ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে ত্রিভূজ প্রেম, যুবক খুন

বিনোদন ডেস্ক


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১১২০ বার


প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে ত্রিভূজ প্রেম, যুবক খুন

প্রলোভনে ফেলে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে হাবিব মৃধার (২৮) নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার ত্রিভুজ সম্পর্কের কারণে প্রতিদ্বন্দ্বীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন ওই যুবক।

রোববার (৮ আগস্ট) তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরইমধ্যে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকায় চার যুবক ও আলোচিত সেই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (১১ আগস্ট) বিকেলে ফরিদগঞ্জ থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদ।

এর আগে, গত বুধবার (৪ আগস্ট) ফরিদগঞ্জের সাহেবগঞ্জ গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে মো. রুবেল মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে যায় পাশের হর্ণিদূর্গাপুর গ্রামের মৃত মনির হোসেন মৃধার ছেলে হাবিব মৃধাকে।

এসময় এলাকার গুপ্তের বিলে রুবেল তার সহযোগী সিফাতউল্লাহ রাসেল, সাইফুল ইসলাম ও পারভেজ শ্যামলকে নিয়ে হাবিব মৃধাকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরে মৃতদেহ বিলের পানিতে ফেলে দেয়।
তারা হাবিব মৃধার দুটি মুঠোফোন এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রশি হর্ণিদূর্গাপুর গ্রামে শিউলী আক্তার নামে ওই নারীর বাড়ির পাশের খালে ফেলে রাখে।

একপর্যায়ে গত ৮ আগস্ট গুপ্তের বিলে হাবিব মৃধার লাশের সন্ধান মেলে। ভাইকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা হত্যা করেছে এমন অভিযোগ এনে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা করেন আকরাম হোসেন বাবুল। আর সেই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান উপপরিদর্শক রুবেল ফরাজী।
 
নিহত হাবিব মৃধার মুঠোফোনের সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের ক্লু উদঘাটনের চেষ্টা করা হয়। এরইমধ্যে হাবিব মৃধার সেই দুটি মুঠোফোনের কললিস্ট ধরে হত্যকাণ্ডে জড়িতদের পরিচয় বেরিয়ে আসে।

প্রথমে শিউলী আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরে একেক করে ঘটনায় জড়িত চারজনকে ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসময় থানায় নিয়ে এসে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা হাবিব মৃধাকে হত্যার বর্ণনা দেয়।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রবাসী ফারুক হোসেনের স্ত্রী শিউলী আক্তারের (২০) সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক ছিল হাবিব মৃধার, রুবেল (৩০) ও সিফাতউল্লাহ রাসেলের (২৭)। একপর্যায়ে শিউলী আক্তার দুজনকে বাদ দিয়ে হাবিব মৃধার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে।
এমন পরিস্থিতিতে পথের কাঁটা দূর করতে রুবেল এবং সিফাতউল্লাহ রাসেল তাদের অপর সহযোগী সাইফুল ইসলামকে নিয়ে হাবিব মৃধাকে খুন করে। যদিও হত্যাকাণ্ডের পরপরই তারা বিষয়টি শিউলী আক্তারকে জানিয়ে ঢাকায় আত্মগোপন করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোহেল মাহমুদ জানান, ঘটনায় জড়িত সবাই পাশাপাশি গ্রামের বাসিন্দা। প্রবাসে থাকা ফারুক হোসেন নামে এক ব্যক্তির স্ত্রী শিউলী আক্তার নামে হাবিব মৃধা, রুবেল ও রাসেলের সঙ্গে সমানতালে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়। এরমধ্যে অন্য দুজনকে দূরে ঠেলে দিয়ে হাবিব মৃধার সঙ্গে আরও বেশি ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায় শিউলী আক্তারের। যে কারণে ওই দুজন পথের কাঁটা দূর করতে হাবিব মৃধাকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়।

এদিকে, বুধবার বিকেলে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ৫ জনকে চাঁদপুরের আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরে আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ জানান, যেকোনো ধরনের অপরাধ করে এখন আর কেউ পার পেয়ে যেতে পারবে না। পুলিশ আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রফেশনাল। যে কারণে শুধু তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেই নয়, পেশাগত দক্ষতার মধ্য দিয়েও যেকোনো ঘটনা উদঘাটনে পুলিশ বেশ এগিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় হাবিব মৃধার হত্যাকাণ্ডের ক্লু দ্রুত সময়ে উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান তিনি।
 


   আরও সংবাদ