ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৭ বার
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের উদ্যোগে ১৫ অক্টোবর ২০২৪ মঙ্গলবার, সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনির্দিষ্ট কালের জন্য নয়, সংস্কার কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণায় রাজনৈতিক দলের করনীয় শীর্ষক মুক্ত আলোচনা” অনুষ্ঠিত হয়। গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি)’র মহাসচিব হারুন আল রশীদ খাঁনের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম—এল) এর সাধারণ সম্পাদক কমরেড হারুন চৌধুরী, সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসডিপি)’র আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সামছুল আলম প্রমুখ।
এ সময় গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের পক্ষ থেকে ছাত্র—জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্রুত করণীয় নিম্নোক্ত কার্যাবলী তুলে ধরা হয়—
১) অন্তর্বর্তীকালীন সরকার স্বৈরাচার বিরোধী সফল আন্দোলনের ফসল সকল রাজনৈতিক দল ছাত্র শ্রমিক কৃষক আপামর দেশবাসী সকলের আস্থার প্রতিক। শহীদদের রক্তের দাগ শুকায় নাই, আহতদের আহাজারি চলছে, মৃত্যুর মিছিল থামে নাই। তাই এই সরকার কে কোন অবস্থায় ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কে সবরকম সহযোগিতা করে যাবে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য।
২) অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে দেশ মহাসংকটে পরে যাবে। পতিত স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য আরো সুদৃঢ় করতে হবে। ঐক্য বিনাশীদের চিহ্নিত করে তাদের সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।
৩) অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অনির্দিষ্ট কালের জন্য নয়। ঘোষিত সংস্কার কমিশন গুলোর কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করার পাশাপাশি দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
৪) যাঁদের রক্তের উপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সরকার দাঁড়িয়ে। দুই মাসের বেশি অতিবাহিত হলেও শহীদদের সঠিক তালিকা ও অর্থের অভাবে আহতদের উন্নত চিকিৎসা না পাওয়া গ্লানিকর। দায়িত্বশীলদের গাফিলতি খতিয়ে দেখতে হবে। শহীদ ও আহতদের পরিবার কে দ্রুত পুনর্বাসন করতে হবে।
৫) পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা তাদের দোসর চৌদ্দ দল গণভবনে সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে গণমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে গণহত্যা চালিয়েছে। গণহারে মামলা গণগ্রেফতার মামলার গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করে। মামলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে, গণহত্যাকারী মানবতাবিরোধী অপরাধীদের যেন বিচার নিশ্চিত করা যায়। অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করাই মানবতা। এদের কোন ক্ষমা নাই।
৬) প্রশাসনের স্থবিরতা কাটে নাই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। ঘাপটি মেরে থাকা পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের চিহ্নিত করে দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা নিতে হবে।
৭) দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি পতিত স্বৈরাচারের আমলকে ছাড়িয়ে গেছে। জনগণ শঙ্কিত, সিন্ডিকেট চাঁদাবাজি বন্ধ করে জনমনে স্বস্তির কার্যকর ব্যবস্থা করতে হবে।
৮) শিল্পাঞ্চলে আর একটিও গুলি চালিয়ে শ্রমিক হত্যা কারো কাম্য নয়। সংকট নিরসনে শ্রমিক মালিক সকল পক্ষ কে আলোচনা করে সমাধান করতে হবে। পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে এনে কলকারখানা গড়ে তুলে বেকার সমস্যা সমাধান করতে হবে।
৯) পতিত স্বৈরাচার ধ্বংস করে রেখে যাওয়া শেয়ার মার্কেট, ব্যাংক, বীমা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এখনো লুটেরাদের লুটপাট বন্ধ হয় নাই। আর্থিক খাতে দ্রুত শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
১০) নতুন করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের হিড়িক বন্ধ করে, নতুনদের কাজে লাগাতে হবে।
১১) সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। জনগণ কিছু অ্যাকশন দেখতে চায়, তাতে সবকিছুর সমাধান হবে না। বড় বড় কয়েকটা কাজ করতে হবে যাতে জনগণ বুঝতে পারে, একটা পরিবর্তন হচ্ছে।