ঢাকা, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আতঙ্ক

বিনোদন ডেস্ক


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ১০৮৯ বার


কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আতঙ্ক

কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আতঙ্ক। ডেডলাইন ৩১শে আগস্ট একেবারে কাছাকাছি। এ অবস্থায় সেখানে আরো হামলার সতর্কতা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। 

তিনি বলেছেন, এই হামলা আজই দিনের শুরুর দিকে ঘটতে পারে। তাকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন কমান্ডাররা। সুনির্দিষ্ট, বিশ্বাসযোগ্য এমন হুমকির প্রেক্ষিতে সব মার্কিন নাগরিককে ওই এলাকা ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ওই বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

বৃহস্পতিবার এই বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ১৭০ জন নিহত হওয়ার পর আতঙ্ক চরম আকার ধারণ করছে। যেকোনো সময় আরো বড় হামলার আশঙ্কা বিরাজ করছে। বিশেষ করে ৩১শে আগস্ট ডেডলাইন যতই ঘনিয়ে আসছে, আতঙ্ক ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহস্পতিবারের হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএসের স্থানীয় গ্রুপ ইসলামিক স্টেট ইন খোরাসান প্রভিন্স (আইএস-কে)। এর প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুক্রবার দিনশেষে পূর্বাঞ্চলে আইএস-কে’র হামলা পরিকল্পনাকারীকে ড্রোন হামলায় হত্যা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পরে জানানো হয়েছে, সেখানে আইএস-কে’র উচ্চ পর্যায়ের দু’নেতা মারা গেছেন। এর মধ্যে অন্যজনকে সুবিধাদানকারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। তবে এখনও এটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে, কাবুল বিমানবন্দর হামলা পরিকল্পনার সঙ্গে তারা সরাসরি যুক্ত ছিলেন কিনা। শনিবার জো বাইডেন বিবৃতিতে বলেছেন, এই হামলাই শেষ হামলা নয়। যারাই বিমানবন্দরে হায়েনার মতো হামলা করেছে, তাদের সবার বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে ব্যবস্থা নেবো আমরা এবং তাদেরকে মূল্য দিতে হবে।

আফগানিস্তানে সবচেয়ে কট্টর এবং সহিংস জিহাদি গ্রুপ হলো আইএস-কে। তালেবানদের সঙ্গে তাদের রয়েছে বড় রকমের পার্থক্য। বর্তমানে আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ করছে তালেবানরা। কিন্তু তালেবানদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তালেবানরা যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করেছে। অন্যদিকে আইএস-কে’র বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলার নিন্দা জানিয়েছে তালেবানরা। তারা বলেছে, প্রথমে এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা করা উচিত ছিল।

যুক্তরাষ্ট্র ওই বিমানবন্দর থেকে তাদের সেনাদের প্রত্যাহার শুরু করেছে। বর্তমানে সেখানে তাদের সেনা সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার হাজার। গত সপ্তাহে এ সংখ্যা ছিল ৫৮০০। এখন উদ্ধার অভিযান প্রায় শেষ পর্যায়ে। হাতে সময় মাত্র দু’দিন। এ সময়কে সবচেয়ে বিপজ্জনক হিসেবে দেখা হচ্ছে। হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা বলেছেন, কাবুল বিমানবন্দরে এখন এক হাজারের কিছু বেশি বেসামরিক মানুষ অপেক্ষা করছেন। তাদেরকে উদ্ধার করা হবে। এ অবস্থায় বিমানবন্দরের চারপাশে আরো চেকপয়েন্ট বসিয়েছে তালেবানরা। বার্তা সংস্থা এপি বলেছে, তারা এখন বেশির ভাগ আফগানকে এসব পোস্ট অতিক্রম করতে দিচ্ছে না।

ওদিকে সব মিলে গত দু’সপ্তাহে আফগানিস্তান থেকে আফগান ও বিদেশি মিলে এক লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার আফগানিস্তান থেকে সর্বশেষ ফ্লাইট অবতরণ করেছে ইতালির রাজধানী রোমে। তারা মোট ৫ হাজার আফগান নাগরিককে উদ্ধার করেছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় এ সংখ্যা সর্বোচ্চ। ফ্রান্স ১৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে কমপক্ষে ২৮০০ মানুষকে উদ্ধার করেছে। জার্মানি উদ্ধার করেছে প্রায় ৪ হাজার মানুষকে। বৃটিশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল স্যার নিক কার্টার বলেছেন, তারা কোনো আফগানকেই উদ্ধার করতে পারেননি বলে তার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে।

এখন আকাশপথে উদ্ধার অভিযান ক্রমশ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় আফগানরা তাদের দেশের সঙ্গে প্রতিবেশী অন্য দেশগুলোর সীমান্তে ভিড় করছেন। বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তান সীমান্তে জড়ো হয়েছেন। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর স্পাইন বোল্ডাক উন্মুক্ত রয়েছে। কিছু মানুষ সেখান দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছেন। তবে প্রধানতম ক্রসিং পয়েন্ট তোরখাম এখনও বন্ধ আছে।


   আরও সংবাদ