নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৬৫ বার
বখতিয়ার রহমান পীরগঞ্জ (রংপুর) ঃ করতোয়া নদী থেকে লুটেরাদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও লুটপাট বন্ধ হয়নি দীর্ঘ দিনেও। করতোয়া নদীর রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়নের ল্যাংড়ার ঘাট নামক স্থানে ওই কারবার চলছে বেশ জোরেসোরে। করতোয়া নদী পাড়ের ৩ গ্রামের বালু লুটেরাগণ সমিতি করে মাসের পর মাস দোর্দন্ড প্রতাপের সাথে বালু উত্তোলন করেই চলছেন। অবৈধ ভাবে যত্রতত্র বালু তোলার কারনে শত-শত কৃষক পরিবার তাদের আবাদী জমি, ঘর-বাড়ী ভাঙ্গনের ফলে করতোয়া গর্ভে বিলিন হবার আশংকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে। পীরগঞ্জে উপজেলা প্রশাসন ক’মাস আগে বালু উত্তোলন বন্ধে মাইকিং করার পর বালু লুটেরাগণ তাদের কারবার আরও দ্বিগুন করেছেন। ওই সময় বালু তুলতো ১৬ জনে ।
এখন সমিতি করে বালু তুলছে ৩৩ জনে। করতোয়া নদীটি রংপুর ও দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী পীরগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাট উপজেলার ধার ঘেষে প্রবাহমান। নদীর ঘাটে ৩৩ জন বালু লুটকারী যুবক সমিতি গঠন করে উঠানো বালু শত শত মাহেন্দ্র ট্রলিতে বালু বিক্রি করছে প্রতিদিন। কেউ এতে বাধা দিলে সমিতির সদস্যরা হুমকি প্রদান করেন। যে কারনে এলাকার কেউ মুখ খোলার সাহস করেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জনপ্রতিনিধি ও ভুক্তভোগি এলাকাবাসী এমন অভিযোগ করেছেন। গত কয়েক দিন আগে ল্যাংড়ারঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায় অবৈধভাবে বালু তোলা ও ট্রলিযোগে বিক্রির মহোৎসব চলছে। করতোয়া নদী উক্ত ঘাটে দেড়’শ ফিটের মধ্যে ৮টি বোমা মেশিন লাগিয়ে দিবারাত্রী বালু লুটের কারবার চালাচ্ছে লুটেরাগণ।
বেশকিছু মাহিন্দ্র ট্রলিতে বালু বোঝাই করার দৃশ্য দেখে মনে হয় বালু উত্তোলন ও বিক্রির প্রদর্শনী মেলা বসেছে। প্রতিদিন শত-শত ট্রলি বালু পরিবহন করায় গ্রামের রাস্তা ভেঙ্গে চলাচলের অনুপযোগি হয়েছে। রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোগি হওয়ায় এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল হাটবাজারে বিক্রি করতে না পারায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। পাশাপশি ধুলোবালির কারণে এলাকার পরিবেশ দুষিত হওয়ায় বাড়িতে থাকা দুরহ হয়ে পড়ছে শিশুসহ গৃহবধুদের। অবৈধ বালুর কারবার বন্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবী করেছে এলাকাবাসী।
চতরা ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক শাহীন বলেন- অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমি ইতিপূর্বে উপজেলা পরিষদের মাসিক মিটিংয়ে উত্থাপন করেছিলাম। তার পরেও বন্ধ হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড রংপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব এর সঙ্গে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন- রংপুরের জেলা প্রশাসক ও পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিরোদা রানী রায় জানান- এ সব বালু উত্তোলন বন্ধে শীঘ্রই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। একই রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন- আমরা ইতিপূর্বে করতোয়া নদীর বালু উত্তোলন বন্ধে একাধিকবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছি এবং তা অব্যহত আছে।