ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৩ জুন, ২০২৪ ১২:৪৫ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১৪০ বার
নিজস্ব প্রতিবেদক: আলোচিত ও বিতর্কিত নির্মাণ প্রতিষ্ঠান রাকিনের নির্মাণাধীন ঢাকার কাফরুলস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন প্রকল্প বিজয় রাকিন সিটির নির্মাণ কাজ নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার ১৪ বৎসর পরও শেষ না করতে পারায় এ ডেভেলপার কোম্পানির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম ও শত কোটি টাকার দুর্নীতি অভিযোগ উঠে আসে ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের নিকট হতে।এর প্রেক্ষিতে সরজমিনে দেখা যায় সিটিতে এখনো অসমাপ্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি এমন কাজ: রাকিন হতে ক্রয় সূত্রে ফ্ল্যাট ক্রেতাদের সাথে বিভিন্ন ছলচাতুরী ও তালবাহানা করে ফ্ল্যাটের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরও রেজিষ্ট্রেশন প্রদান না করা, প্রধান ২য় গেটটি মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্যসহ নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ায় সিটিতে বহিরাগত যে কেউ হরহামেশাই ঢুকে চুরি, ছিনতাই, মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করছে, এই অপরাধ শনাক্তকরণে রাকিন পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন না করায় স্থানীয় প্রশাসনকে বিপাকে পরতে হচ্ছে , সিটির নির্মাণ কাজের জন্য ভারী নির্মাণ সামগ্রী বহনকারী যানবাহন চলাচল শেষে রাস্তাসমুহ চুড়ান্ত করার প্রতিশ্রুতি থাকা সত্বেও এখনো রাস্তার কাজ শুরু না করায় অধিকাংশ রাস্তা খানা খন্দ থাকায় প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে ও গাড়িরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে, মসজিদের মিম্বরসহ মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ না করায় বাসিন্দাদের ইবাদত বন্দেগি করা খুবই কষ্টকর,নির্মাণ কাজ নিম্নমানের হওয়ায় ফ্ল্যাট সমূহে বসবাস অনুপযোগী হলে নির্মাণ ত্রুটি সমাধানের প্রতিশ্রুতি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি, ফলে ফ্ল্যাটের নির্মাণ ত্রুটির কারনে বাসিন্দারা নানান সমস্যায় জর্জরিত , সোসাইটির শনাক্তকৃত ৪৮ নির্মাণ ত্রুটি রাকিনে জমা করার পর তা সমাধানের প্রতিশ্রুতি মিললেও তা সমাধানের কোন উদ্যোগ রাকিন গ্রহণ করেনি, সুইমিংপুলের কাজ সমাপ্ত করে ব্যবহার উপযোগী না করায় সাঁতার শিখতে না পারায় ছেলে মেয়েদের স্বাস্থ্য গঠন ও মানুষিক বিকাশ হচ্ছে না ও বাসিন্দাদের মানুষিক প্রশান্তির ও বিকাশের একমাত্র স্থল ১৪ তলা বিশিষ্ট ক্লাব ভবনের কাজ রাকিন শেষ করেন নি,বি৩ ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ না করে ও বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন না করে অন্য ভবন থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ সাময়িক প্রদান করায় অন্য ভবনের বিদ্যুৎ লাইনের উপর চাপ পরে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা প্রতি নিয়তই ঘঠায় ঐ ভবনের বাসিন্দারা আতঙ্ক ও দুর্ভাগের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছে,নকশায় সবুজজায়ন থাকলেও রাকিন এ ব্যপারে কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় সোসাইটির উদ্যোগে পরিকল্পিতভাবে বাসিন্দাদের মনে স্বস্তি যোগাতে স্বল্প পরিসরে বৃক্ষ রোপন করা হয়।