ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪,
সরকার অনুমোদিত নিবন্ধন নম্বর ১৯১
Reg:C-125478/2015

অনশন ভাঙলেও থামছে না ভিসিবিরোধী আন্দোলন

ডেস্ক রিপোর্ট


প্রকাশ: ২৬ জানুয়ারী, ২০২২ ২০:৩২ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪৯৩ বার


অনশন ভাঙলেও থামছে না ভিসিবিরোধী আন্দোলন

ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে টানা সাত দিনের মাথায় আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের পর প্রিয় দুই শিক্ষকের অনুরোধে অনশন ভাঙলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ জন ছাত্রছাত্রী। তবে ভিসিবিরোধী চলমান আন্দোলন এখনই থামছে না। এই আন্দোলন চালিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ড. ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান। এর আগে মঙ্গলবার গভীর রাত ৪টার দিকে ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে আসেন তারা। 

এদিকে শাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে জিইয়ে রাখতে অর্থসহায়তাকারী ৩৫৭ জনকে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবাই শাবিপ্রবির সাবেক ছাত্র। 

সরকারের গ্রীণ সিগন্যাল : 
আন্দোলনত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনার সময় জাফর ইকবাল জানান, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে তার আলোচনা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি পেয়েই তিনি শাবি ক্যাম্পাসে ছুটে এসেছেন। এর আগে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে শাবির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে জুম মিটিং করেন এই শিক্ষক দম্পতি। এরপর তারা সিলেটে রওয়ানা দেন। বুধবার গভীর রাত ৩টা ৫৪ মিনিটে জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হক শাবির প্রধান ফটকে পৌঁছেন। এরপর ৪টার দিকে তারা যান অনশনস্থলে। সেখানে আন্দোলনরতদের সাথে কথা বলেন জাফর ইকবাল। 

অনশনকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমরা জানো না, তোমরা কতো বড় আন্দোলন করেছ। সবকটি বিশ্ববিদ্যালয় এখন কাঁপছে। তোমরা যেটা চেয়েছ, সেটা পাবে। এটা তোমাদের ক্যাম্পাস। তোমরা যেভাবে সাজাতে চাও সেভাবেই ক্যাম্পাস সাজানো হবে। কিন্তু এখন অনশন ভাঙতে হবে। তোমাদের আন্দোলনের কারণে ৩৪ জন ভাইস চ্যান্সেলরের ঘুম নেই। তোমরা অনশন না ভাঙলে আমিও যাব না। এখানেই থাকব। তোমাদের না খাইয়ে আমি যাব না। পরে জাফর ইকবালের অনুরোধে অবশেষে অনশন ভাঙতে রাজি হন শিক্ষার্থীরা।

ডাকা হয়নি শিক্ষকদের :
 শাবি’র ২৮ জন শিক্ষার্থী অনশন ভাঙার সময় কোনো শিক্ষক বা শিক্ষক সমিতির কাউতে ডাকা হয়নি। ছিলেন না শিক্ষক সমিতির কোনো সদস্যও। এতে ক্ষোভ ক্ষোভ প্রকাশ করেন শাবি শিক্ষকবৃন্দ। 

আন্দোলনে অর্থ সহায়তাকারী ৩৫৭ জন! :
 শাবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অর্থ সহায়তাকারী হিসেবে ৩৫৭ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবাই শাবিপ্রবির সাবেক ছাত্র। প্রশাসন মনে করছে- শাবির এই আন্দোলনকে কোনোপক্ষ পুঁজি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার পাঁয়তারায় লিপ্ত ছিল।

পুলিশ সূত্র জানায়, শাবিপ্রবি’র আন্দোলনকে জিইয়ে রাখতে অর্থসহায়তাকারী ৩৫৭ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তারা কেন এই আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে এতো উৎসাহী ছিল- তা খুঁজছে পুলিশ। আন্দোলনটি কোনো সরকারবিরোধী চক্রান্তের অংশ কি-না, অর্থ জোগানের কারণ, অর্থ জোগান ও ইন্ধদাতাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ, গ্রেফতারকৃতদের রাজনৈতিক পরিচয় ও অর্থ জোগানের কারণ এবং এই আন্দোলনে জামায়াত-বিএনপি’র মদদ আছে কি-না এসব বিষয় মাথায় নিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। 

পুলিশ জানায়, ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অর্থ-সহায়তা দেয়া ৩৫৭ জনকে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনায় সোমবার শাবিপ্রবির সাবেক পাঁচ ছাত্রকে ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)। পরে তাদেরকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কাছে হস্তান্তর করে সিআইডি।

এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার নিশারুল আরিফ বলেন, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। এই আন্দোলনকে চাঙা করার নেপথ্যে কী? কেন এতো অর্থ সহায়তা? এর পেছনে কীভাবে এবং কোন কারণে এতো লোক জড়িত হলো? এসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ কমিশনার বলেন, এই আন্দোলনে ৩৫৭ জন অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। তাদের পরিচয় চিহ্নিতকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। আন্দোলনে রাজনৈতিক ইন্ধন আছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

