আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৩ বার
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় একটি স্কুলকে লক্ষ্য করে ট্যাংক থেকে গোল ছুড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গোলার আঘাতে সেখানে অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন।
আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৮০ জন। হতাহতের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি আল-মুফতি বিদ্যালয়ে রোববারের হামলার বিষয়ে এ তথ্য জানায়।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বরাতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় গাজার দেইর আল-বালাহতে একটি স্কুল-আশ্রয় কেন্দ্রে হামলা চালালে আরও কয়েক ডজন আহত হয়েছেন।
রেড ক্রিসেন্টের মতে, রাফিদাহ স্কুলে হামলায় কমপক্ষে ৫৪ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। হাসপাতালের কর্মকর্তারা মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে, ‘সন্ত্রাসীদের’ একটি কমান্ড ওই স্কুলের ভেতরে কাজ করছিল। যে কারণে স্কুল কম্পাউন্ডে আঘাত করা হয়েছে। এর আগে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য ‘অনেক পদক্ষেপ’ নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি ইসরায়েলের।
তবে ইসরায়েলের এই দাবি স্বাধীনভাবে দাবি যাচাই করতে পারেনি সিএনএন।
সিএনএনের ফুটেজে দেখা গেছে, শিশুদের অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তাদের মুখ রক্তে ঢেকে গেছে এবং তাদের মধ্যে অনেকেই চিৎকার করছে এবং কাঁদছে। একটি মেয়ে হাসপাতালের মেঝেতে শুয়েছিল। মেয়েটি কাঁপছে এবং রক্তে ঢেকে গেছে, তার শরীর মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে।
মেয়েটি আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে চিকিৎসা কর্মীদের জিজ্ঞাসা করেছিল। ‘কি হয়েছে? আমি কি মরতে যাচ্ছি?’
আয়মান আবু খুসা নামের একজন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি যিনি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিরি বলেছিলেন,ইসরায়েলের এই গোলা আকস্মিক আঘাত হানে। আর সব ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। তিনি এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে তার আত্মীয়দের সন্ধান করছেন।
আয়মান আবু খুসা সিএনএনকে বলছিলেন, ‘আমরা প্রতিদিন মারা যাচ্ছি। বিশ্ব আমাদের বিক্রি করে দিয়েছে। প্রতিদিন আপনারা (সাংবাদিকরা) এখানে আসেন এবং আমাদের ছবি তোলেন।
স্কুলটিতে আশ্রয় নেওয়া আরেক মহিলা ইফতেখার হামউদা বলেন, কেন তারা স্কুলে বোমা মারছে? এখানে সব বাস্তুচ্যুত মানুষ, বেশিরভাগই নারী। এখানে কোন হামাস সদস্য নেই। এখন ফিলিস্তিনিরা কোথায় যেতে পারে? তারা কোথায় পালাবে? ইসরায়েল আমাদের বাড়িতে, আমাদের তাঁবুতে, রাস্তায় এবং স্কুলে আঘাত করছে।
জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলার মুখে উদ্বাস্তু হওয়া ফিলিস্তিনিরা ওই বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের বেশি সময়ে গাজায় ৪২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।