ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭৮১ বার
বাবুল আকতার,সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: প্রতিদিন কাকডাকা ভোর থেকে হাঁকাহাঁকি ডাকাডাকির অন্ত নেই। মাঠে ফলানো সব্জি ফসল সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার কৃষকগণ। বিক্রির জন্য মাঠ থেকে টাটকা তাজা সব্জি ফসল তুলে নিয়ে আসছেন ।
কেউবা সব্জি ফসল তুলে বস্তায় বা ডালিতে করে পসরা সাজিয়ে বসে আছেন ক্রেতার আশায়। চারদিকে যেন ধুম পড়েছে টাটকা সব্জি কাঁচা পণ্য কেনা-বেঁচার। এটাই বর্তমান সাপাহার উপজেলার সর্ববৃহৎ সব্জির পাইকারী বাজারের চিত্র।
প্রতিদিন ভোর বেলা সব্জির বাজার বসে সাপাহার উপজেলার বাহাপুর মোড়ে। সব্জি বাজারের জন্য ওই মোড়ে আলাদা কোন স্থান না থাকায় মোড়ের ব্যাস্ততম রাস্তার উপর সব্জিরহাট বসছে। প্রতিদিন পথচারীদের চলাচলে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন ফজরের আজানের পর পরই কৃষকেরা ছোটাছুটি শুরু করে নিজ হাতে উৎপাদিত কাঁচা সব্জি পাইকারের কাছে বেঁচার জন্য। প্রথমে দল বেঁধে বাগান থেকে সব্জি ফসল সংগ্রহ করে। এই এলাকায় উৎপাদিত উল্লেখযোগ্য সব্জি হলো বেগুন, পটল , ঝিঙ্গা ,করলা, উচ্ছে,লাউ ইত্যাদি। এই পাইকারী বাজারে কাঁচা মালামাল কেনার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে লোকজন আসেন । টাটকা সতেজ সব্জি কেনার জন্য পাইকারদেরও উৎসাহের কমতি নেই। তারা পাইকারী দরে এখান থেকে সব্জি ক্রয় করে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে গিয়ে বিক্রয় করে।
সম্প্রতি সময়ে এই উপজেলায় যত কাঁচা সব্জি উৎপাদন হয় তার বেশির ভাগই তিলনা ও বাহাপুর এলাকায় হবার ফলে দীর্ঘদিন ধরে পাইকারী বাজার বাহাপুর মোড়েই বসে। কাঁচা সব্জির বাজারের জন্য সুনির্দিষ্ট কোন স্থান না থাকার ফলে ব্যস্ততম রাস্তার উপরেই বসে পাইকারী বাজার । স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, করোনাকালীন সময়ে লকডাউন থাকার ফলে এই বাজার অনেক থমকে গেছিলো। কিন্তু বর্তমানে এই অঞ্চলে করোনার তেমন প্রভাব না থাকার ফলে আবারো জমে উঠেছে এই পাইকারী বাজার।
কৃষক ছাদেক উদ্দীন বলেন, আমি মোট ৬ বিঘা জমিতে করলা চাষ করেছি। বর্তমানে আগের তুলনায় অনেকটা বাজার মূল্য কম।
বাজারমূল্য কমের বিষয় নিয়ে আরেক চাষী হাসান আলী জানান, বর্তমানে পাইকার কম আসার ফলে স্থানীয় পাইকাররা কম দামে সব্জি ক্রয় করছেন।
পাইকাররা বলছেন, এই অঞ্চলে সাশ্রয়ী মূল্যে একেবারে টাটকা সব্জি পাওয়া যায় বলে আমরা আগ্রহ করে কিনতে আসি। যাতে করে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সব্জিটা আমরা ভোক্তার নিকট পৌঁছাতে পারি।
রাজধানীর কাওরান বাজার থেকে আসা পাইকার কামরুল জানান, সাপাহার উপজেলার বাহাপুরে একদম বাগান থেকে সংগ্রহ করা টাটকা সব্জি পাওয়া যায়। যার ফলে আমরা এখান থেকে সব্জি কিনতে অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এছাড়াও এখানে অনেকটাই সাশ্রয়ী মূল্যে সব্জি কেনা যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এলাকার চাষীদের সকল প্রকার পরামর্শ অব্যহত আছে বলছেন উপÑসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আতাউর রহমান সেলিম।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, উপজেলার সর্ববৃহৎ কাঁচামালের পাইকারী বাজার বসে এই বাহাপুর মোড়ে। কিন্তু রাস্তার উপর বাজার বসার ফলে পথচারীদের নানাবিধ সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি কাঁচাবাজারের জন্য সুনির্দিষ্ট একটি স্থান নির্ধারণ করে দেন তাহলে এলাকার কৃষক সাধারণের অনেকটা সুবিধা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্যাহ আল মামুন বলেন, সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। পথচারীদের যাতে কোন সমস্যা না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখা হবে।