ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৫ বার
যশোর: দেশকে অস্থিতিশীল করে শেখ হাসিনাকে প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের শাস্তির দাবিতে এবং সম্প্রতি স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় যশোরে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজনে শহরের চৌরাস্তা মোড়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের অনেকে পালিয়ে গেলেও অনেকেই ঘাপটি মেরে আছে। ঘাপটি মেরে থাকাদের কাছে অনেক কালো টাকা। শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসন আমলে বিদেশ থেকে ঋণ নিয়েছেন ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। টাকা পাচার হয়েছে ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা দিয়ে কিছু উন্নয়ন করলেও তার মধ্যে থেকেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লুট করেছে। সেই কালো টাকা ছড়িয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী দোসররা।
দাকোপে মন্দিরে উড়োচিঠি প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একসঙ্গে হিন্দুদের পূজা করে। পূজাতে গিয়ে খেলনা ক্রয় করে। আরতিতে অংশ নেয় সব ভেদাভেদ ভুলে। এ সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। এ সম্প্রতি ভাঙছেন শেখ হাসিনা। ভারতে বসে ভারতকে উসকে দিচ্ছেন তিনি। পাকিস্তান আমল থেকে বিএনপির আমল পর্যন্ত হিন্দুদের ওপর হামলা-ভাঙচুর-নির্যাতন হয়নি। তাহলে এখন কেন হচ্ছে! শেখ হাসিনার ইন্ধনে এ অত্যাচার নির্যাতন হচ্ছে। এ চক্রান্ত আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদ ও তার প্রভুদের যৌথ প্রযোজনা।
শেখ হাসিনা বিচার বিভাগকে জল্লাদখানা তৈরি করেছেন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, বিচার বিভাগ ছিল শেখ হাসিনার জল্লাদখানা, কসাইখানা। বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের সাজা দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার মনমতো ব্যক্তিকে বিচারপতি বানিয়ে ইচ্ছামতো সাজা দেওয়া হয়েছে এ কসাইখানা থেকে। এ কসাইখানা ও পুলিশ প্রশাসনে এখনো আওয়ামী লীগ সরকারের দোসররা রয়েছে। তারা এখনো কাজ করছে না। এক সময়ে রাতের আঁধারে পুলিশ কত অন্যায় করেছে। তাদের (আওয়ামী লীগ) নির্দেশে রাতের আঁধারে কত নেতাকর্মীদের ধরে এনেছে। এখন আপনারা (পুলিশ) ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না কেন। শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলেছে।
ভারত প্রসঙ্গে টেনে তিনি আরও বলেন, ভারতের কাছে কহিনূর ছিল শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতিতে যেন ভারতের মনোবেদনা থামছেই না। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে যা হচ্ছে, সেটা ভিন্ন কিছু। এ অস্থিশীলতার পেছনে বিদেশিদের হাত আছে। ৫ আগস্টের পরে শান্তিপূর্ণ দেশে বাংলার মানুষ যেন বিশুদ্ধ বাতাস নিচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, ভোটবিহীন নির্বাচনে কোনো জনপ্রতিনিধিকে দেশের মানুষকে দেখতে চায় না। ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের এখনও ক্ষমতায় রেখেছেন কেন। এরাই তো ফ্যাসিবাদের বড় দোসর। এরাই এলাকার সন্ত্রাসী গুণ্ডা-পাণ্ডা। এ গুণ্ডা-পাণ্ডা দিয়ে আঙুল ফুলে কলা গাছ হয়েছে শেখ হাসিনা। আর ঘোটা জাতিকে তিনি অন্ধকারে ছুঁড়ে দিয়েছেন।
যশোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। সঞ্চালনা করেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সল। সমাবেশের আগে দুপুর থেকে জেলার ৮ উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন ওয়ার্ড থেকে মিছিল সহকারে অংশ নেন নেতাকর্মীরা।