তথ্য ও ভিডিও চায় তদন্ত কমিটি : 
গত ১৬ জানুয়ারি বিকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন চলাকালে পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ-শিক্ষার্থীসহ আহত হন অর্ধশতাধিক। এ ঘটনায় ১৭ জানুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি ঘটনার তথ্য ও ভিডিও চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। 

গতকাল সিলেটের একটি স্থানীয় পত্রিকায় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক শাবির স্কুল অব ফিজিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদার ‘গণবিজ্ঞপ্তি’ শীর্ষক এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। 

এতে বলা হয়েছে, শাবিতে গত ১৬ জানুয়ারি সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু ও যথাযথ তথ্য উদঘাটনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি প্রত্যক্ষদর্শীদের নিকট থেকে প্রকৃত তথ্য ও প্রমাণাদি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করছে। ১৬ জানুয়ারি সংঘটিত ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য এবং ভিডিওক্লিপ আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে ডিন, ফিজিক্যাল সায়েন্সেসের অফিস কক্ষের সামনে রক্ষিত বক্সে জমা দেয়ার অনুরোধ করা হয়। 

বক্তব্য অথবা তথ্যসমূহ bschall2022@sust.edu এই ইমেইলে প্রেরণ করা যাবে। এক্ষেত্রে তথ্য প্রদানকারীর বক্তব্য পিডিএফ করে বর্ণিত ইমেইলে প্রেরণ করতে হবে। প্রয়োজনে ডাকযোগেও বক্তব্য বা তথ্য শাবির স্কুল অব ফিজিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন বরাবরে প্রেরণ করা যাবে। আগ্রহীগণ ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশগ্রহণ করতে চাইলে জানাতে পারবে। তথ্য প্রদানকারীর নাম, ঠিকানা, পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

অ্যারেস্ট করুন; পুলিশকে জাফর ইকবাল : 
শিক্ষার্থীরা পুলিশের মামলার কথা বললে জাফর ইকবাল বলেন, চিন্তা কোরো না, সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি আশ্বাস দিচ্ছি, মামলা প্রত্যাহার হবে। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর একটা স্মারকগ্রন্থের জন্য আমার কাছে একটা লেখা চাওয়া হয়েছিল। সেই লেখার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাকে ১০ হাজার টাকা সম্মানী দেয়া হয়েছে। আমি এই সম্মানীর টাকাটা নিয়ে এসেছি। এই আন্দোলনের ফান্ডে আমি টাকাটা দিচ্ছি। তোমরা রাখো। এবার পারলে আমাকে ‘অ্যারেস্ট’ করুক। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন জাফর ইকবাল।

কি কথা হলো শিক্ষার্থী-জাফর ইকবালের : 
শিক্ষামন্ত্রী, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ সবাই চেষ্টা করেও শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে পারেননি। অবশেষে প্রায় ১৬৩ ঘণ্টা পর শাবির সাবেক দুই শিক্ষক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হকের চেষ্টায় অনশন ভেঙেন শিক্ষার্থীরা। এ দম্পতি বুধবার ভোররাত ৪টায় ক্যাম্পাসে পৌঁছেন। এরপর অনশনকারী ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। দীর্ঘ আলাপ শেষে অনশনকারী ছাত্রছাত্রীরা অনশন ভাঙতে রাজি হন এবং সকালে অনশন ভাঙলেন তারা। পরে জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হক দুজন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন। 

জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি পারমিশন ছাড়া ঢুকে গেছি। কাজেই আমি টেকনিক্যালি স্পিকিং, আমি বহিরাগত।’ তখন এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যার, ক্যাম্পাসটা আমাদের স্যার। প্রশাসনের না। ডিসিশান আমাদের হবে।’ 

জাফর ইকবাল বলেন, ‘অবশ্যই তোমাদের! আমি এখানে এসেছি, কারণ আমাকে একদম উচ্চ পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, তোমাদের দাবি-দাওয়া পূরণ করা হবে। আমি সেজন্যই এসেছি।’ শিক্ষার্থীরা তখন হাততালি দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। 
জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছে, তোমাদের সকল দাবি-দাওয়া লিখে উনাদেরকে পৌঁছে দিতে।’ তখন শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘স্যার, আমাদের দাবি একটাই (ভিসির পদত্যাগ)।’ জাফর ইকবাল বলেন, ‘শুধু একটা দাবি না, আরো দাবি আছে। এ সময় এক মেয়ে শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যার, এমন মানুষের কাছে আমাদের কুক্ষিগত করে রাখবেন না, যে কথায় কথায় আমাদের ওপর গুলি চালাবে। তখন জাফর ইকবাল খানিকটা ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘তোমরা কেন কুক্ষিগত হয়ে থাকবে? বুঝাও আমাকে? তোমাকে কে বলছে?’ ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই ক্যাম্পাসে কোনো স্বাধীনতা নাই, স্যার।’ এ পর্যায়ে জাফর ইকবাল বলেন, ‘স্বাধীনতা নাই মানে কী? তোমরা যদি বলো স্বাধীনতা আছে, তাহলে স্বাধীনতা আছে। এটা তোমাদের ক্যাম্পাস।’

