বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ৩ অক্টোবর, ২০২১ ১০:১৯ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬৯০ বার
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফুরফুরে মেজাজে থাকা বাংলাদেশ দল কাল অনুশীলন করেছে মালের টার্ফ গ্রাউন্ডে। ফিফার অর্থায়নে টার্ফের মাঠ দু’টি তৈরি করেছে মালদ্বীপ ফুটবল এসোসিয়েশন। এখানেই অনুশীলন করে মালদ্বীপের ক্লাবগুলো। পাশে রয়েছে মিনি টার্ফ ও প্রধান ক্রিকেট স্টেডিয়াম। মিনি টার্ফ সকলের জন্য উন্মুক্ত। চাইলে যে কেউ সেখানে অনুশীলন করতে পারে। এক নম্বর টার্ফে দুই ভাগে কাল অনুশীলন করে বাংলাদেশ দল। শ্রীলঙ্কা ম্যাচে যারা একাদশে ছিলেন তারা হালকা স্ট্রেচিংয়ের পর আইস বাথ নেন।
বাকিদের নিয়ে ঘণ্টাখানেক কাজ করেন কোচ অস্কার ব্রুজন। তবে পায়ে হালকা ব্যাথ্যার কারণে এদিন অনুশীলন করেননি তপু বর্মণ। মাঠে পাশে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে খুনসুটি করেই সময় কাটান শ্রীলঙ্কা ম্যাচের জয়ের নায়ক। তারিক কাজীকে নিয়ে আলাদা কাজ করেছেন বাফুফের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলি। বরাবরই সাফে সর্বেসবা ভারত। ১২ আসরের মধ্যে সাতটির শিরোপা জিতেছে তারা। ভারত এবার সাফে এসেছে পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই। পরম্পরা মেনে এটা যে তাদের শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন! সেটা মাথায় আছে বাংলাদেশেরও। তবে এসব নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয় বাংলাদেশ দল। ম্যাচের দু’দিন আগের অনুশীলনে অন্তত তাই মনে হয়েছে। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে জামাল-তপুদের দায়িত্ব নেয়া কোচ অস্কারকেও বেশ নির্ভার মনে হয়েছে পুরো অনুশীলন সেশনে। প্র্যাকটিসের পাশাপাশি দলকে উজ্জীবিত করতে দেখা গেছে এই স্প্যানিশ কোচকে। জ্বরের কারণে প্রথম ম্যাচ খেলতে পারেননি সোহেল রানা। মালদ্বীপ এসে কালই প্রথম দলের সঙ্গে অনুশীলন করলেন ঢাকা আবাহনীর এই মিডফিল্ডার। অনুশীলন শেষে সোহেল রানা বলেন, ‘প্রথম ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কোচ, খেলোয়াড় আমরা সবাই চেয়েছিলাম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় দিয়ে আসর শুরু করতে। তাতে টুর্নামেন্টে একটা ভালো অবস্থানে থাকতে পারছি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জেতার পর খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। যেটা ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে আমাদের সাহায্য করবে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে ভুলগুলো করেছি, যেমন ফিনিশিংয়ে কিছু সমস্যা ছিল সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। ভারতের বিপক্ষে হয়তো আমরা এত সুযোগ পাবো না। যে সুযোগগুলো পাবো, সেগুলো যাতে ফিনিশ করতে পারি, সেদিকেই আমাদের নজর থাকবে। ভারত ম্যাচ নিয়ে এই মিডফিল্ডার বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে একটা আলাদা উত্তেজনা সবসময়ই থাকে। আর আমরাও ওদের বিপক্ষে ম্যাচটা খুব ইতিবাচকভাবে নেই। কারণ, ওদের বিপক্ষে আমরা সবসময় ভালো খেলতে চাই। আসরে যদি ভালো অবস্থানে থাকতে হয় তবে ভারতের বিপক্ষে আমাদের ভালো রেজাল্ট করতে হবে। ভালোভাবে আমরা প্রথম ম্যাচ শেষ করেছি। আশা করছি পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা খেলতে পারবো। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমরা বল পজেশনে এগিয়ে থেকে জয় পেয়েছি। কোচও এভাবে খেলাতে পছন্দ করেন। একই আত্মবিশ্বাস নিয়ে যদি খেলতে পারি তবে ভারতের বিপক্ষেও ভালো ফুটবল খেলার সুযোগ আছে আমাদের। ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা প্রথম ম্যাচটা জিতেছি তাই আমাদের অবস্থান এখন ভালো। স্বাগতিক মালদ্বীপ নেপালের কাছে হেরে যাওয়ায় আমাদের ফাইনাল খেলার সুযোগটা নিশ্চয়ই বেড়েছে। আগামীকালের ম্যাচ নিয়ে ইব্রাহিম বলেন, বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ সবসময়ই হাইভোল্টেজ লড়াই। ম্যাচটা খেলার জন্য দলের সবাই মুখিয়ে আছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই এক্সাইটেড কারণ, আমরা সল্টলেকের ম্যাচটায় ভালো খেলেও জয় নিয়ে আসতে পারিনি। সেই জয়টা এখানে পেতে চাই।’
শ্রীলঙ্কা ম্যাচে বল পজিশনে অনেক এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। গোলের সুযোগ তৈরি হয়েছিল একাধিক। কিন্তু ফরোয়ার্ডরা সেসব সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। এসব নিয়ে ইব্রাহিম বলেন, ‘টোটাল ফুটবলে কেবল স্ট্রাইকাররাই গোল করবে এরকম কোনো কথা নেই। মাঝে মধ্যে মিডফিল্ডাররা গোল করবে, কখনও কখনও উইঙ্গাররা গোল করবে। আসলে কোচ খুব অল্প সময় পেয়েছেন ফিনিশিং নিয়ে কাজ করার। তিনি যদি আরও একটু সময় পেতেন বা আমরাও যদি আরও একটু সময় পেতাম তাহলে এই জায়গাটায় আরও ভালো হতো। আমরা যে পজেশনাল ফুটবল, পাসিং ফুটবল খেলতে পারি শ্রীলঙ্কার সঙ্গে এটা সবাই দেখেছে। ইনশাল্লাহ ভারতের বিপক্ষে আমরা এই ধারায় খেলার চেষ্টা করবো। ফিনিশিং নিয়ে আশা করি আমরা প্রতি দিনই উন্নতি করতে পারবো। আমাদের নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়াটা বাড়াতে হবে আরও। সেটা করতে পারলে আমরা ভালো করবো।’
সোহেল সেরে উঠলেও জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন ডিফেন্ডার রেজাউর করিম রেজা। এ বিষয়ে ম্যানেজার সত্যজিদ দাস রূপু বলেন, ‘রেজা গতকাল থেকে কিছুটা অসুস্থ। তবে আশা করছি দুই একদিনের মধ্যে ও সুস্থ হয়ে যাবে। এছাড়া দলের মধ্যে বড় কোনো ইনজুরি সমস্যা নাই। আশা করছি পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই ভারত ম্যাচে মাঠে যেতে পারবো আমরা।’