ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

হলি আর্টিজানের ৭ আসামির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১ জুলাই, ২০২৪ ০৯:২০ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৮৯ বার


 হলি আর্টিজানের ৭ আসামির বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত

ঢাকা: রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে আলোচিত সন্ত্রাসী হামলা মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে সাতজনকে হাইকোর্টের দেওয়া আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না, তা রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

রোববার (৩০ জুন) এ তথ্য জানিয়েছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন।

 

 

গত বছরের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ আসামিদের আপিল ও জেল আপিল এবং ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) খারিজ করে রায় দেন।

আদালত রায়টি বাংলায় ঘোষণা করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আরিফুল ইসলাম ও আমিমুল এহসান। আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন এস এম শফিকুল ইসলাম।

এর আগে ১১ অক্টোবর বুধবার শুনানি শেষে রায়ের জন্য ৩০ অক্টোবর দিন রাখা হয়েছিল।

গত বছরের জানুয়ারিতে মামলাটির শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে। এরপর গত ৩ মে থেকে শুনানি শুরু হয়।

এর আগে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য এই বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন প্রধান বিচারপতি। সে অনুযায়ী এটি কার্যতালিকায় আসে।  

রোববার অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, এ আসামিদের জন্য—যারা ধর্মের নামে, উগ্রবাদিতার নামে নিরপরাধ দেশি-বিদেশি মানুষদের হত্যা করেছিল তাদের জন্য মৃত্যুদণ্ডই যথার্থ ছিল।  কিন্তু কী কারণে হাইকোর্ট বিভাগ তাদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন তা পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি পেলে জানতে পারবো এবং রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানাবো। এরপর আপিল করা হবে কি না, নির্দেশনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।  

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করেন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (আত্মঘাতী) সদস্যরা। বিদেশিদের মধ্যে ছিলেন ৯ ইতালীয়, ৭ জাপানি, ১ ভারতীয়, ১ বাংলাদেশি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিক। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ হারান বনানী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম।

হামলার পর জিম্মিদশার অবসানে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি। তারা হলেন- মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন নব্য জেএমবির আরও আট সদস্য।

ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান একজনকে খালাস দিয়ে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।

‌মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসা‌মিরা হ‌লেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ। খালাস পান মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।

এছাড়া অভিযানে নিহত হওয়া আসামিদের মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজা করিমও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান।

ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালত যখন আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেন তখন ওই দণ্ড কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক মামলার সব নথি হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন, যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত।  

নথি আসার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে। এরপর বেঞ্চ নির্ধারণ হলে শুনানি শুরু হয়।


   আরও সংবাদ