ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৮ অগাস্ট, ২০২৪ ১২:২৫ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬৩ বার
নাটোর: নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলকে প্রধান আসামি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ দুই মামলায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অজ্ঞাতনামা কর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে সদর থানায় বাদী হয়ে যথাক্রমে মামলা দুটি দায়ের করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন ও জেলা বিএনপির সদস্য সাইফুল ইসলাম আফতাব।
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীনের করা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। অপর মামলাতেও সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০/১২ জনের নামে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে জেলা বিএনপির সদস্য সাইফুল ইসলাম আফতাব থানায় এজাহার দাখিল করেন।
নাটোর সদর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) কৃষ্ণ মোহন সরকার এতথ্য নিশ্চিত করে জানান, প্রথম এজাহারে ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন বলেন, চলতি বছরের ১৩ মার্চ দুপুরে আদালতে একটি মামলার হাজিরা শেষে সিংড়া যাওয়ার সময় সদর উপজেলার সড়ক ও জনপথ ভবনের সামনে তৎকালীন সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের নির্দেশে এজাহার নামীয় আসামি সাগর, জাহিদ, কোয়েল, সেলিম, মিলন, সায়েম হোসেন উজ্জ্বল, খোকন, মলয়, আমিনুল ইসলাম, কানন, সজীব, সবুজ, রাসু, মাহাতাব, সৌমেন, স্বপন, শিহাব, হৃদয়, আলিফ, জনি, সুমন, সুমন মৃধাসহ আরও ১০/১২জন প্রাইভেটকার ও হায়েস গাড়িতে করে এসে তার মোটরসাইকেল থামিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর ও গুলি করে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় চিকিৎসা শেষে থানায় সে সময় লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন কিন্তু পরিস্থিতি তখন অনুকূলে ছিল না। এজন্য আইনি সহায়তা মেলেনি। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় ওই ঘটনায় শনিবার দুপুরে থানায় হাজির হয়ে ফের এজহার দায়ের করেছেন ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন।
২য় মামলার এজাহারে সাইফুল ইসলাম আফতাব বলেন, গত বছরের ২৯ অক্টোবর মসজিদ থেকে ফজরের নামাজ শেষে নিজ বাড়িতে ফেরার সময় স্টেশন এলাকার মামুন ফার্মেসির সামনে তৎকালীন সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের নির্দেশে এজাহার নামীয় আসামি সাগর, জাহিদুর, জামিল হোসেন মিলন, সায়েম হোসেন উজ্জ্বল, মলয় কুমার, আমিনুল ইসলাম আজম, কোয়েল, কানন, সেলিম. সজীব, সবুজ, মাহাতাব, সৌমেনসহ আরও ১০/১২জন মোটরসাইকেল নিয়ে এসে তার পথরোধ করে এলোপাতাড়ি মারধর ও গুলি করে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় চিকিৎসা শেষে একইভাবে তিনিও সেসময় থানায় অভিযোগ দাখিল করেছিলেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি বলে দাবি করেছেন। এখন পরিস্থিতি অনুকূলে আসায় ওই ঘটনায় তিনিও শনিবার দুপুরে থানায় হাজির হয়ে ফের এজাহার দায়ের করেন।
নাটোর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন ও জেলা বিএনপির সদস্য সাইফুল ইসলাম আফতাব জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাদের হত্যাচেষ্টাসহ নানা ভাবে জুলুম-নির্যাতন করা হয়েছে। এসব ঘটনায় সেসময় থানায় অভিযোগ দিয়ে কোনো আইনি সহায়তা পাননি। বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে মনে করে তারা নতুন করে এজাহার দাখিল করেছেন। আশা করা হচ্ছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় তারা ন্যায় বিচার পাবেন।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, যখন এসব ঘটনা ঘটেছে, তখন তিনি এ থানায় ছিলেন না। তাই বিষয়টি তার জানা নেই। যদি আগে অভিযোগ করে থাকেন সেই অভিযোগ এবং বর্তমান অভিযোগের সমন্বয় করে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আশা করা হচ্ছে এজাহারকারীরা ন্যায় বিচার পাবেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল পলাতক থাকায় এ বিষয়ে তার মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।