ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৩ অগাস্ট, ২০২৪ ২০:৪৪ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৫ বার
ময়মনসিংহ: ‘আমার স্বামী দেশের জন্য শহীদ হয়েছে, আমি চাই রাষ্ট্র বা সরকার আমার সন্তানদের দায়িত্ব নিক। ’ এমন দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত কামরুজ্জামানের স্ত্রী শামীরা জাহান পপি (২৭)।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে কামরুজ্জামানের পরিবার সর্ম্পকে জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি এসব কথা বলেন।
কামরুজ্জামান ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার চর কামারিয়া গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী মো. আব্দুর রাজ্জাকের দ্বিতীয় ছেলে। দাম্পত্য জীবনে কামরুজ্জামান দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের বাবা। এর মধ্যে দশ বছর বয়সি বড় মেয়ের নাম জারিন, মেজো ছেলের নাম আতনান (৮) এবং ৫ মাস বয়সি ছোট ছেলের নাম গালিব আবরার।
কামরুজ্জামানের স্ত্রী শামীরা জাহান পপি বলেন, আমার তিনটি সন্তান। ছাত্র আন্দোলনে আমার স্বামী গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হওয়ার পর এখন আমি দিশেহারা। ছোট ছোট এই সন্তানদের নিয়ে আমি এখন কোথায় যাব, কী করব। কে আমার সন্তানদের দায়িত্ব নেবে? আমার স্বামী দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। তার শরীরে ৮টি গুলি লেগেছে। আমি চাই রাষ্ট্র এবং সরকার আমার সন্তানদের দায়িত্ব নিক।
এ সময় শোকাহত পপি আরও বলেন, একজন স্ত্রীর কাছে স্বামী হারানোর বেদনা কত কষ্টের, তা বলে বুঝানো যাবে না। এরপরও আমার সান্ত্বনা- আমার স্বামী দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। আমি চাই আমার স্বামীর জীবনের বিনিময়ে হলেও দেশ এবং সমাজ থেকে বৈষম্য দূর হোক।
পপির বড় ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে নিখোঁজ হন কামরুজ্জামান। এরপর অনেক খোঁজ করেও তার কোন সন্ধান পাইনি। এ ঘটনার ১৬ দিন পর গত ১৯ আগস্ট পুলিশের মাধ্যমে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে তার গুলিবিদ্ধ লাশের সন্ধান পাই। এ সময় তার মৃতদেহের মাথা ও শরীরে ৮টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ময়নাতদন্ত করে লাশ দাফন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার বোনের তিনটি সন্তান। স্বামীহারা এই নারীর এখন কী হবে, তা ভেবে কোনো কূলকিনার পাচ্ছি না। আমরা চাই সরকার এই এতিমদের পাশে দাঁড়াক।
প্রসঙ্গত, শহীদ কামরুজ্জামান ঢাকার উত্তরায় বসবাস করে ভাড়ায় প্রাইভেটকার চালাতেন। তবে কিছুদিন আগে তিনি পোল্যান্ড যাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। এরই মাঝে দেশে আন্দোলন শুরু হলে গত ৪ আগস্ট তিনি উত্তরায় ছাত্রদের সাথে মিছিলে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিখোঁজ হন। এরপর গত ১৯ আগস্ট রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার লাশের সন্ধান পাওয়া যায়। গত ২০ আগস্ট পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।