বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৪:১৯ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৮৩০ বার
ভারতের উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরে বিশাল কৃষক বিক্ষোভ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিতর্কিত তিন কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে অন্তত পাঁচ লাখ কৃষক রাজপথে মিছিল করে সমাবেশে যোগ দেন।
করোনা মহামারিকালে গত ৯ মাসে কৃষক আন্দোলনের ব্যানারে যত কর্মসূচি হয়েছে, তার মধ্যে রোববার মুজাফফরনগরের বিক্ষোভ ছিল সবচেয়ে বড়। সেখান থেকে কৃষক আন্দোলনের মুখপাত্র রাকেশ তিকায়েত দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। খবর রয়টার্স, এনডিটিভি ও ইন্ডিয়া টুডের
কৃষিতে করপোরেট বিনিয়োগের পথ সহজ করে ভারত সরকার তিনটি আইন প্রণয়ন করে। সরকারের দাবি, কৃষকদের ভালোর জন্য এসব করা হয়েছে। তবে কৃষকদের আশঙ্কা, কৃষি ক্ষেত্রে তাদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ফলে তা বাতিলের দাবিতে টানা বিক্ষোভ করে আসছেন তারা। করোনা মহামারির মধ্যেও দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাবসহ বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ হলেও স্থানীয় গণমাধ্যমে তা সেভাবে উঠে আসেনি। তবে রোববার লাখো মানুষ রাস্তায় নামায় বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্ব পেয়েছে।
রোববার স্থানীয় পুলিশের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, মুজাফফরনগরের বিক্ষোভে কমপক্ষে পাঁচ লাখ কৃষক অংশ নিয়েছেন।
উত্তরপ্রদেশ ভারতের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য। সেখানে প্রায় ২৪ কোটি মানুষের বসবাস। আগে থেকেই কৃষি সেখানকার বড় সম্পদ। রোববারের বিক্ষোভে কৃষকদের অংশগ্রহণ থেকেও প্রমাণিত হয়েছে, কৃষকরা মোদি সরকারের বিতর্কিত তিন আইন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে রাকেশ তিকায়েত বলেন, উত্তরপ্রদেশের প্রতিটি শহরে আমাদের আন্দোলন পৌঁছে দেব। রাজ্যের মানুষকে জানাতে চাই, মোদি সরকার ও তার দল কৃষকবিরোধী।
তিনি আরও বলেন, আগামী বছর অনুষ্ঠেয় উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে প্রচার করবেন কৃষকরা।
সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিকায়েত বলেন, কেন্দ্র সরকার বলছে, কয়েকজন কৃষক প্রতিবাদ করছেন। তাদের দেখাতে চাই, আসলে কত কৃষক আছেন। আমরা এমন আওয়াজ তুলব, যা সংসদে বসে শোনা যাবে। যদি সরকার আমাদের সমস্যা বোঝে, তাহলে ভালো। না হলে দেশজুড়ে এ ধরনের বিক্ষোভ-সমাবেশ চলবে। দেশ যাতে বিক্রি না হয়ে যায়, কৃষক, শ্রমিক, যুব সম্প্রদায় যাতে বেঁচে থাকতে পারে, সেদিকে আমাদের নজর রাখতে হবে।
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ২৭ ভারতজুড়ে ধর্মঘট পালনের পরিকল্পনা রয়েছে কৃষকদের। এর আগে রাজধানী নয়াদিল্লি অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ চালিয়েছিলেন কৃষকরা। অনেকে সেখানে অস্থায়ী ঘর তৈরি করে অবস্থান নিয়েছিলেন। কেউ কেউ সেখানে এখনও রয়েছেন। মোদি সরকারের পক্ষ থেকে আইন তিনটি সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়া হলেও কৃষকরা তা প্রত্যাখ্যান করে বাতিলের দাবিতে অটল থাকেন।
এদিকে হরিয়ানায় কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে সবার নজর কড়েছেন গুরনাম সিং চান্দুনি। ইন্ডিয়ান এপপ্রেস তাকে নিয়ে সাপ্তাহিক বিশেষ আয়োজনে লিখেছে, হরিয়ানার রাজনৈতিক দলগুলো তাকে দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে তুলনা করছে। কৃষক আন্দোলনের মধ্য থেকে উঠে রাজনীতিতে জনপ্রিয় হচ্ছেন তিনি।