ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৮০৯ বার
অপরাধ:- সায়মনের জন্মের পর থেকেই বাদল মিয়ার সন্দেহ, সন্তান তার কিনা। সায়মনের চেহারা ও আচার-আচরণে অন্য দুই সন্তানের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছিলেন না বাবা বাদল মিয়া। প্রায় ৯ বছর জমিয়ে রাখা ওই সন্দেহের সমাপ্তি তিনি ঘটালেন ছেলে সায়মনকে (৯) হত্যার মধ্য দিয়ে।
রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার সাদাতের আদালতে আসামি বাদল মিয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানান। এর আগে পুলিশ শনিবার সন্দেহমূলকভাবে বাদল মিয়াকে আটক করলে ১৬১ ধারায় জবানবন্দি দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের নর্দাপাড়া গ্রামের পশ্চিমে ধানক্ষেত থেকে গত শনিবার সকালে মো. সায়মন নামে এক শিশুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সায়মন ওই গ্রামের বাদল মিয়ার ছেলে ও স্থানীয় একটি মাদ্রাসার ছাত্র। বাবার সঙ্গে সে ঘাস কাটতে গিয়ে ফিরে আসার পথে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় বলে প্রথমে জানাজানি হয়।
বাবা বাদল মিয়া প্রথমে জানান, সকালে সায়মন তার সঙ্গে ঘাস কাটতে বের হয়। কিছুক্ষণ পর সায়মন ঘাস কাটবে না জানিয়ে বাড়ির পথে চলে যায় এবং আমিও তাকে বাড়ি যাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত হয়ে পুনরায় ঘাস কাটতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। প্রায় এক ঘণ্টা পরও সায়মন বাড়ি না ফেরায় সন্দেহ হলে অনেক খোঁজাখুঁজি করে ওই গ্রামের নদ্দাপাড়ার একটি ধানক্ষেত থেকে সায়মনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাত দিয়ে জানান, বিয়ের পাঁচ মাস পর প্রবাসে চলে যান বাদল মিয়া। এর দুই মাস পর তার স্ত্রী ছেলেসন্তান জন্ম দেন, নাম রাখা হয় সায়মন। কিন্তু সাত মাসে সন্তান জন্ম নেওয়ার ঘটনায় সন্দেহ পোষণ করে বাদল।
দেশে এসে এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কলহ সৃষ্টি হয়। পরে বাদল আরও দুই সন্তানের বাবা হন। সন্তানরা বড় হতে হতে বাদল সন্দেহ করেন, সায়মনের সঙ্গে আয়মন ও নাঈমের চেহারার মিল নেই। আচরণেও অমিল। সব মিলিয়ে তার সন্দেহ প্রবল আকার ধারণ করে। একপর্যায়ে বাদল জানতে পারেন, বশির নামে একজনের সঙ্গে তার স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল।
ধীরে ধীরে সায়মনকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করেন বাদল। এরই অংশ হিসেবে শনিবার সকালে পরিকল্পিতভাবে গলা কেটে সায়মনকে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের পরও বাদল মিয়ার মধ্যে কোনো ধরনের অনুশোচনা না থাকায় পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে পুলিশ বাদল মিয়াকে গ্রেফতার করলে হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়।