ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭৬৭ বার
ক্রীড়া ডেস্ক: দলের টপ অর্ডারের প্রায় সব ব্যাটসম্যানই ব্যর্থ। ব্যতিক্রম ছিলেন একজন। তিনি লিটন দাশ। দারুণ এক সেঞ্চুরি করে দলের হাল ধরলেন এই ওপেনার। অপরদিকে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও বল হাতে একেবারেই চেনা রূপে সাকিব। আর তাতেই পুড়ে ছারখার জিম্বাবুয়ে। ফলে ১৫৫ রানের বিশাল জয় দিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। যদিও ম্যাচের শুরুটা আর শেষটার মধ্যে কোন মিল খুঁজে পাওয়া যাবেনা। তারপরও দিন শেষে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রেকর্ড গড়া জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করল বাংলাদেশ। আগের বড় জয়টা ছিল ১২১ রানের। জিম্বাবুয়ের মাটিতে গতকাল তাদেরকে সবচাইতে কম রানে অল আউট করে দিয়েছে বাংলাদেশ।
গতকাল ১২১ রানে অল আউট হওয়া জিম্বাবুয়ে এর আগে ২০১৩ সালে ১৪৮ রানে অল আউট হয়েছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে। দলের কঠিন সময়ে লিটন দাশের ১০২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস এবং পরে সাকিব আল হাসানের ৫ উইকেট বাংলাদেশকে এনে দেয় সহজ জয়। দিনের শুরুতে স্বাগতিক বোলাররা ভীতির সঞ্চার করলেও দিন শেষে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে টাইগারদের কাছে। দিনের শুরুটা হয়েছিল জিম্বাবুয়ের টস জয় দিয়ে। বাংলাদেশকে ব্যাটিং এর আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন স্বাগতিক অধিনায়ক। শুরুটা জিম্বাবুয়েরই ছিল। দলের খাতায় কোন রান যোগ হওয়ার আগেই ফিরলেন তামিম। তাও তৃতীয় ওভারে। সাকিব এসে ভাল কিছুর ইঙ্গিত দিলেও পারেননি ১৯ রানের বেশি করতে।
মিঠুন, মোসাদ্দেকরাও অনুসরণ করলেন সাকিব-তামিমকে। তবে একপ্রান্তে অবিচল ছিলেন লিটন। দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার পথে সঙ্গী হিসেবে পেলেন টেস্ট জয়ের নায়ক মাহমুদ উল্লাহকে। দুজন গড়লেন ৯৩ রানের জুটি। কিন্তু টেস্টের মতো নায়ক হতে পারলেননা মাহমুদউল্লাহ। ফিরেছেন ৩৩ রান করে। এরপর আফিফ এসে সঙ্গ দেন লিটনকে। ততক্ষণে লিটন তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি। এ বছরের শুরুতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা দুই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন লিটন। সেটাতে তিনে নিয়ে গেলেন এই ওপেনার। ১১৪ বলে লিটনের ১০২ রানের ইনিংসটি ছিল ৮ বাউন্ডারিতে সাজানো।
এরপর আফিফ হোসেনের ৩৫ বলে একটি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ৪৫ রানের ইনিংসের উপর ভর ২৭৬ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করায় বাংলাদেশ। মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে ২৬ রান। ২৭৭ রানের বিশাল লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই দুই পেসার তাসকিন এবং সাইফউদ্দিনের তোপের মুখে পড়ে মাত্র ১৩ রানেই দুই ওপেনারকে হারায় জিম্বাবুয়ে। এরপর শুরু সাকিবের ঘূর্ণি জাদু। ১৮ রান করা ডিয়ন মায়ার্সকে দিয়ে শুরু সাকিবের ধংসযজ্ঞ। এরপর আর কোন ব্যাটসম্যানই দাঁড়াতে পারেনি বিশ্বসেরা এই অল রাউন্ডারের ঘূর্ণির সামনে। মাঝখানে অধিনায়ক টেইলর এবং রেজিস চাকাবা চেষ্টা করেছিলেন প্রতিরোধ গড়ার।
কিন্তু তাদেরকেও দাঁড়াতে দেননি সাকিব। যদিও চাকাবা তুলে নেন নিজের হাফ সেঞ্চুরি। অধিনায়ক টেইলর ফিরেছেন ৩১ বলে ২৪ রান করে। আর চাকাবা ঝড়ো ব্যাটিং করে ৫১ বলে করেছেন ৫৪ রান। যেখানে ৪টি চার এবং ২টি ছক্কার মার ছিল। ৭৮ রানে ৪ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে বাকি ৬টি উইকেট হারায় মাত্র ৪৩ রানে। শেষ ৫ উইকেট হারিয়েছে মাত্র ১৬ রানে। জিম্বাবুয়ের তিনজন ব্যাটসম্যান দুই অংকের ঘরে যেতে পেরেছে। বাকিরা সবাই ফিরেছেন এক অংকের ঘরে থেকেই। ফলে ১২১ রানে অল আউট হয় জিম্বাবুয়ে মাত্র ২৮.৫ ওভারে।
সাকিব ৯.৫ ওভার বল করে ৩০ রান খরচায় নিয়েছেন ৫ উইকেট। ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নিলেন সাকিব। যার মধ্যে দুইবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। তবে সেরা বোলিং আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপে ২৯ রানে ৫ উইকেট। তবে ম্যাচ সেরার পুরস্কারটি উঠেছে সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাশের হাতে।