ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ২০:১৩ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৬৭২ বার
জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার ধরন্জী ইউনিয়নের বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার (কাজী) মোঃ শফিকুল আলম (দবির) শালপাড়া সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসায় এবতেদায়ি প্রধান হিসেবে কর্মরত থাকায় জামাই এবং ছেলেসহ অন্যান্যদের দ্বারাই বিবাহ ও তালাক বিষয়ে কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করে থাকেন ।
তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়, মোঃ শফিকুল আলম পিতা মৃত নেদব আলী জাতীয় ভোটার আইডি অনুযায়ী গ্রাম পাড়ইল ডাকঘর কড়িয়া
উপজেলা পাঁচবিবি জেলা জয়পুরহাট,১৯৯১ সাল হইতে তিন দশক ধরে ধরন্জী ইউনিয়নের বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় একটি কাজী অফিস থাকলেও জনগণের প্রয়োজনে বিবাহ ও তালাক এর বিষয় রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ শফিকুল আলম কে ধরনজি ইউনিয়নে পাওয়া যায় না , যদি কোন ব্যক্তির জরুরী প্রয়োজন হয় তাহলে তার স্থায়ী বসবাসরত বাড়ি পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন আয়মারসুলপুর এর অনন্তপুর গ্রামে যেতে হয়, বিবাহ ও তালাক এর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি নিতে গেলে ১ দিন আগে রেজিস্ট্রার এর সহযোগী ধরনজি ইউনিয়ন পরিষদের কমপ্লেক্সের পার্শ্বে বসবাসরত ১/মোঃ আব্দুল কাদের পিতা মৃত গিয়াস উদ্দীন গ্রাম ধরন্জী ২/ আমিনুল ইসলাম পিতা মৃত আঃ সোবাহান গ্রাম ধরন্জী ৩/ জামাই, মোকছেদ আলী পিতা আমেদ আলী গ্রাম তাজপুর ৪/ রেজিস্ট্রারের ছেলে একাদশ শ্রেণীতে পড়ুয়া মোঃ তামিম হোসেন পিতা শফিকুল আলম গ্রাম অনন্তপুর কে অবহিত করতে হয় অথবা জরুরিভাবে পেতে গেলে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন আয়মারসুলপুর এর অনন্তপুর গ্রামে রেজিস্ট্রারের পৈত্রিক ও স্থায়ী বসবাসরত বাড়িতে যেতে হয়, সকাল বা সন্ধ্যার মধ্যে। অফিস টাইম এর মধ্যে হলে তাঁর মাদ্রাসা শালপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় যেতে হয়, ধরনজি ইউনিয়ন থেকে ৭ থেকে ১০ কিলো দূরে পাঁচবিবি উপজেলা ও জয়পুরহাট সদরের বর্ডারে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত।
এমনই এক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ১/মোঃ মেহেদী হাসান পিতা রুহুল আমিন গ্রাম পাড়ইল, ২/ মোহাম্মদ আক্কাস আলী পিতা মৃত রহিম উদ্দিন গ্রাম পাড়ইল, ৩/ নাজমুল হুদা পিতা আব্দুল হাকিম গ্রাম পাড়ইল, দ্বয় বলেন, ধরনজী ইউনিয়নের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ শফিকুল আলম, ধরনজি ইউনিয়নের স্থায়ী বসবাসরত নাগরিক না হয়ে ও তার জাতীয় পরিচয় পত্রে ধরন্জী ইউনিয়নের পাড়ইল গ্রামের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে, পাড়ইল গ্রামের কয়েকজন জনসাধারণকে শফিকুল আলম রেজিস্ট্রার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন তার বাড়ি ধরনজি ইউনিয়নে নয়, পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামে।
