ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৪ অগাস্ট, ২০২৪ ১৭:৫৫ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬২ বার
কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ওঠা ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার টাকা বন্যাকবলিত মানুষের জন্য দান করা হয়েছে বলা তথ্যটি গুজব।
পাগলা মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ তথ্য সঠিক নয়।
মসজিদ পরিচালনা কমিটি আদৌ এ সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
মূলত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও সারজিস আলমের নামে খোলা ফেসবুক পেজ থেকে এমন দাবি করা হয়।
আজ শনিবার (২৪ আগস্ট) ওই ফেসবুক পেজ দুটি থেকে এ বিষয়ে পোস্ট করা হয়।
নাহিদ ইসলাম (Nahid Islam) নামের পেজে আজ দুপুর সাড়ে ১২টায় লেখা হয়, ‘কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্সের ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার টাকা বন্যাকবলিত মানুষের জন্য দান করেছেন মসজিদ কমিটি। আলমাহদুলিল্লাহ। ’
তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ওই দুটি পেজই ভুয়া। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও সমন্বয়ক সারজিস আলমের পেজ খুঁজে এমন কোনো পোস্ট পাওয়া যায়নি।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের নামে চলমান ফেসবুক পেজটির পূর্ব নাম ছিল ‘ফ্রি মোশন২৪ (Free Motion24)’। পেজটি গত বছরের ৫ এপ্রিল খোলা হয়। গত ৯ আগস্ট পেজটির নাম বদলে ‘নাহিদ ইসলাম’ করা হয়। জুড়ে দেওয়া হয় উপদেষ্টা নাহিদের ছবি।
পেজটির পেজ ট্রান্সপারেন্সি সেকশন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
একইভাবে সারজিস আলমের নামে খোলা পেজটির তথ্য ঘেটে পাওয়া গেছে, চলতি বছরের ৩০ মার্চে খোলা পেজটির নাম ছিল ‘স্বপ্ন’। গত ৮ আগস্ট এর নাম বদলে সারজিস আলম করা হয়।
এদিকে, দানবাক্সে ওঠা ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার টাকা বন্যার্তের সহায়তা দান করা হয়েছে - এমন তথ্য সঠিক কি না জানতে চাইলে বিষয়টি নিতান্তই গুজব বলে জানিয়েছেন পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক আব্দুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, মসজিদের টাকা অনুদান দেওয়ার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্য নিতান্তই গুজব। এ বিষয়ে কমিটির কোনো মিটিং হয়নি। আর দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মিটিংয়ের কোনো সুযোগ নেই। কাজেই কমিটির সভায় বন্যার্তদের জন্য মসজিদের টাকা অনুদান দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। এছাড়া ওয়াকফ স্ট্যাটের অধীনে মসজিদ পরিচালিত হচ্ছে। তাই ইচ্ছে করলেই মসজিদের টাকা কোথাও অনুদান দেওয়া সম্ভব না।
পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, পাগলা মসজিদের ফান্ড থেকে বন্যাকবলিতদের মাঝে অনুদান দেয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফেসবুকে যা ছড়িয়েছে, সেটি গুজব।
প্রসঙ্গত, কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ৯টি দানবাক্স প্রতি তিন মাস পর পর খোলা হয়। কোটি কোটি টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ বিদেশি মুদ্রা পাওয়া যায় তাতে। সর্বশেষ গত ১৭ আগস্ট ৩ মাস ২৬ দিন পর পাগলা মসজিদের নয়টি দানবাক্স খুলে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। দিনভর গণনা শেষে সেই টাকার পরিমাণ হয় ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।