বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ৯ অক্টোবর, ২০২১ ১২:৩৭ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৭৫৫ বার
মনপুরা চলচ্চিত্রের ‘যাও পাখি বলো তারে’ কে গেয়েছিলেন? আমাদের দেশে গান যারা মোটামুটি নিয়মিত শোনেন অথবা কম শোনেন, তারাও গানটির সঙ্গে পরিচিত। তারা আরও পরিচিত গানটির গায়িকা কৃষ্ণকলি ইসলামের সঙ্গে। জনপ্রিয় এই শিল্পী কোভিডকালের আগে থেকেই স্টেজ শো করা প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিলেন। অবশেষে প্রায় দুই বছরের নিরবতা ভেঙে আবার মঞ্চে ফিরলেন কৃষ্ণকলি। শুক্রবার সন্ধ্যায় পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে সমগীত সঙ্গীত প্রাঙ্গণের আয়োজনে ‘গানে প্রাণে’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আবার গাইলেন দর্শকদের জন্য। শুধু কৃষ্ণকলি নন, এদিন মঞ্চ মাতিয়েছিলেন সমগীত ঢাকা, ব্যান্ড গংগাফড়িং, নিষিদ্ধ, কাকতাল, লীলা আর আহমেদ বাবলু।
শ'দুয়েকের মতো দর্শকের জায়গা হয় সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের খোলা প্রাঙ্গণে। সন্ধ্যার আগে থেকেই কুয়াশা জমতে জমতে শিশির ফোঁটার মতো করেই বাড়ছিলো ভীড়। একপর্যায়ে তিল ধারণের আর জায়গা ছিল না সেখানে। সংগীত পিয়াসী তরুণ-তরুণীদের মেলা লেগেছিলো নতুন প্রাণের উচ্ছ্বাসে। মুখে হাসি নিয়ে সবাই যেন স্বাগত জানাচ্ছিলো স্তিমিত হয়ে আসা করোনাকালের স্বস্তি, আবার ফিরে পাওয়া গানের পুরনো আড্ডাকে।
‘তোমরা না যাইও সইরে, না যাইও যমুনার জলে’। ঢোল, দোতারা, গিটারের ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে গোয়ালপাড়িয়া লোকগানে অনুষ্ঠানের শুরুটা যেন আরও বেশি মাতাল হয়ে উঠেছিল রাজধানীর বুকে। এ ছাড়াও সমগীতের ঢাকা ইউনিটের শিল্পীরা গেয়ে শোনান তাদের মৌলিক গান ‘রোদের এক হাট বসেছে পরানপুর’। ছোটদের গানের দল ‘গঙ্গাফড়িং’ গেয়ে শোনায় তাদের করা গান ‘এই জারুল, ডাকছি তোকে শোন’ আর ‘উড়ে যায় মেঘ সফেদ সফেদ’। এই দলটিতে ছিলেন ফাইরুজ, জয়, কাব্য, সুমিত, ইফাজ, মৃত্তিকা আর সরোজ। ব্যান্ড নিষিদ্ধ গায় ‘শূন্যের মাঝে ঘুরছে পৃথিবী’, ‘কোথাও না কোথাও তুমি নিশ্চই আছো’ আর ‘সাইরেন’ এর মতো শ্রোতাপ্রিয় গানগুলো। এর বাইরে ব্যান্ড কাকতাল ‘কিছু নেই’, ‘অদ্ভুত’ আর ‘আবার দেখা হবে’ শিরোনামের গানগুলো গেয়ে কুড়িয়ে নিয়েছে দর্শক-শ্রোতাদের প্রশংসা আর হাততালি। আহমেদ বাবলু গেয়ে শোনান গান ‘নাগরিক নদীর গল্প’।
প্রায় শেষদিকে মঞ্চে আসলেন কৃষ্ণকলি। এই কৃষ্ণকলিকেই তো এতোদিন দেখতে চেয়েছিলো সবাই। ‘গানের দল ও কৃষ্ণকলি’ ব্যান্ড দল নিয়ে এ শিল্পী মঞ্চ মাতিয়েছেন ‘জ্যোতির্ময়ী’, ‘ভাবনার গভীরে’, ‘চাঁদ উঠেছে ওই’, ‘রাত্রিদিন’ এর মতো অপ্রকাশিত গানগুলো দিয়ে। কৃষ্ণকলি ছাড়া দলের অন্য সদস্যরা হলেন অর্ক, আহনাফ, অনিক, রাতুল ও শুভ।
কৃষ্ণকলি সমকালকে বলেন, এই গানগুলো অনেক আগেই লেখা ও সুর করা হয়েছিল। অনেক স্টেজ পারফর্মেন্সেই গানগুলো গেয়েছি। এগুলো বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। গানগুলো রেকর্ড করা হয়েছে, তবে এগুলো এখনও রিলিজ করিনি। সামনের দিনগুলোতে অ্যালবাম আকারে গানগুলো শ্রোতাদের জন্য প্রকাশ করা হবে।
মাঝে দিনা তাজরিনকে সভাপ্রধান ও বীথি ঘোষকে সাধারণ সম্পাদক করে দুইবছরের জন্য সমগীতের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন আগের কমিটির সভাপতি অমল আকাশ।
কমিটি ঘোষণা শেষে তিনি বলেন, নতুন নতুন দলগুলোকে আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। আমাদের সংগঠনটা শুরু হয়েছিল নারায়নগঞ্জে, পরে আমরা ঢাকায় আমাদের কার্যক্রম শুরু করি। আজকে যাদের নতুন কমিটিতে রাখা হচ্ছে, তারা আরও সুন্দরভাবে আমাদের সংগয়হনের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এটাই কামনা।
ননবনির্বাচিত সভাপ্রধান দিনা তাজরিন বলেন, এই আয়োজনগুলো করার জন্য ভেতরের সাংগঠনিক সক্ষমতার প্রয়োজন আছে। চেষ্টা করবো আমরা সমগীতকে সবার কাছে পৌঁছে দিতে পারি। নতুনরা আসবে এবং গাইবে, এই প্রচেষ্টাটা আমরা যেন চালু করতে পারি।