ইহা ছাড়াও নির্মাণ কাজ শুরু করেননি ও চুক্তি অনুসারে ক্ষতিপূরণ প্রদানে উদ্যোগ গ্রহণ করেনি তা হলো স্কুল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু না করায় বাসিন্দাদের স্কুল পড়ুয়া ছেলে মেয়েদেরকে সময় ও অর্থ অপচয় করে ঝুঁকি নিয়ে দূরদূরান্ত লেখাপড়া করার জন্য যেতে হচ্ছে ও মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতিকে বিলম্বে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করায় চুক্তি অনুসারে প্রায় শত কোটি টাকা পাওনা হলেও আজ অব্দি পরিশোধে কোন উদ্যোগ রাকিন গ্রহণ করে নি।হস্তান্তর না হওয়া স্থাপনা:বৈদ্যুতিক জেনারেটর,ফায়ার ফাইটিং,রাস্তা,ফুটপাত,মাঠ,লিফ্ট,ক্লাব ভবন,মসজিদ,সুয়ারেজ ড্রেনেজ ব্যবস্থা,এসটিপি ষ্টেশন ইত্যাদি। এ লক্ষ্যে সিটির একাধিক বাসিন্দা চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে জানান নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় সিটিতে আমরা নানান প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মানবেতর জীবনযাপন করছি।ইহা থেকে পরিত্রাণে সমিতি ও সোসাইটির চেষ্টার পাশাপাশি ভুক্তভোগী বাসিন্দা হিসেবে নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করতে অনুরোধ করার জন্য রাকিন অফিসে যাইলে রাকিন অফিসে কর্মরত কর্মকর্তারা বাসিন্দাদের সাথে রুঢ় আচরণ করাসহ তাদের নিরাপত্তা প্রহরী ও পোষ্য পালিত ক্যাডার বাহিনীকে দিয়ে তাদের অফিসে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে থাকে যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত এবং তাদের কর্মকর্তারা নানান অজুহাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ।
সিটিতে বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধারাও আক্ষেপ প্রকাশ করেন যে, ৯ মাসে দেশ স্বাধীন করলেও এক যুগ পার হয়ে ১৪ বছরেও মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন প্রকল্পের কাজ রাকিনকে দিয়ে শেষ করিয়ে আবাসন প্রকল্পটি বুঝে নিতে পারিনি, এই অপূর্ণতা নিয়ে মনে আফসোস রেখে আমাদের ৭১ এর রণাঙ্গনের সাথী অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করেছে, আমরাও জীবনের শেষ সময়ে এসে সিটির অসমাপ্ত কাজ শেষ হওয়া দেখে যেতে পারবো কি না জানিনা। দীর্ঘ একযুগ পার হওয়ার পরও নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ার কারণ ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের কাছে জানতে চাইলে সকলের বক্তব্যে স্পষ্ট যে সিটির কাজ অসমাপ্ত থাকার পিছনে রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের সীমাহীন দুর্নীতি দায়ী। দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকেসহ বাসিন্দাদের দুর্ভোগে ফেলেছেন রাকিনের সেই সকল কর্মকর্তাদের দুর্নীতি পুঙ্খানুপুঙ্খ রুপে খতিয়ে অনুসন্ধান করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি উঠে আসে।একইসাথে জমির মালিক প্রতিষ্ঠান মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কল্যাণ সমিতিও প্রকল্পের ২য় গেটের সম্মুখে বড় সাইজের ব্যানার লাগিয়ে রাকিনের দুর্নীতিগ্রস্ত সকল কর্মকর্তার শাস্তি দাবিসহ দ্রুত ২য় গেটসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য নির্মাণের আহবান জানাতে দেখা যায়।দুর্ভোগ হতে সহসাই পরিত্রাণ না হলে পরিত্রাণের লক্ষ্যে স্বাধীনতার স্বপক্ষীয় সরকারের হস্তক্ষেপ চেয় বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী একটি আন্দোলন কর্মসূচি পরিচালনা কমিটি নানামুখী কঠোর কর্মসূচি গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে রাকিন অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করতে রাকিন অফিসে যাওয়া হলে রাকিন অফিস তালা ঝুলানো অবস্থায় পাওয়া যায় এবং রাকিনের নিযুক্ত সেনা কল্যাণ সংস্থার সিকিউরিটি গার্ড ব্যতীত রাকিনের কোন কর্মকর্তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি।