ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৫:৪০ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬৫ বার
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় নিজেকে সমন্বকয় পরিচয় দিয়ে মামলা করেছেন মো. সোহেল রানা (৩৬) নামে এক বিএনপি নেতা। এ মামলায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নাম বাদ দিয়ে বাণিজ্য ও চাঁদাবাজি করার অভিযোগে উঠেছে।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
গত ৩ সেপ্টেম্বর নওগাঁ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল রানা বাদী হয়ে ৫৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০০-১৫০ জনের বিরুদ্ধে তাড়াশ থানায় মামলাটি করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বিকেলে হাটিকুমরুল-নাটোর মহাসড়কে তাড়াশের খালকুলা নামক স্থানে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশে একত্র হয়। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে মারপিট করে আহত করে। এ ঘটনায় ৩ সেপ্টেম্বর সোহেল রানা বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার প্রধান সাক্ষী করা হয় ছাত্র সমন্বয়ক মো. মুরসালিনকে। অবশ্য প্রধান সাক্ষী নিজেও মামলার বিষয়ে জানেন না।
মামলা নিয়ে প্রধান সাক্ষী মুরসালিনের সঙ্গে বাদীর একটি কলরেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। ওই কলরেকর্ডে মুরসালিন বাদীকে বলেন, আপনি যে মামলা করেছেন সে মামলায় আমাকে ১নং সাক্ষী দিলেন, সেটা কি আমার কাছে শুনছিলেন। জবাবে সোহেল রানা বলেন, এ ব্যাপারে আফসার (তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি) টুটুল ও জয়নুল এসব বড়বড় নেতার সঙ্গে কথা বলো। আমার সঙ্গে কথা বলে লাভ হবে না। আমি কিছুই জানি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুরসালিন বলেন, বাদী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নন। এ মামলার বিষয়ে আমাকে জানানো হয়নি। অথচ ১নং সাক্ষী করা হয়েছে।
আরেক সমন্বয়ক সাব্বির বলেন, এ মামলা সোহেল রানা নিজের থেকে করেনি। মামলা করিয়েছে বিএনপি নেতা আফসার আলী ও টুটল। মূল যারা আসামি তাদের নামই নেই, তাদের কাছ থেকে আফসার টুটুল টাকা পয়সা নিয়ে বাদ দিয়েছে। তিনি বলেন, তাড়াশের দুটি স্থানে আন্দোলন হয়েছে, একটি জিকেএস অপরটি খালকুলায়। কোনো স্থানেই সোহেল রানা উপস্থিত ছিলেন না।
অপর সমন্বয়ক সিয়াম বলেন, যিনি মামলা করেছেন তিনি ছাত্রও নন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কও নন। সমন্বয়ক পরিচয়ে কেন মামলা করলেন সেটা আমরা জানি না। এ মামলায় অনেকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, আবার জড়িত নয় এমন অনেকের নামই মামলায় এসেছে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক পোস্টে তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আফসার আলী ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান টুটুলের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ করা হয়েছে। ওই পোস্টে বলা হয়েছে টাকা নিয়ে মূল আসামিদের বাদ দিয়ে মামলাটি করানো হয় এবং মামলা তোলার কথা বলে আবার এজাহারভুক্ত আসামিদের কাছে থেকে চাঁদাবাজি করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে মামলার বাদী সোহেল রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি স.ম আফসার আলী বলেন, একজন ছাত্র বাদী হয়ে মামলাটি করার কথা ছিল, কিন্তু সেই ছাত্র রাজি না হওয়ায় সোহেল রানাকে দিয়ে মামলাটি করানো হয়েছে। মামলায় সমন্বয়ক শব্দটি ভুলে লেখা হয়েছে। অনেকের নাম বাদ পড়েছে, তবে যেহেতু অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে সেখানে বাকি আসামিদের ঢুকিয়ে দেওয়া হবে।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, একজন মামলা করতেই পারে। তবে তদন্ত করে দেখে মূল অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।