তখন এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যার, আবার যে ওয়াটার ট্যাংক, রায়ট (কার) আসবে না, এটার নিশ্চয়তা নাই স্যার।’ জবাবে জাফর ইকবাল বলেন, ‘না, আসবে হয়তো। তোমরা ঠেকাবে আরেকবার, যেভাবে ঠেকাইছো। সারা বাংলাদেশের সমস্ত তরুণ প্রজন্ম তোমাদের পেছনে। সমস্ত মানুষজন তোমাদের পেছনে। তোমরা সুস্থ হও। উদাহরণ তৈরি করো। যে উদাহরণ বাংলাদেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে উদাহরণ অনুসরণ করবে। আমি তোমাদের কাছে কৃতজ্ঞ এবং সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো যে, তোমরা অনশন ভেঙেছো। এখন তোমাদেরকে হাসপাতালে যেতে হবে, তোমাদেরকে রিকভার করতে হবে। তোমরা নিজেরা নেতৃত্ব দিয়ে এতো সুন্দর একটা আন্দোলন করেছো, সারাদেশের মধ্যে উদাহরণ তৈরি করেছো।’

ভিসির পদত্যাগ নিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, ‘আমি যখন বলেছি যে, তারা (সরকার) দাবিদাওয়া মেনে নেবেন বলেছেন, তখন দাবির মধ্যে এই দাবিটাও তো পড়ে। কিন্তু সরকারেরও তো নিজস্ব টেকনিক্যাল ব্যাপার থাকে, রাজনৈতিক ব্যাপার থাকে, সেটার জন্য তাদের হয়তো একটা প্রসেস থাকে। গোপালগঞ্জের ভাইস চ্যান্সেলরকে তারা একভাবে সরিয়েছে, অন্য ভাইস চ্যান্সেলরকে অন্যভাবে সরিয়েছে। কাজেই সেটা তাদের ব্যাপার। আমার প্রাইমারি কনসার্ন ছিল, ওদেরকে অনশন থেকে বের করতে পারি কিনা।’

মামলার বাদি তাতী লীগ নেতা কি বললেন : 
শাবিপ্রবি ভিসি পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অর্থ জোগান দেয়ার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত সাবেক পাঁচ শিক্ষার্থীসহ অজ্ঞাত আরো ১০০-১৫০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। বুধবার সকালে এসএমপি’র জালালাবাদ থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন সিলেট জেলা তাতী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক লায়েক আহমদ। 

এজহারে তিনি উল্লেখ করেন- অবৈধ জনতা পথরোধ করিয়া জোরপূর্বক চাঁদাদাবী, চাঁদা আদায়সহ অপরাধ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ গ্রহণসহ ভয়ভীতি, হুমকি প্রদর্শন, ক্ষতিসাধন ও সহায়তার অভিযোগ করেন। এছাড়া মামলায় এক লাখ টাকা ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করেন তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার এসআই আবু খালেদ মামুন। 

মামলা করার কারণ জানতে বুধবার সন্ধ্যায় দিকে সুজাত আহমেদ লায়েকের সাথে মুঠোফোনে কথা হয়। এ সময় তিনি বলেন, আন্দোলনের বিষয়টি আমার ভালো লাগেনি। তাদের ডাকা হয়েছে কিন্তু তারা বসেনি। আন্দোলনকারীদের টাকা দেয়াটা অনেক বড় অপরাধ। 

তিনি বলেন, এই আন্দোলনে যারা অর্থ দিয়ে সহায়তা করছেন তারা জামায়াত-শিবির। আন্দোলনের সবকিছুতেই মনে হয় জামায়াত-শিবিরের হাত আছে। না হলে আন্দোলনকারীদের টাকা দিয়ে সাহায্য করার মানে কী। এই আন্দোলনে টাকা দিয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তাই আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে মামলাটি করেছি। শিক্ষার্থীদের ফান্ডে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল ১০ হাজার টাকা দেয়ার কথা জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধেও কি ব্যবস্থা নেবেন বা তিনিও কি জামায়াত-শিবির? এমন প্রশ্নের জবাবে সুজাত আহমেদ বলেন, স্যারের টাকা দেয়ার বিষয়টি আমি জানি না। এ বিষয়ে স্যার এবং জালালাবাদ থানার সাথে যোগাযোগ করে দেখি কিছু বলা যায় কিনা।

হচ্ছে বিভাগীয় তদন্ত, পুলিশের দায় থাকলে ব্যবস্থা : 
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পুলিশের হামলা ও হয়রানি। এ বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ সদর দফতর। বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে স্থাপিত মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন্স মিডিয়া অ্যান্ড প্লানিং) মো. হায়দার আলী খান একথা বলেন। 

তিনি বলেন, যদি তদন্তে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি হয়রানি বা হামলার ব্যাপারে সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


   আরও সংবাদ