ঢাকা, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

বুক জ্বালাপোড়া : কারণ ও প্রতিরোধ

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৪:১২ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫৪৭ বার


বুক জ্বালাপোড়া : কারণ ও প্রতিরোধ

অতি প্রচলিত এবং সার্বজনীন স্বাস্থ্যগত সমস্যা জিইআরডি বা গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্ল্যাক্স ডিজিজ (GERD)। 

সাধারণের কাছে যা পরিচিত গলা ও বুক জ্বালাপোড়া রোগ হিসেবে। এ রোগে আক্রান্ত হলে পাকস্থলী থেকে এসিড, পিত্তরস এবং খাবার খাদ্যনালী হয়ে উঠে আসে উপরের দিকে। 

দীর্ঘদিন এমন অবস্থা চলতে থাকলে খাদ্যনালীতে সৃষ্টি হয় ক্ষত। যার ফলে দেখা দেয় বুক জ্বালাপোড়াসহ বিভিন্ন উপসর্গ।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. চঞ্চল কুমার ঘোষ।

ফুসফুসের ভেতরের ক্ষুদ্র থলে বা অ্যালভিওলাইয়ের কিছু দেওয়াল নষ্ট হয়ে যায়। ফুসফুসের ক্ষুদ্র নালিগুলোর স্থিতিস্থাপকতা কমে, নালির দেওয়াল মোটা হয়ে বাতাস প্রবেশের পথ সরু হয়। সমস্যা সৃষ্টি করে শ্বাসপ্রশ্বাসে। এতে বুক জ্বালাপোড়া বেড়ে যায়।

মূলত আমরা যখন খাই, সেটি একমুখী চলাচল করে। এটি কখনো উল্টো দিকে আসে না। যদি কখনো অস্বাভাবিকতা থাকে তখন খাবার নিচের দিকে না যেয়ে উপরের দিকে চলে আসে বলে জানান ডা. ফারুক আহমেদ।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, খাদ্যনালী এবং পাকস্থলির মাঝখানে একটি বাল্ব আছে, যার কারণে খাবারটা একদিকে যায়। এই বাল্বটা যদি কোনো কারণে কাজ করতে না পারে, তখন বিপত্তিটা হয়।

কখনো বেশি আরামে থাকার কারণে বাল্ব তার কাজ ঠিকমতো কাজ  করতে পারে না বলেও জানান এই চিকিৎসক। এছাড়া, ওজন বেশি থাকলে বা বেশি খাওয়া-দাওয়া করলে, অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার এবং অ্যালকোহল এর কারণেও এমনটা হতে পারে বলে জানান ডা. ফারুক আহমেদ।

সাধারণত সপ্তাহে দুইবারের বেশি বুক জ্বালাপোড়া অনুভব করাকে জিইআরডির প্রাথমিক লক্ষণ মনে করা হয়। এছাড়া গলায় জ্বালা, বুক বা পেটের উপরিভাগে ব্যথা, খাবার উপরের দিকে ওঠে আসা, গিলতে সমস্যা, মুখে তিক্ত স্বাদ অনুভূতসহ বেশ কিছু সমস্যাকে জিইআরডির উপসর্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন সব বয়সী।

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে এ রোগে ভুগছেন ১৫ শতাংশ মানুষ। আর এশিয়ার দেশগুলোতে ক্রমেই বাড়ছে এর প্রকোপিটিসি।

সঠিক সময়ে যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ৫ থেকে ১০ শতাংশ দীর্ঘমেয়াদী জটিলতার ঝুঁকিতে রয়েছেন। যার মধ্যে আছে খাদ্যনালীতে প্রদাহ, ক্ষত, আলসার, খাদ্যনালী সরু হয়ে যাওয়া, দীর্ঘমেয়াদী কাশি, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, দাঁত ক্ষয়, ঘুমের সমস্যা আর খাদ্যনালীতে ক্যান্সার। 

বিশেষজ্ঞতা বলছেন, স্থুলতা, ফাস্টফুড, তৈলাক্ত-ভাজাপোড়া খাবার, ভুড়িভোজ, কোমল পানীয় প্রবণতা, ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, অতিরিক্ত চা-কফি পান বুক জ্বালাপোড়া রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে এসব বিষয় পরিহারের পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিত জীবনধারা আর স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি পান, নিয়মিত শরীর চর্চা এবং কায়িম শ্রমের মাধ্যমে রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।


   আরও সংবাদ