ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩১ জুলাই, ২০২৪ ১৫:৫৬ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭২ বার
বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাট জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সিংহ'র অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার (২৯ জুলাই) থেকে তার বিরুদ্ধে আনিত লিখিত অভিযোগের তদন্ত করছেন খুলনা জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শরিফুল ইসলাম। রামপালে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প এলডিডিপি'র প্রকল্পের পিজি গ্রুপের সদস্য মু. মাসুম বিল্লাহ ও মনোয়ারা খাতুনসহ কয়েকজন সদস্যের অভিযোগে জানা গেছে, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জয়দেব কুমার সিংহ রামপালে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন কালে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন। এই ঘটনায় উপকার ভোগীরা প্রতিকার চেয়ে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখত অভিযোগ দায়ের করেছেন। লিখিত ওই অভিযোগে তারা জানান, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রানী সম্পদ দপ্তরের আওতাধীন এলডিডিপি প্রকল্পটি বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।
এই পিজি গ্রুপের মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষনের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
জনপ্রতি নতুন পিজি গ্রুপের সদস্যদের কাছ থেকে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেওয়া হয়। প্রশিক্ষনে ৩০ জন করে মোট ১০ টি পিজি গ্রুপের সদস্যদের কাছ থেকে খাবার বাবদ মোট ৯০ হাজার টাকা, নিম্ম মানের মুরগির ঘর নির্মান করে ৬০ টি পরিবারের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা করে মোট ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, ছাগলের ঘর নির্মাণে ৩০ টি পরিবারের কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা করে মোট ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, গৃহপালিত পশুদের ঘাসের বরাদ্দকৃত অনুদানের টাকা থেকে ১০ জনের কাছ থেকে ৫ শত টাকা করে মোট ৫ হাজার টাকা, সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত অফিসের ঔষধ খামারিদের মাঝে বন্টন না করে তা বাইরে বিক্রি করা, প্রশিক্ষনে প্রকৃত খামারিদের নাম না দিয়ে স্বজনপ্রীতি করে অফিসের আত্মীয় স্বজনদের দিয়ে প্রশিক্ষন করানো, দুপুরের খাবার বাবদ বরাদ্দকৃত টাকা থেকে ১৫ টি প্রশিক্ষনে ১১ জন সদস্যদের কাছ থেকে মোট ৪ লক্ষ ৪৫ হাজার ৫ শত টাকাসহ বিভিন্ন খাত থেকে সর্মমোট ১৫ হাজার ২০০ টাকা, খাবার বাবদ ১ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা, ১১ টি পিজি থেকে ১ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা আত্মসাত করেন ওই কর্মকর্তা। তার এমন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করায় এলডি ডিপি'র সদস্যদের সদস্য পদ বাতিল করারও হুমকি দেন মৎস্য ডিএলও জয়দেব কুমার সিংহ।
তিনি উল্টো এলডিডিপি প্রকল্পের পিজি গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে নিজের অপকর্ম আড়াল করতে রামপাল থানায় ও উপজেলার বাঁশতলী ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। যা তিনি প্রমাণ করতে পারেননি।
এ ছাড়াও রামপাল প্রাণী সম্পদ দপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা অফিস সহকারী অমর কুমারের ৭ মাস পূর্বে বাগেরহাট জেলা অফিসে পোষ্টিং হলেও তাকে রামপালে রেখে কাজ করান ওই কর্মকর্তা। তার মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন খাত থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। মুক্তা নামের এক মাঠ কর্মী ঘাষ চাষের প্রকল্পে কাজ করেন। তাদের মাধ্যমে জয়দেব কুমার প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে অফিস সহকারী অমল কুমারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে তার মুৃঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তবে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে মুক্তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। অভিযুক্ত বাগেরহাটের ডিএলও জয়দেব কুমার সিংহ বলেন, আমি এখানে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। দায়িত্ব পালনকালে খামারিদের জীবনমান উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তাছাড়া কাজ করলে ভুল হয়। দু'য়েকজন হয়তো ভুল বুঝে অভিযোগ করেছেন। ওই অভিযোগ আদৌ সত্যি নয়। আমি কোন দূর্নীতি বা স্বজনপ্রীতি করিনি। ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে অপেক্ষা করুন তদন্ত শেষে সব জানা যাবে।
অভিযোগের বিষয়ে খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ ও তদন্ত কর্মকর্তা ডা. মো. শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, অভিযোগের বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যে তদন্তের কাজ শুরু করছি। তবে প্রাথমিক তদন্তে অনিয়মের বিষয়ে কিছু পরস্পর বিরোধী কিছু অসংগতি পাওয়া গেছে। তবে আমরা আরো সময় নিয়ে তদন্ত করবো। সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হবে।