিলেট-তামাবিল সীমান্ত এলাকা থেকে নগরের দিকে আসা একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-১১-৮৮৫০) থামানোর জন্য সিগন্যাল দিলে চালক দ্রুত পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় ধাওয়া করে ট্রাকটি থামিয়ে ট্রাকচালক মো. রুবেল মিয়াকে (৩৫) আটক করে পুলিশ। রুবেল হবিগঞ্জ সদর উপজেলার নিজামপুর গগভরাঙ্গারচর গ্রামের আকসির মিয়ার ছেলে। আটক রুবেল ভারতীয় চিনির কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
ট্রাকটিতে তল্লাশি চালিয়ে তিন/চার সাইজের পাথরের প্রায় তিন ইঞ্চি স্তরের নিচে ত্রিপল দিয়ে মোড়ানো ২৭৫ বস্তা চিনি পাওয়া যায়। প্রত্যেক বস্তার গায়ে ইংরেজিতে MANUFACTURED AT ATHANI SUGAR LIMITED, Maharashtra, Indiaসহ অন্যান্য লেখা আছে। প্রতি বস্তায় প্রায় ৪৯ কেজি করে মোট ১৩ হাজার ৪৭৫ কেজি ভারতীয় চিনি রয়েছে। প্রতি কেজি চিনির মূল্য ১২০ টাকা ধরে ১৬ লাখ ১৭ হাজার টাকার চিনি জব্দ দেখানো হয়।
এ ঘটনায় আটক মো. রুবেল মিয়াকে আসামি করে শাহপরান (র.) থানার মামলা (নং-২১ (০৬)২০২৪) করা হয়েছে। তবে একমাত্র চালক ছাড়া আর কাউকে মামলায় অভিযুক্ত করা হয়নি।
সূত্র জানায়, শাহপরান (র.) থানা পুলিশ এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ভারতীয় চিনির চালান জব্দ করলেও কেবল চালক ব্যতীত চক্রের মূল হোতাদের কাউকে আটক করতে পারেনি কিংবা মামলায়ও অন্য কাউকে আসামি করেনি। এমনকি মামলায় চোরাচালানে ব্যবহৃত ট্রাকের মালিককেও আসামি করা হয়নি। এছাড়া জব্দকৃত ট্রাক মালিকদের বিরুদ্ধেও নেওয়া হয় না কোনো ব্যবস্থা। যে কারণে চোরাচালান চক্রে জড়িতরা আড়ালেই থেকে যান।
এ বিষয়ে শাহপরান (র.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, মামলায় কেবল চালককে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি রাখা হয়নি। কারণ চালক কারো নাম বলছেন না।
আগে অনেকগুলো চিনির চালান জব্দ হলেও নেপথ্যের হোতাদের না ধরতে পারার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আটক চালকরা নেপথ্যে জড়িতদের নাম বলেন না। যে কারণে মামলায় কেবল আটক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
তবে চোরাচালানে ট্রাক ধরা পড়লে মালিক আসামি না হওয়া প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ট্রাক তো ট্রান্সপোর্ট থেকে ভাড়া নেওয়া হয়। আর এখন তো চিনি চোরাচালান অহরহ। যে কারণে ট্রাকমালিকদের দায়ী করা যাচ্ছে না। কারণ ট্রাক ভাড়ায় চলে।
সূত্র জানায়, চিনি চোরাচালানে কে বা কারা জড়িত, এটা বের করা পুলিশের পক্ষে অসম্ভব না। কিন্তু রহস্যজনক কারণে মামলা হলেও এখানেই নিরবতা পালন করা হয়। আগেও শাহপরান থানা এলাকায় বড় বেশ কয়েকটি চিনির চালান জব্দ করা হলেও কে বা কারা জড়িত, তা উঠে আসেনি। আর চোরাই মালামাল বহলে জব্দকৃত ট্রাকের মালিককে তাও খোঁজ নেওয়া হয় না।
এর আগে গত ১৪ জুন দুপুরে একই কায়দায় ট্রাকে পাথরের লেয়ারের নিচে করে পাচারকালে ২০০ বস্তায় ৯ হাজার ৮০০ কেজি চিনির চালান জব্দ করা হয়। যার বাজার মূল্য ছিল ১১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। এ ঘটনায় ট্রাকচালক সালাহ উদ্দিন ও হেলপার মহসীন আটক হন। তাদের অভিযুক্ত করে মামলা হলেও নেপথ্যের জড়িতরা অভিযুক্ত হননি।