ঢাকা, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

করোনা প্রতিরোধে ঘরোয়া টোটকা

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২০ জানুয়ারী, ২০২২ ০৯:০৮ পূর্বাহ্ন | দেখা হয়েছে ৫১২ বার


করোনা প্রতিরোধে ঘরোয়া টোটকা

মানুষ কীভাবে সুস্থ থাকতে পারে এবং কোন উপায়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে, তা নিয়ে নানামুখী গবেষণা হয়েছে বিশ্বজুড়ে। চিকিৎসক এবং পুষ্টিবিজ্ঞানীরা বলছেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী না হলে অল্প অসুস্থতাতেও মানুষ খুব সহজে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রোগের আক্রমণও দ্রুত হয়ে থাকে।

বিশ্বে করোনা মহামারী প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো দরকার। আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রমতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি অনুসরণ, একটি কার্যকর উপায় হতে পারে।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বহুল ব্যবহৃত কিছু আয়ুর্বেদিক পদ্ধতি চ্যানেল আই অনলাইন পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

হলুদ মেশানো দুধ
হলুদের গুঁড়া বা শিকড় দিয়ে সিদ্ধ এক কাপ দুধ শুধু ভালো ঘুমের জন্যই সাহায্য করে না, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্যও বিস্ময়কর কাজ করে। প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এটি পান করা ক্লান্তি কমাতে পারে, পাশাপাশি গলা চুলকানি প্রশমিত করতেও সাহায্য করে।আমাদের শরীরে যেসব রোগ জীবাণু সংক্রমণ ঘটায় সেগুলো ধ্বংস করতে সাহায্য করে। হলুদে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরের প্রদাহ প্রতিরোধ করতে পারে এবং আমাদের মস্তিষ্ককে ভালো রাখতেও সাহায্য করে। ১৫০ গ্রাম গরম দুধে আধা চা চামচ হলুদ মিশিয়ে খাওয়ার জন্য উপদেশ দিয়ে থাকে আয়ুর্বেদ শাস্ত্র।

নস্য থেরাপি
নস্য থেরাপি হল সংক্রমণ সৃষ্টিকারী ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়াগুলো প্রবেশ রোধ করতে নাকের মধ্যে ঘি, তিলের তেল বা নারিকেল তেলের কয়েক ফোঁটা প্রয়োগ করার একটি সহজ কৌশল। এই থেরাপিটি নাক বন্ধ করার জন্য একটি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত আয়ুর্বেদিক প্রতিকার। তেল লাগানোর সবচেয়ে ভালো সময় হলো ঘর থেকে বের হওয়ার আগে বা গোসলের আগে। শুধু নাকের ছিদ্রে দুই ফোঁটা তেল দিতে হবে এবং কয়েক মিনিট শুয়ে থাকতে হবে।

চবনপ্রাশ
প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ চবনপ্রাশ অন্যতম জনপ্রিয় একটি আয়ুর্বেদিক মিশ্রণ। সুস্বাস্থ্য গড়ে তুলতে যুগ যুগ ধরে এর ব্যবহার হয়ে আসছে। সর্দি-কাশির মতো সাধারণ সমস্যা থেকে বাঁচতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চবনপ্রাশ খাওয়ার কথা আজও বলেন বাড়ির বয়স্ক মানুষরা। এরমধ্যে থাকা ভেষজ উপাদানগুলি সর্দি, কাশি, ঠান্ডা লাগার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। চবনপ্রাশ আয়ুর্বেদিক ওষুধের মতো কাজ করে, যা এই অতিমারির সময় শরীর সুস্থ এবং ফিট রাখতে সাহায্য করতে পারে। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন গবেষণায় দেখেছেন, এতে উপস্থিত পিপ্পলি শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য কার্যকরী। হলুদ মেশানো দুধ অথবা গরম পানির সাথে এক চা চামচ চবনপ্রাশ মিশিয়ে খেলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

যোগ ব্যায়াম
ইয়োগা বা যোগ ব্যায়াম রোগ প্রতিরোধ ক্ষতা বাড়াতে বিশেষ কার্যকর। আমাদের শরীরে খাদ্যের চেয়ে শ্বাসের গুরুত্ব অনেক বেশি। কারণ, খাদ্য ছাড়াও মানুষ বা অন্যান্য জীব বেশ কিছুদিন বেঁচে থাকতে পারে, কিন্তু কয়েক মিনিট অক্সিজেন বন্ধ থাকলেই জীবন শেষ। নিয়মিত যোগ ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমাদের শরীর ও মন ভালো রাখা সম্ভব। আর করোনার এই মহামারির সময়ে শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করার বিকল্প নেই।।শারীরিক ও মানসিক শান্তি লাভ করা এবং রক্তে অক্সিজেন এর পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য যোগ ব্যায়াম করার কথা বলা হয়ে থাকে।

 

ভেষজ চা
নিজেকে সতেজ রাখতে আমরা চা পান করি। দীর্ঘসময় টানা কাজ করার ফলে শরীরে যে ক্লান্তি আসে, তা এই পানীয় দূর করতে সাহায্য করে থাকে। চায়ে শুধু ক্লান্তিই দূর হয় না, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।

বিভিন্ন মসলা, ভেষজ ও ফল দিয়ে তৈরি করা ভেষজ চা নিয়মিত পান করলে তা থেকে আমরা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ ও ভিটামিন পেতে পারি। এগুলো ওজন কমাতে, ডিটক্সিফিকেশন এবং হজমে সহায়তা করে থাকে। তুলসি, পুদিনা, আদা, লেবু, মধু ইত্যাদি ব্যবহার করে এ ভেষজ চা তৈরি করা হয়। ভেষজ চা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আমাদের শরীর ও মনকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে থাকে ।


   আরও সংবাদ