ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩ জুলাই, ২০২৪ ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৯৪ বার
অস্ট্রিয়াকে হারিয়ে শেষ আটের টিকিট নিশ্চিত করলো তুরস্ক। লাইপজিগে মঙ্গলবার (০২ জুলাই) রাতে শেষ ষোলোর ম্যাচে ২-১ গোলের জয় পায় তুর্কিরা।
ম্যাচ শুরু হতেই অস্ট্রিয়ার জালে জড়িয়ে এগিয়ে যায় তুরস্ক। সেই ধাক্কা সামলে পাল্টা আক্রমণ শুরু করল তারা।
দ্বিতীয়ার্ধে ধার বাড়াল আরও। তার মাঝেই দ্বিতীয় গোল হজম করে বসলো গ্রুপ পর্বে চমক জাগানো অস্ট্রিয়া। এরপর ব্যবধান কমিয়ে, চাপ ধরে রাখলেও শেষ রক্ষা হলো না তাদের। মেরিহ দেমিরালের জোড়া গোলে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার-ফাইনালে পা রাখলো তুরস্ক।
২০০৮ সালের পর ইউরোয় শেষ ষোলোর বাঁধা পার করলো তুরস্ক। পুরো ম্যাচে বল দখলে এগিয়ে থাকা অস্ট্রিয়া দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে একচেটিয়া আধিপত্য করে। প্রথম অর্ধে গোলের উদ্দেশ্যে ছয়টি শট নিয়ে একটিও লক্ষ্যে রাখতে না পারা দলটি দ্বিতীয়ার্ধে আরও ১৫টি শট নেয়, লক্ষ্যে থাকে পাঁচটি। কিন্তু সমতাসূচক গোলের অপেক্ষা তাদের আর শেষ হয়নি। যেখানে তুরস্কের পাঁচ শটের তিনটি থাকে লক্ষ্যে, যার দুইটিই সফল।
খেলা শুরুর প্রথম ৩০ সেকেন্ডেই প্রতিপক্ষের আক্রমণের চেষ্টা রুখে দিয়ে পাল্টা আক্রমণে ওঠে তুরস্ক। আদায় করে নেয় কর্নার। ওই কর্নার থেকেই ৫৮ সেকেন্ডের মাথায় এগিয়ে যায় তারা। আর্দা গিলেরের কর্নারে উড়ে আসা বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় অস্ট্রিয়া। ডিফেন্ডার স্টেফানের পায়ে লেগে বল প্রায় গোললাইন পেরিয়েই গিয়েছিল, একেবারে শেষ মুহূর্তে কোনোমতে আটকান গোলরক্ষক। কিন্তু বল পেয়ে যান গোলমুখেই মেরিহ দেমিরাল। জোরালো শটে গোলটি করেন আল আহলির এই ডিফেন্ডার।
দুই মিনিটের মধ্যে সমতায় ফেরার দারুণ সুযোগ তৈরি করে অস্ট্রিয়া। গত মার্চে স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ৬ সেকেন্ডে বল জালে পাঠিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে দ্রুততম গোলের রেকর্ড গড়া ক্রিস্টফ বমগার্টনারের শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে গেলে এগিয়ে থাকে তুরস্ক। একটু পর কর্নার থেকে অস্ট্রিয়া ফের গোলের দারুণ সম্ভাবনা জাগায়। কিন্তু গোলমুখে বল পেয়েও প্রয়োজনীয় টোকাটা দিতে পারেননি কেউ।
প্রথম ১০ মিনিট পর দুই দলের খেলায়ই গতি একটু কমে যায়। অস্ট্রিয়া বেশি আক্রমণে গেলেও বিরতির আগে সুযোগ আর তৈরি করতে পারেনি। ওই গোল ছাড়া প্রথমার্ধে দুই দলের আর কোনো শটই লক্ষ্যে ছিল না।
এদিকে সমতায় ফিরতে মরিয়া অস্ট্রিয়া দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১০ মিনিটে আরও চারটি গোলের জন্য শট নেয়, একটি লক্ষ্যেও থাকে। কিন্তু মার্কো আর্নাউতোভিচের শটটি রক্ষণভাগে প্রতিহত হয়।
প্রতিপক্ষের চাপের মুখেই পাল্টা আক্রমণে একটি কর্নার পায় তুরস্ক। ৫৯তম মিনিটে এই কর্নার থেকেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে তারা। রিয়াল মাদ্রিদের তরুণ মিডফিল্ডার গিলেরের কর্নারে দুই ডিফেন্ডারের মাঝে সবার ওপরে লাফিয়ে হেডে দ্বিতীয় গোলটি করেন দেমিরাল।
প্রথম পর্বে দারুণ পারফরম্যান্সে পোল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে গ্রুপ সেরা হওয়া অস্ট্রিয়া এবার পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি। কর্নারে সতীর্থের হেড পাস ছয় গজ বক্সে পেয়ে নিখুঁত টোকায় ব্যবধান কমান ফরোয়ার্ড মিখায়েল।
গোল পেয়ে যেনো আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে অস্ট্রিয়া। একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে রাখে তারা। চার মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল তারা। কিন্তু বমগার্টনারের হেড দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক মের্ট গুনোক।
ওই সেভের পর গুনোককে ঘিরে সতীর্থদের উচ্ছ্বাসের দৃশ্যই বলে দিচ্ছিলো এর গুরুত্ব কতখানি। একটু পরই বাজে শেষের বাঁশি। হতাশায় নুয়ে পড়ে অস্ট্রিয়ার খেলোয়াড়রা। শুরু হয় তুর্কিদের উদযাপন।
উল্লেখ্য, বার্লিনে আগামী শনিবার সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে তুরস্ক। অন্য ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে সুইজারল্যান্ড।