আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ১২:৫১ অপরাহ্ন | দেখা হয়েছে ৪০৭ বার
আলোচনার মাধ্যমেই শান্তি ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করলেন জার্মান চ্যান্সেলর। এর আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট একথা বলেছিলেন।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন থেকে ঘুরে এসেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। ইউক্রেন সংকট নিয়ে বাইডেনের সাথে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন। দেশে ফিরে আলোচনা করেছেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীর সাথে। তারপরেই তিনি জানিয়েছেন, যুদ্ধের যে আবহ তৈরি হয়েছিল, তা খানিকটা কেটেছে বলেই তিনি মনে করছেন। আলোচনার মাধ্যমেই ইউক্রেন সংকটের সমাধানসূত্রে পৌঁছানো যাবে বলে তিনি আশাবাদী।
যদিও একইসাথে শলৎস জানিয়েছেন, এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর সময় এখনো আসেনি। পরিস্থিতি এখনো যথেষ্ট উত্তপ্ত হয়ে আছে। প্রশমনে আরো অনেক সময় লাগবে। তবে শান্তিপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে আশাবাদী তিনি।
ইউক্রেন সংকট শুরু হওয়ার পর জার্মানি সে দেশের সেনার জন্য বেশ কিছু যুদ্ধের হেলমেট পাটিয়েছিল। এরপর ইউক্রেন জার্মানির কাছে একাধিক প্রতিরক্ষার অস্ত্র চায়। কিন্তু জার্মানি জানিয়েছে, সংকটকালে, যুদ্ধপরিস্থিতিতে তারা অস্ত্র পাঠায় না। এটা জার্মানির নীতি।
শলৎসের বক্তব্য, পশ্চিমা দেশগুলি একসাথে এই সংকটের মোকাবিলা করেছে। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যেভাবে সকলে মিলে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরোধিতা করেছে, তা মস্কোকে খানিকটা ব্যাকফুটে নিয়ে গেছে বলে তিনি মনে করেন। নিষেধাজ্ঞার হুমকি এখনো আছে। এরপরেও যদি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করে, তাহলে তাদের কড়া নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হতে হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
শলৎসেরমতে, সকলে একসাথে এই সংকট কাটানোর চেষ্টা করেছে। এবং তাতেই খানিকটা লাভ হয়েছে। বস্তুত এর আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ একই কথা বলেছিলেন। মাক্রোঁ রাশিয়া এবং ইউক্রেন সফর করেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সাথে লম্বা বৈঠক করেন তিনি। সেখান থেকে ফিরে এসে মাক্রোঁ জানান, আলোচনার রাস্তা তৈরি হয়েছে।
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর একজন সেনাকে দেখা যাচ্ছে৷ দনেত্স্ক এলাকার হরলিভকাতে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত তিনি৷ রুশপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিভাজন রেখার কাছে বন্দুকধারী সেনার ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছেন একজন আলোকচিত্রী৷
পূর্ব ইউক্রেনের বিভাজন রেখায় বাড়ছে উত্তেজনা
রুশ-ইউক্রেন উত্তেজনা
ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর একজন সেনাকে দেখা যাচ্ছে৷ দনেত্স্ক এলাকার হরলিভকাতে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত তিনি৷ রুশপন্থী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিভাজন রেখার কাছে বন্দুকধারী সেনার ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছেন একজন আলোকচিত্রী৷
শলৎস জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহে তিনিও রাশিয়া এবং ইউক্রেনে সফর করবেন। বৈঠক করবেন দুই দেশের প্রেসিডেন্টের সাথে। শলৎস বলেছেন, এখনো অনেক আলোচনা বাকি আছে।
রাশিয়া এবং ইউক্রেনের বক্তব্য-
রাশিয়া এবং ইউক্রেন কোনো দেশই এখনো একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারছে না। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্টই জানিয়েছেন, পশ্চিমা দেশগুলির কূটনৈতিক পদক্ষেপ আলোচনার রাস্তা কিছুটা হলেও তৈরি করেছে। কিন্তু এখনো রাশিয়ার এক লাখ সেনা ইউক্রেনের সীমান্তে দাঁড়িয়ে। ফলে উত্তেজনা কমে গেছে, বা আলোচনার রাস্তা তৈরি হয়ে গেছে, এমন ভাবার কারণ নেই। তবে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক আলোচনায় লাভ হয়েছে বলেই মনে করছে ইউক্রেন।
রাশিয়া প্রথম থেকেই বলছে, তারা যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনের সীমান্তে সেনা পাঠায়নি। আত্মরক্ষার জন্য পাঠিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলি তাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করেছে বলে অভিযোগ রাশিয়ার। সাম্প্রতিক আলোচনার পর রাশিয়াও জানিয়েছে, আলোচনার মাধ্যমেই তারা সমস্যার সমাধানসূত্র খুঁজতে চায়। তবে সেখানে রাশিয়ার স্বার্থও দেখতে হবে বলে জানিয়েছে তারা। সমাধানসূত্রে পৌঁছানো খুব সহজ হবে না বলেও জানিয়েছে ক্রেমলিন।
সূত্র : ডয়চে ভেলে