ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৬ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:১৮ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ২৬ বার
মাদারীপুর: শিবচর উপজেলার বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের কলাতলা এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে আড়িয়াল খাঁ নদের বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙন রোধে এ বাঁধটি দিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।
বাঁধের বেশ কিছু অংশ ধসে পড়েছে নদীতে। আকস্মিক এই ভাঙনে নদের পাড়ের প্রায় দেড় হাজার পরিবারের দিন কাটছে দুশ্চিন্তায়।
জানা গেছে, নদের ভাঙনরোধে প্রায় ৩৮১ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালে সেই প্রকল্পের মাধ্যমে ১৭০ কোটি টাকায় নদী খনন ও ২১১ কোটি টাকার তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু করে খুলনা শিপইয়ার্ড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে কাজটি চলমান
এর মধ্যে বহেরাতলা ইউনিয়নের ১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের কাজে ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে শেষ হয়। আর এই অংশের বাঁধই হঠাৎ ধসে পড়েছে। বাঁধের প্রায় ২৫ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, কিছু অসাধু ড্রেজার ব্যবসায়ী ওই বাঁধের চারপাশে অন্তত পাঁচটি মেশিন বসিয়ে রাতদিন বালু কেটে নিতো। এলাকাবাসী বেশ কয়েকবার তাদের বাঁধা দিলেও রাতের অন্ধকারে গোপনে ড্রেজার চলতো। প্রশাসনও বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে ড্রেজার বিনষ্ট করে। নদের গভীর থেকে বালু কাটায় এ ভাঙন দেখা দিয়েছে।
আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ে বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ভাঙনের কবলে পড়েছিল এর আগেও। বর্তমানে ইউনিয়নে একটি মসজিদ, কয়েকটি দোকান, কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি, তিন দুই কিলোমিটার সড়ক ও দেড় হাজার পরিবার বসবাস করে। পাউবো বাঁধ দেওয়ায় এর আগে কয়েকবার নদের ভাঙন ঠেকানো গিয়েছিল। কিন্তু এখন বেড়িবাঁধই ধসে পড়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, বেড়িবাঁধ দেওয়ায় আমরা স্বস্তি পেয়েছিলাম। কিন্তু এখন বেড়িবাঁধসহ ভাঙন দেখা দিল। হঠাৎ করেই বাঁধ ধসের প্রকৃত কারণ উদঘাটনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয় তারা মিয়া খালাসী বলেন, রাতের আঁধারে অসাধু লোকজন ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটে। এর ফলে বেড়িবাঁধ ভাঙতে শুরু করেছে। প্রশাসনকে দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
হাজেরা বেগম নামে একজন বলেন, আমার ছেলে-মেয়ে নাই। আমার আগেও একবার বাড়ি নদীতে বিলীন হয়। আমি বর্তমানে ইজারা দিয়ে থাকি। আমার এই বাড়িটিই সম্বল। যদি ভেঙে যায় তাহলে আমার থাকার আর কোনো জায়গা থাকবে না। বাঁধ ভেঙে পড়ায় খুব দুশ্চিন্তায় আছি।
বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ছাইদ উকিল বলেন, গত তিন বছর আগে এই বেড়িবাঁধটি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে আমি এখানে এসে দেখি বেড়িবাঁধটি ভেঙে গেছে। আমার দাবি, যারা এই নদের বালু উত্তোলন করে তাদেরকে ধরে প্রশাসনের শাস্তি দিতে হবে।
মাদারীপুর পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সানাউল কাদের খান বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ড্রেজারে মাটি কেটে নেওয়ায় বেড়িবাঁধটি ধসে গেছে। বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। ধস প্রতিরোধে আমরা স্থানটিতে জিও ব্যাগ ফেলার কার্যক্রম শুরু করেছি।