ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৬:১৭ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭৯ বার
কক্সবাজারের উখিয়া থানার বালুখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমান নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত আকিজ বিড়িসহ আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পনির টেরিটরি এসআরকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত ব্যক্তির নাম দেলোয়ার হোসাইন। শনিবার সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে স্থানীয় ছাত্র-জনতা।
স্থানীয়রা জানান, সরকারের মোটা অংকের টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কিছু অসাধু চক্র দীর্ঘদিন ধরে নকল বিড়ি উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করে আসছে। এই চক্রটি মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, পাবনা জেলায় উৎপাদিত নকল আকিজ বিড়ি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এসে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ করে আসছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বালুখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি সিএনজিসহ আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পনির টেরিটরি এসআর দেলোয়ার হোসাইনকে আটক করে স্থানীয় ছাত্র-জনতা। এসময় সিএনজি থেকে দুই লক্ষ (২,০০,০০০) শলাকা নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত আকিজ বিড়ি উদ্ধার করা হয়।
ভবিষ্যেতে আর কখনো নকল বিড়ি বিক্রি ও মজুদ করবে না এই শর্তে লিখিত অঙ্গিকারনামা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এই রকম কার্যক্রম পরিচালনা করলে মামলার হুশিয়ার দেওয়া হয়।
লিখিত অঙ্গিকারনামায় উল্লেখ করা হয়, আমি দেলোয়ার হোছাইন, পিতা-মো: হোছাইন, মাতা-মনোয়ার বেগম। সাং-দ: লম্বরী, ইউনিয়ন- টেকনাফ সদর, উপজেলা- টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার। আমি দীর্ঘদিন যাবত নকল আকিজ বিড়ি বিক্রয়ের সাথে জড়িত। বর্তমানে আমি আবুল খায়ের ট্যোবাকো কোম্পানিতে টেকনাফ টেরীটরীতে এস আর পদে কর্মরত আছি। আমি ১৩/০৯/২০২৪ এবং ১৬/০৯/২০২৪ ইং তারিখে কিছু বিড়ি এনে টেকনাফের বিভিন্ন দোকানে দিয়েছি। ২৭/০৯/২০২৪ তারিখে ২,০০,০০০ (দুই লাখ) নকল আকিজ বিড়ি নিয়ে আসি। টেকনাফের আবুল খায়ের কোম্পানির (মেরিজ কোম্পানির) টি এস ও মো: এখলাছুর রহমান সহ আরো ৩ জন এস আর সাইফুল রবিউল, আবছার ও ইউনুছ জড়িত আছে। নকল বিড়ি গুলো আমি মেহেরপুর জেলার মো: সাগর মোবাইল-(০১৭৬৭-৬১০২৫৫) হতে এস এ পরিবহন এর মাধ্যমে কক্সবাজার নিয়ে আসি এবং কক্সবাজার এস এ পরিবহন থেকে সি এন জির মাধ্যমে টেকনাফের বড় হোলসেল দোকানে সরবরাহ করে থাকি। ২৭/০৯/২০২৪ ইং তারিখে ২০০০০০ (দুই লাখ) নকল আকিজ বিড়ি নিয়ে টেকনাফ যাওয়ার সময় বালুখালী রোহিঙ্গা বাজারে স্থানীয় ছাত্র-জনতার সামনে ধরা পড়ি। নকল আকিজ বিড়িগুলো আমি নিজ হাতে জনসম্মুখে পুড়িয়ে ফেলি।
আমি অঙ্গীকার করছি যে টেকনাফ এরিয়া হতে সকল নকল আকিজ বিড়ি তুলে টেকনাফ লোকাল এরিয়ায় জমা দেব। ভবিষ্যতে নকল বিড়ি বিক্রি করব না এবং টেকনাফ এরিয়াতে নকল আকিজ বিড়ি বিক্রেতাদের ধরিয়ে দেব। যদি ভবিষ্যতে নকল বিড়ি বিক্রি করি তাহলে আইন অনুযায়ী যে শাস্তি দিবে তা মেনে নিতে বাধ্য থাকব।
আমি এই অঙ্গিকার করছি যে, টেকনাফের যে সকল দোকানে নকল আকিজ বিড়ি সরবরাহ করেছি সে সকল দোকান হতে আগামী ৩ দিনের ভিতরে সমস্ত নকল আকিজ বিড়ি তুলে নিয়ে নিজ হাতে জনসম্মুখে পুড়িয়ে দিব। যদি ৩ দিনের ভিতরে নকল আকিজ বিড়ি তুলতে ব্যর্থ হয় তাহলে অভিযুক্ত সবাইকে মামলায় আসামী হিসাবে অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরী লিমিটেডের চট্টগ্রাম অঞ্চলের ব্যবস্থাপক (ইনচার্জ) মোঃ জসিম উদ্দিন জানান, আকিজ বিড়ি ফ্যাক্টরী লিমিটেডের সুনাম নষ্ট করতে কিছু অসাধু চক্র নকল আকিজ বিড়ি তৈরি করছে। সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে তারা বিড়িতে নকল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে কম দামে বিড়ি বিক্রি করছে। এতে সরকার বিপুল পরিমানে রাজস্ব হারাচ্ছে। নকল বিড়ি বন্ধ করতে পুলিশ, র্যাব, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের সহযোগীতা কামনা করছি।