শফিকুল আলমের (কাজি)পাড়ইল মৌজাতে যে বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন , সেই বাড়িতে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা যায়, ঐই বাড়িতে কাজী সাহেবের বিয়ান কে পাওয়া যায়, তাঁর নাম খাদিজা বিবি স্বামী আমেদ আলী গ্রাম তাজপুর উপজেলা পাঁচবিবি, তিনি বলেন আমার ছেলে ও ছেলের বউ বেড়াতে গেছে এই কারনে আমি এই বাড়িতে আছি, তাকে যখন প্রশ্ন করা হলো এই বাড়িটির মালিক কে, তখন তিনি বলেন শফিকুল আলম (দবির) কাজি এই এলাকার কাজি হওয়ার কারণে অফিসকে দেখানোর জন্য ৫ শতক জায়গা কিনে বাড়ি নির্মাণ করে জামাইকে রাখছেন, ও কাজী সাহেবকে বিবাহ ও তালাক বিষয়ে সহযোগিতা করছেন। যা অডিও স্লিপে উল্লেখ আছে।
রেজিস্ট্রার মোঃ শফিকুল আলম এর স্থায়ী বসবাসরত অনন্তপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় রেজিস্ট্রারের বাবা, দাদা, সকলেই অনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন এবং শফিকুল সেখানেই বসবাস করতেছেন শুধু কাজী হওয়ার জন্য এনআইডি ঠিকানা টা পরিবর্তন করে ও ধরন্জী ইউনিয়নে ৫ শতক জমি ক্রয় করে ধরন্জী ইউনিয়নের বাসিন্দাদের সকল সেবা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন।
আইন মন্ত্রণালয়ের ২০০৯ সালের প্রজ্ঞাপনে ২০ নম্বর কলামে বলা হয়েছে যে,
২০। সবেতনে চাকরি গ্রহণের বাধা-নিষেধ।⎯কোন নিকাহ রেজিস্ট্রার তাহাকে যে এলাকার জন্য লাইসেন্স প্রদান করা হইয়াছে, সেই এলাকার কোন মসজিদ অথবা বেসরকারী স্কুল, অথবা বেসরকারী মাদ্রাসা ব্যতীত অন্য কোথায়ও সবেতনে চাকরি করিতে পারিবেন না।
২০২১ সালে জনবল কাঠামো এমপিও নীতিমালায় বলা হয়েছে যে কোন শিক্ষক একাধিক কোন পদে থাকলে অথবা সরকারের কোন লাভজনক পদে থাকলে তার এমপিও বাতিল করা হইবে।
সেই আইন মোতাবেক রেজিষ্ট্রার মোহাম্মদ শফিকুল আলম তার লাইসেন্স প্রদানকৃত এলাকা ধরনজি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা, সেই এলাকা হইতে ৭ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে শালপাড়া সিদ্দিকিয়া দাখিল মাদ্রাসা, ইউনিয়ন আয়মা রসুলপুর, উপজেলা পাঁচবিবি, জয়পুরহাট সবেতনে কর্মরত আছেন যার ইন্ডেক্স নাম্বার (EB-H) R091578.এবং তাঁর চাকুরী অধিক্ষেত্রের বাহিরে।
শফিকুল ইসলাম এর আরেক সহযোগী নাম আমিনুল ইসলাম পিতা আব্দুস সোবাহান গ্রাম ধরন্জী, উপজেলা পাঁচবিবি জেলা জয়পুরহাট। মামলা নং ৩৮/ তারিখ: ১০/০৩/ ১৬ ইং সালে বাল্য বিয়ে দেওয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাঁচবিবি, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁর সহযোগীকে এক মাসের জেল প্রদান করেন, দায় বদ্ধতা ছিল রেজিস্ট্রারের আর জেল খাটলেন তাঁর সহযোগী, এই সমস্ত সহযোগীদের (লাইসেন্স প্রদান ক্ষেত্রে) ২০০৯ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী যে যোগ্যতার প্রয়োজন হয় তাঁর সহযোগীদের ঐমাপের যোগ্যতা এবং দায়বদ্ধতা না থাকায় তাঁরা ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত অনেক অন্যায় করে ফেলেন, পরবর্তীতে ওই সমস্ত অন্যায় এর দায়ভার জনসাধারণের উপর বর্তায়।
এই রেজিস্ট্রারের বিষয়ে ধরনজি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম মোস্তফা সাহেবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করে, কোন এক খুঁটির জোরে এই রেজিস্ট্রার কে ইউনিয়ন বাসিকে বঞ্চিত করে তার নিজ পদে বহাল করেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা রেজিস্ট্রার, জয়পুরহাট, জনাব শরীফ তোরাফ হোসেন বলেন অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হইবে।
এই কাজীর বিষয়ে আরও বিস্তারিত পরবর্তী সংখ্যা তে আসবে।