ঢাকা, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

তিমির সাথে জেলের লড়াই

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬৭২ বার


তিমির সাথে জেলের লড়াই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বড় চিংড়ি ধরতে সাগরে ডুব দিয়েছিলেন এক জেলে। বেশিক্ষণ হয়নি, আচমকা অন্ধকার হয়ে আসে চারপাশ, সঙ্গে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা। জেলে প্রথমে ভেবেছিলেন তাকে হয়তো হাঙরে ধরেছে। তবে দাঁতের সংখ্যা আর আকার দেখে ভুল ভাঙে দ্রুতই। বুঝতে পারেন, তিনি হাঙর নয়, তিমির মুখে পড়েছেন। তিমিটি তাকে গিলে খেতে চেষ্টা করছে। এরপর শুরু হয় প্রাণপণ লড়াই। আর সেই লড়াইয়ে জিতে শেষপর্যন্ত বাইরে বেরিয়ে আসেন সাহসী জেলে।

গত শুক্রবার এ ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ম্যাসাচুসেটস উপকূলে।

ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরে মাইকেল প্যাকার্ড নামে ওই ব্যক্তি ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে জানান, তিমিটি পানির ওপর ভেসে ওঠা এবং তাকে মুখ থেকে বের করে দেয়ার আগে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ সেকেন্ড এর মুখের ভেতর আটকা ছিলেন তিনি।

ভুক্তভোগী বলেন, একটি হাম্পব্যাক তিনি আমাকে খেয়ে ফেলার চেষ্টা করেছে। আমি ক্ষতবিক্ষত, তবে কোনো হাঁড় ভাঙেনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে কেপ কড টাইমস নামে একটি স্থানীয় পত্রিকাকে প্যাকার্ড জানান, তিনি ম্যাসাচুসেটস উপকূলে প্রায় ৩৫ ফুট গভীরে লবস্টার (এক জাতীয় গলদা চিংড়ি) ধরছিলেন।

‘আচমকা প্রচণ্ড ধাক্কা অনুভব করলাম। এরপর শুধু জানি, চারদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার।’ সঙ্গে সঙ্গে বদ্ধ জায়গা থেকে উদ্ধার পেতে প্রাণপণ চেষ্টা শুরু করেন মাইকেল প্যাকার্ড। কিন্তু পিনোকিও গল্পের মতো তিমির পেটে আগুন জ্বালাতে হয়নি তাকে!

এই জেলে বলেন, আমি আলো দেখতে পাই, আর দুই পাশে মাথা দিয়ে আঘাত করতে শুরু করি। এরপর যা জানি তা হলো, আমি বাইরে (পানির মধ্যে)। পত্রিকাটির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তিমিটি ভেসে ওঠা এবং প্যাকার্ডকে বের করে দেয়ার সময় পানিতে উথাল-পাথাল হতে দেখেছেন তার মাছ ধরার সঙ্গী মায়ো।

এদিকে, ম্যাসাচুসেটসের একটি তিমি গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক জুক রবিনস জানিয়েছেন, মাইকেল তিমির মুখ থেকে বেঁচে ফেরার ঘটনা গুজব নয় বলেই মনে করেন তিনি। রবিনস বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেন, আমার মনে হয় না এটি গুজব। কারণ এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আমি চিনি।

এ গবেষক জানান, তিনি এ ধরনের ঘটনা আগে কখনো শোনেননি। হতে পারে প্যাকার্ড ‘ভুল সময় ভুল জায়গায়’ হাজির হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, তিমিরা মাছ শিকারের সময় মুখ বড় হা করে সামনে আগায় এবং দ্রুত মাছ ও পানি গিলে ফেলে। তবে তাদের মুখ বড় হলেও গলা অনেকটাই সরু, যা দিয়ে সাধারণত কোনো মানুষ গিলে ফেলা সম্ভব নয়। দ্রুত সামনে যাওয়ার সময় তিমিটি দুর্ঘটনাবশত মাইকেলকে মুখে পুরে ফেলেছিল বলে ধারণা করছেন জুক রবিনস।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় সব কিছু হয়তো এখনো জানা যায়নি। তবে একটি বিষয় পরিষ্কার- মানুষকে সচেতন থাকতে হবে এবং তিমি দেখলে নিরাপদ দূরত্ব রাখতে হবে। তিমিকে তাদের জায়গা দেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 


   আরও সংবাদ